ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। Logo শান্তিগঞ্জের জয়সিদ্ধি-বসিউয়াখাউরী গ্রামে বিএনপির কর্মী সভা Logo জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর উপজেলার ৬ নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কমিটি গঠন Logo পরিবেশ নষ্ট করে কোন বাঁধ নির্মাণ হবেনা – পরিবেশ উপদেষ্টা Logo হাওরের জন্য সরকারের মাস্টার প্লান আছে- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান Logo জগন্নাথপুরে কমিউনিটি ক্লিনিক এর মাসিক সভা অনুষ্ঠিত Logo মাটিয়াইন ও টাঙুয়ার হাওর পরিদর্শন….. আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo নিরাপদ অভিবাসন ও বিদেশ-ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ শীর্ষক ইউনিয়ন কর্মশালা Logo ২০২৫–২৬ সেশনের জন্য ২নং পাটলী ইউনিয়ন জামায়াতের কমিটি ঘোষণা।

সরকারের অপকীর্তি বলে শেষ করা যাবে না-সিলেটে মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারের অপকীর্তি বলে শেষ করা যাবে না। তাদের একটা ভালো কাজ দেখাতে পারবেন না। বাংলাদেশের সমাজকে পুরোপুরি বিভক্ত করে এরা দূষিত সমাজে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শক্তি দিয়ে অন্যায়ভাবে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে দেশ পরিচালনা করছে। তারা আমাদের সব অর্জনগুলোকে কেড়ে নিয়েছে, এদের পরাজিত করতে হবে। এদের বিতাড়িত করতে হবে। পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে।
শুক্রবার নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে সকাল ১০টায় শুরু হওয়া সিলেট মহানগর বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন সারা দেশে নির্যাতন নিপীড়ন চলছে। আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মী রাজপথে প্রাণ দিয়েছেন। শত শত নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। হাজারো নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরও আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। যেভাবেই হোক, ভয়াবহতা থামাতে হবে। যারা এই দলের জন্য রক্ত দিয়েছেন, তাদের ঋণ শোধ করার সময়ে এসেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ক্ষতি যেগুলো করেছে, এর মধ্যে ১৯৭২ সালের যে সংবিধান এদেশের মানুষ রচনা করেছিল, যে সংবিধান সবাই মেনে নিয়েছিল, সেই সংবিধানকে বারবার কাটাছেঁড়া করে একটি অকার্যকর সংবিধানে পরিণত করেছে।
তিনি আরও বলেন, যারা যুদ্ধ করেছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তারা এই সংবিধান দেখতে চাননি। ১৯৭২ সংবিধানের মৌলিক যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যবস্থা, ১৯৭৫ সালে তা বন্ধ করে দিয়ে তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ এবং পত্র—পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে একদলীয় স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা চালু করেছিল। আর তারা যখনই ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেয়েছে, তখনই তারা সংবিধানে হাত দিয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করে কণ্ঠরোধ করেছে। তারা অর্থনীতি এমনভাবে ধ্বংস করেছে, টেনে তোলা অত্যন্ত কঠিন। আজ নিজেদের স্বার্থে, দুর্নীতির স্বার্থে, চুরি করার স্বার্থে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা জোরে জোরে বলেন, তারা নাকি অনেক উন্নয়ন করেছেন। সেই উন্নয়ন কেবল গুটিকয়েক মানুষের জন্যে। ঢাকায় তারা পাতাল রেল, মেট্রোরেল করেছে। কত টাকা খরচ করেছে? যা খরচ হওয়ার কথা, তার ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি খরচ হয়েছে। পদ্মা সেতু করে বাহবা নেয়, আমাদের সময়ে সেই পদ্মা সেতুর ১০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ছিল। সেই সেতুর বাজেট ৩০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে রোগীরা ঠিকমত শয্যা পান না, ওষুধ পান না, ডাক্তার পান না। হাসপাতালগুলোতে ঢোকার কোনো পরিবেশ থাকে না। ফলে স্বাস্থ্য সেবার জন্য বেশিরভাগ মানুষকে দেশের বাইরে চলে যেতে হচ্ছে। দেশে কোনো চিকিৎসা পাওয়া যায় না। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়ে গেছে। তারা যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লিজ নিয়েছে। আজ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কত খারাপ হয়েছে! প্রকাশ্যে দিনের বেলায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা ছিনতাই হয়েছে। আবার যখন খুঁজে পায়, তখন দেড় কোটি টাকা কম। অবস্থা এমন খারাপ হয়েছে যে, আজ মা—বোনেরা এ দেশে নিরাপদ বোধ করেন না। কোথাও কোনো আইনের শাসন নেই। তারা বিচারব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ নিজেদের করে নিয়েছে। তারা আজ দেশ পরিচালনা করছে শুধুমাত্র অন্যায়ভাবে শক্তি দিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী সরকার ভারতের বিশাল কোম্পানি আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী আমাদের দেড় লাখ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। অন্যান্য দেশে যে দামে কয়লা পাওয়া যায়, তার দ্বিগুণ দাম দিয়ে আমাদের কয়লা আনতে হচ্ছে। আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তির ফলে বাংলাদেশে বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি দাঁড়াবে প্রায় ১৬ টাকার মতো, যা বর্তমানে আট টাকায় কিনতে পাচ্ছি। গেল দুই তিন মাসে দাম বাড়ানো হয়েছে। তাদের বিশেষজ্ঞরাই বলছেন বিদ্যুতের দাম এত বাড়ত না। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা জনগণের পকেট থেকে টাকা কেড়ে নিচ্ছে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অসহায় হয়ে পড়েছে। কথা দিয়েছিল ১০টাকা কেজি চাল দেবে। এখন মোটা চাল ৭০ টাকা। সব কিছুর দাম বেড়েছে, ডিমের দাম তিন চারগুণ বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৬০ টাকা বেড়েছে। আর মুখে তারা উন্নয়নের বুলি আওড়ায়। ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল সরকার। কিন্তু আজ সরকারি হিসাবে প্রায় তিন কোটি বেকার।
আওয়ামী লীগ নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত দুটি নির্বাচনে দেখেছেন, কোনো ভোটই হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে কুকুর ঘুমাচ্ছিল। নির্বাচনে আগের রাতেই তারা ভোট নিয়ে গেছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ভেঙে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা চালু করেছিলেন দাবি মির্জা ফখরুলের। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছরে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দিয়েছিলেন। আর আওয়ামী লীগ চায় বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচন। আওয়ামী লীগকে কি মানুষ বিশ্বাস করে? ইউপি নির্বাচন জোর করে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আজ সিলেটের এই কাউন্সিল সাধারণ কাউন্সিল নয়। এই সিলেট থেকেই খালেদা জিয়া আন্দোলন ও নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতেন। তাই জনগণকে মুক্তির আন্দোলন সিলেট থেকে শুরু করতে হবে।
সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীর সভাপতিত্বে ও রেজাউল হাসান কয়েছ লোদীর পরিচালনায় সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এম এ জাহিদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ড. এনামুল হক চৌধুরী, তাহসীনা রুশদির লুনা, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ।

সরকারের অপকীর্তি বলে শেষ করা যাবে না-সিলেটে মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় ০৮:৩২:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারের অপকীর্তি বলে শেষ করা যাবে না। তাদের একটা ভালো কাজ দেখাতে পারবেন না। বাংলাদেশের সমাজকে পুরোপুরি বিভক্ত করে এরা দূষিত সমাজে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শক্তি দিয়ে অন্যায়ভাবে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে দেশ পরিচালনা করছে। তারা আমাদের সব অর্জনগুলোকে কেড়ে নিয়েছে, এদের পরাজিত করতে হবে। এদের বিতাড়িত করতে হবে। পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে।
শুক্রবার নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে সকাল ১০টায় শুরু হওয়া সিলেট মহানগর বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন সারা দেশে নির্যাতন নিপীড়ন চলছে। আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মী রাজপথে প্রাণ দিয়েছেন। শত শত নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। হাজারো নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরও আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। যেভাবেই হোক, ভয়াবহতা থামাতে হবে। যারা এই দলের জন্য রক্ত দিয়েছেন, তাদের ঋণ শোধ করার সময়ে এসেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ক্ষতি যেগুলো করেছে, এর মধ্যে ১৯৭২ সালের যে সংবিধান এদেশের মানুষ রচনা করেছিল, যে সংবিধান সবাই মেনে নিয়েছিল, সেই সংবিধানকে বারবার কাটাছেঁড়া করে একটি অকার্যকর সংবিধানে পরিণত করেছে।
তিনি আরও বলেন, যারা যুদ্ধ করেছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তারা এই সংবিধান দেখতে চাননি। ১৯৭২ সংবিধানের মৌলিক যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যবস্থা, ১৯৭৫ সালে তা বন্ধ করে দিয়ে তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ এবং পত্র—পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে একদলীয় স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা চালু করেছিল। আর তারা যখনই ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেয়েছে, তখনই তারা সংবিধানে হাত দিয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করে কণ্ঠরোধ করেছে। তারা অর্থনীতি এমনভাবে ধ্বংস করেছে, টেনে তোলা অত্যন্ত কঠিন। আজ নিজেদের স্বার্থে, দুর্নীতির স্বার্থে, চুরি করার স্বার্থে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা জোরে জোরে বলেন, তারা নাকি অনেক উন্নয়ন করেছেন। সেই উন্নয়ন কেবল গুটিকয়েক মানুষের জন্যে। ঢাকায় তারা পাতাল রেল, মেট্রোরেল করেছে। কত টাকা খরচ করেছে? যা খরচ হওয়ার কথা, তার ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি খরচ হয়েছে। পদ্মা সেতু করে বাহবা নেয়, আমাদের সময়ে সেই পদ্মা সেতুর ১০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ছিল। সেই সেতুর বাজেট ৩০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে রোগীরা ঠিকমত শয্যা পান না, ওষুধ পান না, ডাক্তার পান না। হাসপাতালগুলোতে ঢোকার কোনো পরিবেশ থাকে না। ফলে স্বাস্থ্য সেবার জন্য বেশিরভাগ মানুষকে দেশের বাইরে চলে যেতে হচ্ছে। দেশে কোনো চিকিৎসা পাওয়া যায় না। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়ে গেছে। তারা যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লিজ নিয়েছে। আজ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কত খারাপ হয়েছে! প্রকাশ্যে দিনের বেলায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা ছিনতাই হয়েছে। আবার যখন খুঁজে পায়, তখন দেড় কোটি টাকা কম। অবস্থা এমন খারাপ হয়েছে যে, আজ মা—বোনেরা এ দেশে নিরাপদ বোধ করেন না। কোথাও কোনো আইনের শাসন নেই। তারা বিচারব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ নিজেদের করে নিয়েছে। তারা আজ দেশ পরিচালনা করছে শুধুমাত্র অন্যায়ভাবে শক্তি দিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী সরকার ভারতের বিশাল কোম্পানি আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী আমাদের দেড় লাখ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। অন্যান্য দেশে যে দামে কয়লা পাওয়া যায়, তার দ্বিগুণ দাম দিয়ে আমাদের কয়লা আনতে হচ্ছে। আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তির ফলে বাংলাদেশে বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি দাঁড়াবে প্রায় ১৬ টাকার মতো, যা বর্তমানে আট টাকায় কিনতে পাচ্ছি। গেল দুই তিন মাসে দাম বাড়ানো হয়েছে। তাদের বিশেষজ্ঞরাই বলছেন বিদ্যুতের দাম এত বাড়ত না। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা জনগণের পকেট থেকে টাকা কেড়ে নিচ্ছে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অসহায় হয়ে পড়েছে। কথা দিয়েছিল ১০টাকা কেজি চাল দেবে। এখন মোটা চাল ৭০ টাকা। সব কিছুর দাম বেড়েছে, ডিমের দাম তিন চারগুণ বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৬০ টাকা বেড়েছে। আর মুখে তারা উন্নয়নের বুলি আওড়ায়। ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল সরকার। কিন্তু আজ সরকারি হিসাবে প্রায় তিন কোটি বেকার।
আওয়ামী লীগ নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত দুটি নির্বাচনে দেখেছেন, কোনো ভোটই হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে কুকুর ঘুমাচ্ছিল। নির্বাচনে আগের রাতেই তারা ভোট নিয়ে গেছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ভেঙে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা চালু করেছিলেন দাবি মির্জা ফখরুলের। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছরে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দিয়েছিলেন। আর আওয়ামী লীগ চায় বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচন। আওয়ামী লীগকে কি মানুষ বিশ্বাস করে? ইউপি নির্বাচন জোর করে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আজ সিলেটের এই কাউন্সিল সাধারণ কাউন্সিল নয়। এই সিলেট থেকেই খালেদা জিয়া আন্দোলন ও নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতেন। তাই জনগণকে মুক্তির আন্দোলন সিলেট থেকে শুরু করতে হবে।
সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীর সভাপতিত্বে ও রেজাউল হাসান কয়েছ লোদীর পরিচালনায় সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এম এ জাহিদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ড. এনামুল হক চৌধুরী, তাহসীনা রুশদির লুনা, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।