৮০% সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে চালকদের দায়ী করা হয়। কিন্তু এর পেছনে কী কারণ আছে তা দেখা হয় না। চালকদের কোনো নিয়োগপত্র নেই, নির্ধারিত বেতন নেই। তারা ট্রিপ ভিত্তিক মজুরি পান। তাই তারা বিশ্রাম না নিয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা গাড়ি চালাতে বাধ্য হন। বেশি গাতিতে গাড়ি চালান,দেশে সড়কে নৈরাজ্যের পেছনে প্রধানত পরিবহন মালিকরা দায়ী হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ফিটনেসহীন যানবাহন তারাই সড়কে নামান। কম মজুরি দিতে সেগুলো চালান অদক্ষ চালক দিয়ে। তবে তাদের দায় নিতে হয় না। দায় গিয়ে বর্তায় চালকের ওপর।পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলছেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ৮০% ক্ষেত্রে চালকদের দায়ী করা হয়। কিন্তু এর পেছনে কী কারণ আছে তা দেখা হয় না। চালকদের কোনো নিয়োগপত্র নেই, নির্ধারিত বেতন নেই। তাদের ট্রিপ ভিত্তিক মজুরি দেওয়া হয়। তাই তারা বিশ্রাম না নিয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা গাড়ি চালাতে বাধ্য হন। বেশি গাতিতে গাড়ি চালান।গতকাল রবিবার (১৯ মার্চ) খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস মাদারীপুরের কুতুবপুরে পদ্মাসেতুর এক্সপ্রেসওয়ের রেলিং ভেঙে থেকে ছিটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৪ জন। পরে হাসপাতালে তিনজন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও দুই জনের মৃত্যু হয়। এই দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনটি কারণ এ পর্যন্ত জানা গেছে। চালক চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৩০ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে তিনি ক্লান্ত ছিলেন, গাড়িটি চলছিলো অস্বাভাবিক গতিতে। ওই সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার হলেও বাসটি চালানো হচ্ছিল ১২০ কিলোমিটার গতিতে। বাসটির ফিটনেস এবং রুট পারমিট কোনেটিই ছিল না। জানা গেছে, যে বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে এটিই গত বছরের ১৭ নভেম্বরে গোপালগঞ্জে দুর্ঘটনায় পড়েছিল। তখন মারা যান তিনজন। গত ১৮ জানুয়ারি বাসটির ফিটনেস ও রুট পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
কোনো আইনই মানা হচ্ছে না
দায় কার কতটুকু
৮০% সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে চালকদের দায়ী করা হয়। কিন্তু এর পেছনে কী কারণ আছে তা দেখা হয় না। চালকদের কোনো নিয়োগপত্র নেই, নির্ধারিত বেতন নেই। তারা ট্রিপ ভিত্তিক মজুরি পান। তাই তারা বিশ্রাম না নিয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা গাড়ি চালাতে বাধ্য হন। বেশি গাতিতে গাড়ি চালান,দেশে সড়কে নৈরাজ্যের পেছনে প্রধানত পরিবহন মালিকরা দায়ী হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ফিটনেসহীন যানবাহন তারাই সড়কে নামান। কম মজুরি দিতে সেগুলো চালান অদক্ষ চালক দিয়ে। তবে তাদের দায় নিতে হয় না। দায় গিয়ে বর্তায় চালকের ওপর।পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলছেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ৮০% ক্ষেত্রে চালকদের দায়ী করা হয়। কিন্তু এর পেছনে কী কারণ আছে তা দেখা হয় না। চালকদের কোনো নিয়োগপত্র নেই, নির্ধারিত বেতন নেই। তাদের ট্রিপ ভিত্তিক মজুরি দেওয়া হয়। তাই তারা বিশ্রাম না নিয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা গাড়ি চালাতে বাধ্য হন। বেশি গাতিতে গাড়ি চালান।গতকাল রবিবার (১৯ মার্চ) খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস মাদারীপুরের কুতুবপুরে পদ্মাসেতুর এক্সপ্রেসওয়ের রেলিং ভেঙে থেকে ছিটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৪ জন। পরে হাসপাতালে তিনজন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও দুই জনের মৃত্যু হয়।এই দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনটি কারণ এ পর্যন্ত জানা গেছে। চালক চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৩০ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে তিনি ক্লান্ত ছিলেন, গাড়িটি চলছিলো অস্বাভাবিক গতিতে। ওই সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার হলেও বাসটি চালানো হচ্ছিল ১২০ কিলোমিটার গতিতে। বাসটির ফিটনেস এবং রুট পারমিট কোনেটিই ছিল না।জানা গেছে, যে বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে এটিই গত বছরের ১৭ নভেম্বরে গোপালগঞ্জে দুর্ঘটনায় পড়েছিল। তখন মারা যান তিনজন। গত ১৮ জানুয়ারি বাসটির ফিটনেস ও রুট পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।ইমাদ পরিবহনের এই বাসটির দুর্ঘটনা থেকেই সড়ক পরিবহনের নৈরাজ্য স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী বাসচালকদের কর্মঘন্টা বেধে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তবে তা মানা হচ্ছে না। ফিটনেস ও রুট পারমিট নেই এমন যানবাহন সড়কে চলছে দেদারসে। আর মহাসড়কে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। চালকসহ পরিবহন শ্রমিকদের অধিকাংশেরই মাসিক বেতন নেই। তারা ট্রিপ ভিত্তিক মজুরি পান। ফলে তারা বিশ্রাম না দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাস চালান। অতিরিক্ত ট্রিপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। সড়কে দুর্ঘটনার জন্য প্রধানত এই কারণগুলাই দায়ী।বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন বলেন, “একজন চালকের ২৪ ঘন্টায় এক নাগাড়ে পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাড়ি না চালানোর আইন আছে। দূর পাল্লার একটি বাসে তাই দুইজন ড্রাইভার রাখার নিয়ম। কিন্তু কোনো বাসেই দুইজন ড্রাইভার নাই। পরিবহন মালিকেরা পুলিশ ও বিআরটিএর সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে এই নৈরাজ্যকর অবস্থা বহাল রেখেছে। কিছু পরিবহন কোম্পানি আছে তারা কেন্দ্রীয়ভাবে সব কিছু ম্যানেজ করে। তাদের গাড়ির ফিটনেস, রুট পারমিট আছে কি-না তা কখনোই দেখা হয় না।”বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, “সাধারণভাবে চালকদের সড়ক দুর্ঘটনার জন্য প্রধানভাবে দায়ী করা হলেও আমরা গবেষণায় দেখেছি সড়ক দুর্ঘটনার জন্য চালকদের দায় চার নম্বরে। এক নম্বরে অব্যবস্থাপনা তারপরে আছে গাড়ির ফিটনেস। তারপরে সড়ক ব্যবস্থা। ঢাকা শহরে ৮০% বাস-মিনিবাসের কোনো ফিটনেস নাই। আর দূর পাল্লার বড় বড় কয়েকটি পরিবহন কোম্পানি ছাড়া অন্যদের গাড়ির কোনো ফিটনেস ও রুট পারমিট নাই।”তিনি আরও বলেন, “আসলে এইসবের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে লোক দেখানো অভিযান করা হলেও এগুলো চলে সমঝোতার ভিত্তিতে। মালিকপক্ষ এতই শক্তিশালী যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া যায় না।”শ্রমিকের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) ২০১৭ সালের এক গবেষণা বলছে, পরিবহন খাতের ৮৬% শ্রমিক দৈনিক ১৩ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। এই খাতের ৯০% শ্রমিকের সাপ্তাহিক ছুটি নেই।বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, বাংলাদেশে বাস-মিনিবাস রয়েছে ৮০ হাজার। সব ধরনের যন্ত্রিক যানবাহন মিলিয়ে এর সংখ্যা ৫৭ লাখ। সিটি সার্ভিসের বাস-মিনিবাসের ৬০% এরই কোনো ফিটনেস নাই। আর দূর পাল্লার বাসের ৩০% এর ফিটনেস নাই। বাংলাদেশে বাস মিনিবাসের বৈধ লাইসেন্সধারী চালক আছেন ৪০ হাজার। তাই বাস মিনিবাসে লাইসেন্সবিহীন চালকদের দৌরাত্ম চলে।”তিনি মনে করেন, “এখানে মালিক পক্ষের দায় আছে। দায় আছে বিআরটিএর। তবে সমস্যা হলো পুরো গণপরিবহন খাতের ১% এরও কম সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বেসরকারি মালিকেরা এই খাত নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের মর্জির ওপর নির্ভর করে চলে এই খাত।”বিআরটিএ দেখে না কেন?
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্ল্যাহ দাবি করেন, “আমরা মালিক সমিতি সব সময়ই রুট পারমিট ও ফিটনেসহীন গাড়ির বিপক্ষে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশকে বলে আসছি। তারা ব্যবস্থা নেওয় না কেন? আমরা কীভাবে জানব কোনো গাড়ির ফিটনেস আছে বা কোন গাড়ির নেই? কোন গাড়ির রুট পারমিট আছে কোন গাড়ির নেই? ইমাদ পরিবহনের দুর্ঘটনায় পতিত গাড়িটি আগেও দুর্ঘটনায় পড়েছে। ওই গাড়ি সড়কে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তাহলে সেটা সড়কে নামলো কীভাবে?”পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, “চালকেরা মাসিক বেতন ও নিয়োগপত্র নিতে চান না। তারা চার দিন কাজ করেন, তিন দিন বাড়িতে থাকেন। অনেকের তো ঠিকানাই ঠিক নাই। কাকে নিয়োগপত্র দেব? শ্রমিক সমিতির তো ৪০টির মত পরিবহন কোম্পানি আছে। তারা নিয়োগপত্র দেয় না কেন?”এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য বিআরটিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সফল হওয়া যায়নি।বাংলাদেশে প্রতি বছরই সড়ক দুঘর্টনা ও মৃত্যু বাড়ছে। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হারের দিক থেকে গত এক বছরে বাংলাদেশের ১৮ ধাপ অবনতি হয়েছে।রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, গত বছর সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ৭১৩ জন।তিনি আরও বলেন, “আসলে এইসবের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে লোক দেখানো অভিযান করা হলেও এগুলো চলে সমঝোতার ভিত্তিতে। মালিকপক্ষ এতই শক্তিশালী যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া যায় না।”শ্রমিকের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) ২০১৭ সালের এক গবেষণা বলছে, পরিবহন খাতের ৮৬% শ্রমিক দৈনিক ১৩ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। এই খাতের ৯০% শ্রমিকের সাপ্তাহিক ছুটি নেই।বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, বাংলাদেশে বাস-মিনিবাস রয়েছে ৮০ হাজার। সব ধরনের যন্ত্রিক যানবাহন মিলিয়ে এর সংখ্যা ৫৭ লাখ। সিটি সার্ভিসের বাস-মিনিবাসের ৬০% এরই কোনো ফিটনেস নাই। আর দূর পাল্লার বাসের ৩০% এর ফিটনেস নাই। বাংলাদেশে বাস মিনিবাসের বৈধ লাইসেন্সধারী চালক আছেন ৪০ হাজার। তাই বাস মিনিবাসে লাইসেন্সবিহীন চালকদের দৌরাত্ম চলে।”
তিনি মনে করেন, “এখানে মালিক পক্ষের দায় আছে। দায় আছে বিআরটিএর। তবে সমস্যা হলো পুরো গণপরিবহন খাতের ১% এরও কম সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বেসরকারি মালিকেরা এই খাত নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের মর্জির ওপর নির্ভর করে চলে এই খাত।”
বিআরটিএ দেখে না কেন?
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্ল্যাহ দাবি করেন, “আমরা মালিক সমিতি সব সময়ই রুট পারমিট ও ফিটনেসহীন গাড়ির বিপক্ষে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশকে বলে আসছি। তারা ব্যবস্থা নেওয় না কেন? আমরা কীভাবে জানব কোনো গাড়ির ফিটনেস আছে বা কোন গাড়ির নেই? কোন গাড়ির রুট পারমিট আছে কোন গাড়ির নেই? ইমাদ পরিবহনের দুর্ঘটনায় পতিত গাড়িটি আগেও দুর্ঘটনায় পড়েছে। ওই গাড়ি সড়কে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তাহলে সেটা সড়কে নামলো কীভাবে?”
পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, “চালকেরা মাসিক বেতন ও নিয়োগপত্র নিতে চান না। তারা চার দিন কাজ করেন, তিন দিন বাড়িতে থাকেন। অনেকের তো ঠিকানাই ঠিক নাই। কাকে নিয়োগপত্র দেব? শ্রমিক সমিতির তো ৪০টির মত পরিবহন কোম্পানি আছে। তারা নিয়োগপত্র দেয় না কেন?”
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য বিআরটিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সফল হওয়া যায়নি।
বাংলাদেশে প্রতি বছরই সড়ক দুঘর্টনা ও মৃত্যু বাড়ছে। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হারের দিক থেকে গত এক বছরে বাংলাদেশের ১৮ ধাপ অবনতি হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, গত বছর সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ৭১৩ জন।