অধিনায়ক ঘোষণা করার পর এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করতে আর খুব বেশি বিলম্ব করলো না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এমনিতেই এশিয়া কাপের দল ঘোষণার সর্বশেষ তারিখ ছিল আজ। সুতরাং, আজকের মধ্যে যে করেই হোক দল ঘোষণা করতে হতো বিসিবিকে। তবে সেই ঘোষণাটা এসে গেলো আজ সকাল সকাল।
আগে থেকেই অনুমিত ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং সৌম্য সরকার সুযোগ পাবেন না এশিয়া কাপের দলে।এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। সে অনুমানই সত্যি প্রমাণ হলো। অভিজ্ঞ ও সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং সৌম্য সরকারকে বাদ দিয়েই ঘোষণা করা হলো ১৭ সদস্যের এবারের এশিয়া কাপের দল।
সৌম্য সরকারকে দলে রাখতে আগ্রহী ছিলেন বেশি কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। অফ ফর্ম সত্ত্বেও নিজেকে প্রমাণ করার জন্য সৌম্যকে বেশ সুযোগ দেয়া হয়েছিলো। খেলানো হয়েছিলো ইমার্জিং এশিয়া কাপেও। এরপর কন্ডিশনিং ক্যাম্পের জন্য প্রাথমিক দলেও সুযোগ দেয়া হয়েছিলো তাকে। শেষ পর্যন্ত নিজেকে আর প্রমাণ করতে পারেননি তিনি।
এবারের এশিয়া কাপের দলে চমক রয়েছে একটি। ২২ বছর বয়সী ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমকে ডাকা হয়েছে এই দলে। গত মাসে ইমার্জিং এশিয়া কাপে ৪ ম্যাচে ৩ ফিফটির পুরস্কার পেলেন তানজীদ। বাংলাদেশের মধ্যে তানজিদের রানই ছিল সর্বোচ্চ।
দলে ফিরেছেন স্পিনার নাসুম আহমেদ ও স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান। গত মার্চে আয়ারল্যান্ড সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেন নাসুম। মেহেদী হাসান বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন গত বছর এশিয়া কাপে।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের এই বাদ পড়ার অর্থ, তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারই প্রায় শেষ। তার বাদ পড়ার পর পঞ্চ পাণ্ডবের মধ্যে আর বাকি থাকলেন ২জন। সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। মাশরাফির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ২০২০ সালেই শেষ হয়ে গেছে।
তামিম ইকবালও প্রায় যায় যায় অবস্থায়। ইনজুরির কারণে এশিয়া কাপ খেলবেন না। বিশ্বকাপ খেলতে পারেন কি না সন্দেহ। এরই মধ্যে অবসরের ঘোষণা দিলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবসর ভাঙার কথা জানান তিনি। কিন্তু কবে মাঠে ফিরতে পারবেন তার নিশ্চয়তা নেই। মাহমুদউল্লাহও এখন বাতিলের খাতায়।
ওপেনিংয়ে লিটন দাসের সঙ্গে তানজিদ হাসান তামিম নাকি মোহাম্মদ নাঈমকে খেলানো হবে, সেটাই দেখার। যদিও ইমার্জিং এশিয়া কাপে ভালো করার কারণে তানজিদ তামিমের সম্ভাবনাই বেশি। তেমনটা হলে, এক তামিমের পরিবর্তে আরেক তামিমের পথচলা শুরু হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে।
স্কোয়াডে রাখা হয়েছে পাঁচজন পেসার। মোস্তাফিজ, তাসকিন, হাসান মাহমুদ, শরিফুল এবং ইবাদত হোসেন। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে অলরাউন্ডারের ভূমিকায় থাকবেন মেহেদী হাসান মিরাজও। বিশেষ স্পিনার নাসুম আহমেদ এবং মেদেহী হাসান। বাকিরা ব্যাটার। এর মধ্যে শান্ত-আফিফরাও হাত ঘোরাতে পারেন।
৩০ আগস্ট থেকে শুরু হবে এশিয়া কাপ। পাকিস্তান মূল আয়োজক হলেও সহআয়োজক হিসেবে থাকছে শ্রীলঙ্কা। মোট ম্যাচ ১৩টি, শ্রীলঙ্কায় হবে ৯ ম্যাচ। বাকি ৪ ম্যাচ পাকিস্তানে। গ্রুপপর্বে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ খেলবে দুই দেশে—শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডিতে খেলার পর লাহোরে হবে আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ। দুটি ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ সময় পাবে মাত্র দুদিন।
দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রথম পর্ব খেলবে ছয় দল- পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের দুই প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। দুই গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুটি দল উঠবে সুপার ফোরে। সেখান থেকে শীর্ষ দুই দল খেলবে ফাইনালে। ১৭ সেপ্টেম্বর কলম্বোয় ফাইনাল। এশিয়া কাপ খেলতে ২৬ আগস্ট শ্রীলঙ্কা উদ্দেশে উড়াল দেবে বাংলাদেশ দল।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের স্কোয়াড
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ, শামীম হোসেন, আফিফ হোসেন, শরীফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম ও নাসুম আহমেদ।