ভূমধ্যসাগরীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে ইউরোপে পৌঁছাতে চাওয়া অভিবাসীদের আটকানোর উপায় বের করতে রোমে বৈঠক করছে।
রোববার ইটালি অঅভিবাসন প্রবাহ আটকানোর উপায় খুঁজতে এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে৷
ইটালির সরকার একটি বিবৃতিতে বলেছে, সম্মেলনের লক্ষ্য হলো অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা, মানবপাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতার একটি নতুন মডেলের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রচার করা।”
সম্মেলনটি প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির “উদ্যোগে” সংগঠিত হয়েছে বলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। ২০২২ সালে নির্বাচনী প্রচারের সময় তিনি দেশে অভিবাসীদের “আগমন ও অবস্থান বন্ধ করার” প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
রোমে অনুষ্ঠিত হওয়া উন্নয়ন ও অভিবাসন বিষয়ক এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানকারীদের সম্পূর্ণ তালিকা জানা যায়নি। তবে টিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সঈদের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডানপন্থি প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি।
ইটালির অভিবাসী মোকাবেলা
মেলোনির প্রশাসন আইন পাস করে ভূমধ্যসাগরে অভিবাসী উদ্ধারকারী মানবিক জাহাজগুলিকে আটকানোর চেষ্টা করেছে। দেশটির নতুন এই আইনের কারণে ভূমধ্যসাগরে একটি উদ্ধার অভিযান শেষ করার পরই কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্ধারিত বন্দরে চলে যেতে হয়৷ এর ফলে সমুদ্রে আরো অনেক মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ছে৷
ইটালির কর্তৃপক্ষ উদ্বারকারী জাহাজগুলিকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরের বন্দরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
মেলোনি বলেছেন, দাতব্য সংস্থার জাহাজগুলো অভিবাসীদের ক্ষেত্রে “ফেরি বোট” হিসাবে যাতে কাজ না করে, তা দেখতেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
অর্থায়ন টিউনিশিয়াকে
ইউরোপীয় কমিশনে এবং ইটালি টিউনিশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে। যদি দেশটি অভিবাসীপ্রবাহ আটকাতে ব্যবস্থা নেয়, তাহলে দু তরফেই তাদের অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। কারণ টিউনিশিয়া ভূমধ্যসাগরীয় পথে ইউরোপে আসা অভিবাসীদের একটি প্রবেশদ্বার।
গত সপ্তাহে ইইউ , টিউনিশিয়ার সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এরমধ্যে রয়েছে দেশটির জন্য প্রস্তাবিত ৯০০ মিলিয়ন ইউরো অর্থনৈতিক সহায়তা প্যাকেজে। এ ছাড়া আরো ১৫০ মিলিয়ন ইউরো তাৎক্ষণিক বাজেট সহায়তার কথা বলা হয়েছে। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং চোরাচালান বিরোধী কার্যক্রমের জন্য আরো ১০৫ মিলিয়ন ইউরো অর্থায়নের কথা বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএমের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে এ পর্যন্ত ইউরোপে এক লাখ ৯ হাজার ৬৮৮ জন প্রবেশ করেছে। দুই হাজার ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বা নিখোঁজ রয়েছেন।
২০২২ সালে এক লাখ ৮৯ হাজার ৬২০ জন অভিবাসী ইউরোপে এসেছেন। দুই হাজার ৯৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।