‘নূর’স কিচেন’ নামে একটি ফেইসবুক পাতায় কদিন ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি বিনিয়োগের প্রস্তাব। বলা হচ্ছে, তারা ঢাকার একটি বড় সরকারি হাসপাতালে খাবার সরবরাহের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু বিনিয়োগ প্রয়োজন। আর তার বিপরীতে প্রতি মাসে দেওয়া হবে মুনাফা।সেই পোস্ট দেখে যে কেউ আকৃষ্ট হতে পারেন। সেখানে উত্তরায় করপোরেট অফিসের ঠিকানা, ফোন নম্বর সবই দেওয়া আছে।কিন্তু বাস্তবতা হল, সেই ঠিকানায় আসলে ‘নূর’স কিচেনের কথিত সেই করপোরেট অফিস নেই।বিনিয়োগের বিপরীতে নূর’স কিচেন কত টাকা দেবে, সেটি পোস্টে নেই। তবে সেখানে থাকা নম্বরে যোগাযোগ করলে জানানো হয়, মাসে প্রতি একশ টাকায় ৬ থেকে ৭ টাকা হারে মুনাফা মিলবে।ফেইসবুকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে ‘গ্রিন ওভেন’ নামে আরও একটি প্রতিষ্ঠানের এমন ‘লোভনীয় অফার’, যাতে প্রতি মাসে সঞ্চয়পত্রের চেয়ে দ্বিগুণ হারে মুনাফা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।ফেইসবুক পেইজে এরকম পোস্ট দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা তার একজন সহকর্মীকে ‘নূর’স কিচেনের কথিত সেই করপোরেট অফিসে পাঠান। কিন্তু সেই পুলিশ কর্মকর্তা গিয়ে কিছু খুঁজে পাননি।সেই পোস্টে দেওয়া ফোন নম্বরে কল করার পর যেসব তথ্য তাকে দেওয়া হয়েছে, সেগুলো যাচাই করে কোনো সত্যতা মেলেনি।
‘নূরস কিচেনের’ প্রলোভন ও ভুয়া ঠিকানা
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘নূর’স কিচেন’ এর ফেইসবুক পেইজে আসে বিনিয়োগের প্রস্তাবটি। সেখানে লেখা হয়, “ঢাকার প্রথম সারির একটি সরকারি হাসপাতালে খাবার সরবরাহের প্রজেক্টের টেন্ডারে ‘নূর’স কিচেন’ জয়ী হয়ে খাবার সরবরাহের জন্য বিবেচিত হয়েছে। এর জন্য আমাদের প্রয়োজন প্রচুর বিনিয়োগ।বিস্তারিত তথ্যের জন্য মোবাইল ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে দেওয়া হয় কথিত ‘করপোরেট অফিসের’ ঠিকানা। সেটা ‘উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১, জসিমউদ্দিন অ্যাভিনিউয়ের লেভেল ফোরে।’এ ‘বিনিয়োগ প্রস্তাব’ পোস্ট করার পরদিন সেই ‘ঠিকানায়’ গিয়ে কথিত ‘করপোরেট’ অফিসের সন্ধান মেলেনি। সেখানে অন্য এক প্রতিষ্ঠান আছে। সেখানকার অভ্যর্থনায় থাকা এক কর্মী উপরের ফ্লোরে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দেন।পরে লেভেল ফাইভে গিয়ে ‘ওয়ার্ক স্টেশন’ নামে একটি অফিস খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানকার এক কর্মীর কাছে ‘নূর’স কিচেন’ এর কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ নামে কোনো অফিস এখানে আছে কি না, তা তিনি জানেন না।এরপর সেই পোস্টে থাকা নম্বরে কল করা হলে নারীকণ্ঠে একজন কিছুটা ‘কর্কশ কণ্ঠে’ জানতে চান, ফোন করার কারণ কী?‘করপোরেট অফিস’ যে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, সে কথা জানানোর পর তিনি বলেন, “আমি তো এখন সেখানে নাই।”অন্য কেউ কথা বলতে পারবে কি না, সেই প্রশ্নে বক্তব্য পাল্টে যায় তার। বলেন, “আসলে সেখানে অফিস ছিল কিছুদিন। এখন উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে।”“১২ নম্বরেই আসব, অফিসের ঠিকানা দেন”- এ কথা বলার পর সেই নারী দেবেন বলে আর দেননি।