সোমবার (১৪ নভেম্বর) দিরাই বিএডিসির মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ঢাকা থেকে আগত কেন্দ্রীয় নেতাবৃন্দকে মঞ্চে উপস্থিত রেখেই সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে আওয়ামী লীগের বিবাদমান দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ইটপাটকেল, চেয়ার ছুড়াছুড়ির সৃষ্টি হয়। এতে করে জনসভাস্থল ও এর আশপাশের এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। এসময় দিপাক্ষিক হামলায় উভয় পক্ষের মোট ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হন।
আহতরা হলেন দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়া, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কামরুল হাসান চৌধুরী, জেলা যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান সেন্টু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের সভাপতি কুবাদ আলী, পৌর কাউন্সিলর এবিএম মাসুম প্রদীপ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ দিরাই উপজেলার সভাপতি রিজওয়ান ইসলাম, দিরাই যুবলীগ নেতা আলী আসগর, টুনু মিয়া, জুসেফ মিয়া। এছাড়া পুলিশ, জনপ্রতিনিধি সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অত্যন্ত অর্ধশত আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রমতে জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে সম্মেলন স্থলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় ও তাঁর সমর্থক অন্যান্য নেতাকর্মীগণ মিলিত হতে থাকেন। তারপর দুপুর ১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়া, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়ের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল নিয়ে সম্মেলন স্থলে প্রবেশ করে মঞ্চে উঠার চেষ্টা করলে অপর পক্ষ তাতে বাঁধা প্রদান করায় তৎক্ষনাত দু’পক্ষের মাঝে তুমুল ধাক্কাধাক্কি, চেয়ার ও ইটপাকটেল ছুড়াছুড়ির সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হওয়ার ধরুন প্রধান অতিথি নুরুল ইসলাম নাহিদ সহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ মঞ্চ থেকে নেমে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সড়ে যান। এসময় সাধারণ নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায়। সংঘর্ষে চারদিকে ভয়ানক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরিবর্তীতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পরিবেশ শান্ত করার ফলে সম্মেলনের কাজ পুনরায় শুরু হয়।
উক্ত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট সোহেল আহমেদ এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজুজ সামাদ, সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক , শামীমা খানম। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান সম্মেলন উদ্বোধন করেন। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন।
প্রধান অতিথি নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, যারা এই সম্মেলন কে বানচাল করার চেষ্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা আজকে এই নেক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কারোর রেহাই নেই।
তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি সহ সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সুতরাং আওয়ামী হচ্ছে জনগণের দল। জনগণকে সাথে প্রতিটি ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করা হবে। কেউ আওয়ামীলীগকে দাবায়ে রাখতে পারবে না।
জনস্বার্থে নিউজ24.কম