ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। Logo শান্তিগঞ্জের জয়সিদ্ধি-বসিউয়াখাউরী গ্রামে বিএনপির কর্মী সভা Logo জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর উপজেলার ৬ নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কমিটি গঠন Logo পরিবেশ নষ্ট করে কোন বাঁধ নির্মাণ হবেনা – পরিবেশ উপদেষ্টা Logo হাওরের জন্য সরকারের মাস্টার প্লান আছে- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান Logo জগন্নাথপুরে কমিউনিটি ক্লিনিক এর মাসিক সভা অনুষ্ঠিত Logo মাটিয়াইন ও টাঙুয়ার হাওর পরিদর্শন….. আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo নিরাপদ অভিবাসন ও বিদেশ-ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ শীর্ষক ইউনিয়ন কর্মশালা Logo ২০২৫–২৬ সেশনের জন্য ২নং পাটলী ইউনিয়ন জামায়াতের কমিটি ঘোষণা।

দৈনিক লেনদেন লাখ কোটি টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে

মোবাইল ব্যাংকিং ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এই সেবা কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে দেশে বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, নগদ, উপায়সহ ১৩টি প্রতিষ্ঠান এই সেবা দিচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সেবার ওপর মানুষের নির্ভরতা বেড়েছে। বাড়ছে গ্রাহক ও লেনদেন।দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার এক যুগ হতে চলেছে। ব্যাংকে না গিয়েও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক অর্থ লেনদেনের এই সেবা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে এখন প্রতি মাসে লেনদেন হচ্ছে লাখ কোটি টাকা।নব্বইয়ের দশকে দেশে মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুরু হয়। একটা সময়ে এসে এই ফোনই যে আর্থিক লেনদেনের বড় মাধ্যম হয়ে উঠবে, এমন পূর্বাভাসও তখন কেউ দেয়নি। আর এক যুগ আগে যখন এই সেবা শুরু হয়, তখনও এই সেবার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।বাস্তবতা হলো- বিকাশ, রকেট, নগদের মতো এমএফএস সেবা এখন প্রতি মুহূর্তের আর্থিক প্রয়োজনে অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিই এখন নগদ অর্থের চাহিদা মেটাচ্ছে।বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি এখন এমএফএস। শহর থেকে গ্রামে বা গ্রাম থেকে শহরে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পাঠানোর সুবিধার কারণে এই সেবা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সেবার ওপর মানুষের নির্ভরতা বেড়েছে। ফলে বাড়ছে গ্রাহক ও লেনদেন।একক মাসের হিসাবে গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ৯৬ হাজার ১৩২ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা এই সেবা চালুর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে গত বছরের এপ্রিলে ১ লাখ ৭ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।নভেম্বর মাসে এমএফএসের মাধ্যমে টাকা পাঠানো, উত্তোলন, বেতন-ভাতা সবকিছু মিলিয়ে লেনদেন হয় ৯২ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। পরের মাস ডিসেম্বরে লেনদেন বাড়ে চার হাজার সাত কোটি টাকা।বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, উপায়সহ দেশে বর্তমানে ১৩টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক সেবা দিচ্ছে। ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’ একই ধরনের সেবা দিচ্ছে।গত বছরের ছয় মাসের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জুলাই মাসে ৮৯ হাজার ১৬৯ কোটি, আগস্টে ৮৭ হাজার ৪৪৬, সেপ্টেম্বরে ৮৭ হাজার ৬৮৫ ও অক্টোবরে ৯৩ হাজার ১৩ কোটি টাকা এমএফএস-এর মাধ্যমে লেনদেন হয়।

নিবন্ধিত গ্রাহক ১৯ কোটি ছাড়িয়েছে

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে নিবন্ধিত গ্রাহক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ডিসেম্বরে নিবন্ধিত হিসাব ছিল ১৯ কোটি ১০ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৩টি। নভেম্বরে তা ছিল ১৮ কোটি ৮৫ লাখ ৫৯ হাজার ৭৩৬। এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হিসাব বেড়েছে ২৫ লাখ ৩ হাজার ৮৩৭টি।এসব হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১১ কোটি ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৪৭০ ও নারী গ্রাহক ৮ কোটি এক লাখ ২৪ হাজার ৪৯৩ জন। নভেম্বরে পুরুষ গ্রাহক ছিল ১০ কোটি ৯০ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭৪ ও নারী গ্রাহক ৭ কোটি ৯০ লাখ ৮৯ হাজার ৩৫০ জন।এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৬৩৭টি, যা নভেম্বরে ছিল ১৫ লাখ ৩১ হাজার ৪০৫টি।

অন্যান্য সেবা

মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন আর শুধু টাকা পাঠানোতেই সীমাবদ্ধ নেই। এর মাধ্যমে এখন দৈনন্দিন কেনাকাটা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ বিভিন্ন পরিষেবা বিল পরিশোধ ও মোবাইল রিচার্জসহ নানা ধরনের সেবা মিলছে।রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগ ও জেলা শহরগুলোতে গাড়িচালক ও গৃহপরিচারিকাদের বেতনও এখন দেয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা মাধ্যম ব্যবহার করে। শ্রমজীবীরাও এখন এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছেন।ডিসেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পাঠানো হয়েছে ৩১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। আর উত্তোলন করা হয়েছে ২৭ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। এমএফএস সেবায় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ২৭ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা লেনদেন হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় দুই হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। বিভিন্ন পরিষেবার এক হাজার ৯৪৯ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটায় লেনদেন হয় তিন হাজার ৬১৩ কোটি টাকা।গ্রাহকদের উৎসাহিত করতে সম্প্রতি মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের সীমা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন এই মাধ্যম ব্যবহার করে গ্রাহকরা দিনে এজেন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক হিসাব বা কার্ড থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা করতে পারেন।বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।মোবাইল ব্যাংকিং সেবা যেমন শিল্পপতিদের জন্য সুবিধা করে দিয়েছে, আবার গৃহকর্মী ও কম আয়ের মানুষের কাছে বড় আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। কারণ, অনেক শিল্পপতিকে এখন আগের মতো মাস শেষে ব্যাংক থেকে বস্তায় টাকা ভরে কারখানায় নিতে হয় না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেতন–ভাতা চলে যায় শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে।এমএফএস লেনদেন বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিকাশের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, ‘বিকাশে আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সেবা যুক্ত করছি। এর ফলে আমাদের গ্রাহক বাড়ছে। গ্রাহকদের আরও কীভাবে সহজে সেবা দেয়া যায়, বিকাশ তা নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছে।’তিনি বলেন, ‘এমএফএস চালুর ফলে শুধু কম আয়ের মানুষের সুবিধা হয়েছে বিষয়টি তেমন নয়। বড় করপোরেট ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পমালিকরাও এর সুবিধা পাচ্ছেন। এখন দেশের সব বড় ভোগ্যপণ্য প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বিক্রির টাকা এই সেবার মাধ্যমে সংগ্রহ করছে, যাকে কালেকশন সেবা বলছে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো। আবার অনেক বড় শিল্প গ্রুপ তাদের শ্রমিকের বেতনও দিচ্ছে এমএফএসের মাধ্যমে। সরকারি ভাতা, বৃত্তি, কেনাকাটা, পরিষেবা বিল পরিশোধ- সবই করা যাচ্ছে। আবার ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ ও আদায় এবং বিদেশি সংস্থার তহবিল বিতরণও হচ্ছে এসব সেবার মাধ্যমে।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ।

দৈনিক লেনদেন লাখ কোটি টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে

আপডেট সময় ০৬:৫০:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
মোবাইল ব্যাংকিং ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এই সেবা কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে দেশে বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, নগদ, উপায়সহ ১৩টি প্রতিষ্ঠান এই সেবা দিচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সেবার ওপর মানুষের নির্ভরতা বেড়েছে। বাড়ছে গ্রাহক ও লেনদেন।দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার এক যুগ হতে চলেছে। ব্যাংকে না গিয়েও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক অর্থ লেনদেনের এই সেবা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে এখন প্রতি মাসে লেনদেন হচ্ছে লাখ কোটি টাকা।নব্বইয়ের দশকে দেশে মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুরু হয়। একটা সময়ে এসে এই ফোনই যে আর্থিক লেনদেনের বড় মাধ্যম হয়ে উঠবে, এমন পূর্বাভাসও তখন কেউ দেয়নি। আর এক যুগ আগে যখন এই সেবা শুরু হয়, তখনও এই সেবার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।বাস্তবতা হলো- বিকাশ, রকেট, নগদের মতো এমএফএস সেবা এখন প্রতি মুহূর্তের আর্থিক প্রয়োজনে অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিই এখন নগদ অর্থের চাহিদা মেটাচ্ছে।বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি এখন এমএফএস। শহর থেকে গ্রামে বা গ্রাম থেকে শহরে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পাঠানোর সুবিধার কারণে এই সেবা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সেবার ওপর মানুষের নির্ভরতা বেড়েছে। ফলে বাড়ছে গ্রাহক ও লেনদেন।একক মাসের হিসাবে গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ৯৬ হাজার ১৩২ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা এই সেবা চালুর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে গত বছরের এপ্রিলে ১ লাখ ৭ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।নভেম্বর মাসে এমএফএসের মাধ্যমে টাকা পাঠানো, উত্তোলন, বেতন-ভাতা সবকিছু মিলিয়ে লেনদেন হয় ৯২ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। পরের মাস ডিসেম্বরে লেনদেন বাড়ে চার হাজার সাত কোটি টাকা।বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, উপায়সহ দেশে বর্তমানে ১৩টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক সেবা দিচ্ছে। ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’ একই ধরনের সেবা দিচ্ছে।গত বছরের ছয় মাসের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জুলাই মাসে ৮৯ হাজার ১৬৯ কোটি, আগস্টে ৮৭ হাজার ৪৪৬, সেপ্টেম্বরে ৮৭ হাজার ৬৮৫ ও অক্টোবরে ৯৩ হাজার ১৩ কোটি টাকা এমএফএস-এর মাধ্যমে লেনদেন হয়।

নিবন্ধিত গ্রাহক ১৯ কোটি ছাড়িয়েছে

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে নিবন্ধিত গ্রাহক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ডিসেম্বরে নিবন্ধিত হিসাব ছিল ১৯ কোটি ১০ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৩টি। নভেম্বরে তা ছিল ১৮ কোটি ৮৫ লাখ ৫৯ হাজার ৭৩৬। এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হিসাব বেড়েছে ২৫ লাখ ৩ হাজার ৮৩৭টি।এসব হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১১ কোটি ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৪৭০ ও নারী গ্রাহক ৮ কোটি এক লাখ ২৪ হাজার ৪৯৩ জন। নভেম্বরে পুরুষ গ্রাহক ছিল ১০ কোটি ৯০ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭৪ ও নারী গ্রাহক ৭ কোটি ৯০ লাখ ৮৯ হাজার ৩৫০ জন।এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৬৩৭টি, যা নভেম্বরে ছিল ১৫ লাখ ৩১ হাজার ৪০৫টি।

অন্যান্য সেবা

মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন আর শুধু টাকা পাঠানোতেই সীমাবদ্ধ নেই। এর মাধ্যমে এখন দৈনন্দিন কেনাকাটা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ বিভিন্ন পরিষেবা বিল পরিশোধ ও মোবাইল রিচার্জসহ নানা ধরনের সেবা মিলছে।রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগ ও জেলা শহরগুলোতে গাড়িচালক ও গৃহপরিচারিকাদের বেতনও এখন দেয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা মাধ্যম ব্যবহার করে। শ্রমজীবীরাও এখন এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছেন।ডিসেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পাঠানো হয়েছে ৩১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। আর উত্তোলন করা হয়েছে ২৭ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। এমএফএস সেবায় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ২৭ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা লেনদেন হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় দুই হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। বিভিন্ন পরিষেবার এক হাজার ৯৪৯ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটায় লেনদেন হয় তিন হাজার ৬১৩ কোটি টাকা।গ্রাহকদের উৎসাহিত করতে সম্প্রতি মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের সীমা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন এই মাধ্যম ব্যবহার করে গ্রাহকরা দিনে এজেন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক হিসাব বা কার্ড থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা করতে পারেন।বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।মোবাইল ব্যাংকিং সেবা যেমন শিল্পপতিদের জন্য সুবিধা করে দিয়েছে, আবার গৃহকর্মী ও কম আয়ের মানুষের কাছে বড় আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। কারণ, অনেক শিল্পপতিকে এখন আগের মতো মাস শেষে ব্যাংক থেকে বস্তায় টাকা ভরে কারখানায় নিতে হয় না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেতন–ভাতা চলে যায় শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে।এমএফএস লেনদেন বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিকাশের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, ‘বিকাশে আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সেবা যুক্ত করছি। এর ফলে আমাদের গ্রাহক বাড়ছে। গ্রাহকদের আরও কীভাবে সহজে সেবা দেয়া যায়, বিকাশ তা নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছে।’তিনি বলেন, ‘এমএফএস চালুর ফলে শুধু কম আয়ের মানুষের সুবিধা হয়েছে বিষয়টি তেমন নয়। বড় করপোরেট ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পমালিকরাও এর সুবিধা পাচ্ছেন। এখন দেশের সব বড় ভোগ্যপণ্য প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বিক্রির টাকা এই সেবার মাধ্যমে সংগ্রহ করছে, যাকে কালেকশন সেবা বলছে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো। আবার অনেক বড় শিল্প গ্রুপ তাদের শ্রমিকের বেতনও দিচ্ছে এমএফএসের মাধ্যমে। সরকারি ভাতা, বৃত্তি, কেনাকাটা, পরিষেবা বিল পরিশোধ- সবই করা যাচ্ছে। আবার ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ ও আদায় এবং বিদেশি সংস্থার তহবিল বিতরণও হচ্ছে এসব সেবার মাধ্যমে।’