ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅদ্ভুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ছাতকে স্মরণ সভা Logo বালি মহালে ইজারা পদ্বতি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন Logo ছাতকে আওয়ামিলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার Logo পিলখানা হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। Logo শান্তিগঞ্জের জয়সিদ্ধি-বসিউয়াখাউরী গ্রামে বিএনপির কর্মী সভা Logo জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর উপজেলার ৬ নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কমিটি গঠন Logo পরিবেশ নষ্ট করে কোন বাঁধ নির্মাণ হবেনা – পরিবেশ উপদেষ্টা Logo হাওরের জন্য সরকারের মাস্টার প্লান আছে- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

বেকার ও অসচ্ছলদের টার্গেট করে মানবপাচার, নারীরাই বেশি ভুক্তভোগী

পাচারের শিকার কোনও ব্যক্তিকে উদ্ধারের পর পাচারকারীদের পেছনে কারা রয়েছে, ভুক্তভোগীর সঙ্গে কী ঘটেছিল— বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব আর উদঘাটিত হয় না। গ্রেফতার করা হয় চুনোপুঁটিদের, অন্তরালে থেকে যায় রাঘব-বোয়ালরা। বাংলাদেশকে ঘিরে মানবপাচারে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট রয়েছে। ২০১৭ থেকে ২০২২– এই ছয় বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) উদ্ধারের তালিকায় পাচারের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী। ৬ বছরে ৩৬৬ নারী ও ৩১০ জন পুরুষকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া এ সময়ে সাতটি শিশুকেও উদ্ধার করা হয়।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, দেশের যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দর্শনা, দিনাজপুর, লালমনিরহাট সীমান্ত ও স্থলবন্দর সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুপাচার হচ্ছে বেশি। এসব এলাকার অরক্ষিত সীমান্ত পয়েন্টগুলো নারী ও শিশুপাচারে প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া চাকরি দেওয়ার নাম করে বিমানবন্দর দিয়েও নারীপুরুষদের বিদেশে পাচার করা হয়। পরে তাদেরকে বিভিন্ন দেশে জিম্মি করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। পাচারকারীদের ফাঁদে পড়ে অবৈধ পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টাকালে সমুদ্রপথে ঘটছে মৃত্যুর ঘটনাও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানবপাচার প্রতিরোধের প্রধান কাজ হিসেবে বেকারত্ব হ্রাসের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। উন্নত বিশ্বে কারিগরি ক্ষেত্রে যে পরিমাণ কর্ম খালি আছে, তাতে প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ পাঠানোর মাধ্যমে আমাদের বেকারত্ব যথেষ্ট কমিয়ে আনা সম্ভব। যেসব দেশে মানবপাচারের হার বেশি, সেসব দেশের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে মানবপাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে কিংবা বিদেশে কোথাও চাকরির প্রস্তাব পেলে— সেই চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটির নামে পূর্বে কোনও খারাপ রিপোর্ট রয়েছে কিনা, তা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেডে বিদেশগামী যেকোনও প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া বেকারদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারলে বিদেশ যাওয়াদের সংখ্যা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।তদন্ত সংশ্লিষ্টরা আরও  জানান, পাচার রোধে ইমিগ্রেশন পয়েন্ট বা সীমান্তে কঠোর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা নিতে হবে। পাচারকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ‘মানবপাচার দমন ও প্রতিরোধ আইন-২০১২’ এর সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের জন্য মামলার তদন্ত ও প্রসিকিউশন— উভয় ক্ষেত্রেই দক্ষ কর্মকর্তাদেরকে অপরাধীদের বিচারে নিয়োগ করতে হবে।র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মানবপাচারের অভিযোগে দেশীয় বেশ কয়েকটি চক্রের সদস্যদের আমরা গ্রেফতার করেছি। তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশে মানবপাচারের শিকার হয়ে সেখানকার মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে নির্যাতিত বেশ কয়েকজনকে আমরা দেশে ফিরিয়ে এনেছি। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা  অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅদ্ভুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ছাতকে স্মরণ সভা

বেকার ও অসচ্ছলদের টার্গেট করে মানবপাচার, নারীরাই বেশি ভুক্তভোগী

আপডেট সময় ১২:০৫:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩

পাচারের শিকার কোনও ব্যক্তিকে উদ্ধারের পর পাচারকারীদের পেছনে কারা রয়েছে, ভুক্তভোগীর সঙ্গে কী ঘটেছিল— বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব আর উদঘাটিত হয় না। গ্রেফতার করা হয় চুনোপুঁটিদের, অন্তরালে থেকে যায় রাঘব-বোয়ালরা। বাংলাদেশকে ঘিরে মানবপাচারে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট রয়েছে। ২০১৭ থেকে ২০২২– এই ছয় বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) উদ্ধারের তালিকায় পাচারের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী। ৬ বছরে ৩৬৬ নারী ও ৩১০ জন পুরুষকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া এ সময়ে সাতটি শিশুকেও উদ্ধার করা হয়।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, দেশের যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দর্শনা, দিনাজপুর, লালমনিরহাট সীমান্ত ও স্থলবন্দর সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুপাচার হচ্ছে বেশি। এসব এলাকার অরক্ষিত সীমান্ত পয়েন্টগুলো নারী ও শিশুপাচারে প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া চাকরি দেওয়ার নাম করে বিমানবন্দর দিয়েও নারীপুরুষদের বিদেশে পাচার করা হয়। পরে তাদেরকে বিভিন্ন দেশে জিম্মি করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। পাচারকারীদের ফাঁদে পড়ে অবৈধ পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টাকালে সমুদ্রপথে ঘটছে মৃত্যুর ঘটনাও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানবপাচার প্রতিরোধের প্রধান কাজ হিসেবে বেকারত্ব হ্রাসের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। উন্নত বিশ্বে কারিগরি ক্ষেত্রে যে পরিমাণ কর্ম খালি আছে, তাতে প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ পাঠানোর মাধ্যমে আমাদের বেকারত্ব যথেষ্ট কমিয়ে আনা সম্ভব। যেসব দেশে মানবপাচারের হার বেশি, সেসব দেশের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে মানবপাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে কিংবা বিদেশে কোথাও চাকরির প্রস্তাব পেলে— সেই চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটির নামে পূর্বে কোনও খারাপ রিপোর্ট রয়েছে কিনা, তা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেডে বিদেশগামী যেকোনও প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া বেকারদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারলে বিদেশ যাওয়াদের সংখ্যা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।তদন্ত সংশ্লিষ্টরা আরও  জানান, পাচার রোধে ইমিগ্রেশন পয়েন্ট বা সীমান্তে কঠোর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা নিতে হবে। পাচারকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ‘মানবপাচার দমন ও প্রতিরোধ আইন-২০১২’ এর সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের জন্য মামলার তদন্ত ও প্রসিকিউশন— উভয় ক্ষেত্রেই দক্ষ কর্মকর্তাদেরকে অপরাধীদের বিচারে নিয়োগ করতে হবে।র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মানবপাচারের অভিযোগে দেশীয় বেশ কয়েকটি চক্রের সদস্যদের আমরা গ্রেফতার করেছি। তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশে মানবপাচারের শিকার হয়ে সেখানকার মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে নির্যাতিত বেশ কয়েকজনকে আমরা দেশে ফিরিয়ে এনেছি। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা  অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি।’