সুদানে সংঘাতে লিপ্ত দুটি পক্ষ শুক্রবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তিন দিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। তবে এই ঘোষণার পরও রাজধানী খার্তুমে বিক্ষিপ্ত গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। সংঘাতরত একটি পক্ষ বলেছে, বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য বিমানবন্দরগুলো পুনরায় সচল করতে রাজি আছে তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, সুইজারল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন এবং স্পেন বলেছে, প্রায় এক সপ্তাহের সহিংসতার পরে তারা তাদের কর্মীদের সুদান থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বা চেষ্টা করছে।সুদানের শাসকগোষ্ঠীর দুই মিত্র নেতার নেতৃত্বাধীন দুটি বাহিনী গত শনিবার সহিংস ক্ষমতার লড়াই শুরু করে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত চার শতাধিক বেসামরিক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল দেশটিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ।রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, শুক্রবার শেষের দিকে খার্তুমে কামানের গোলাগুলি অব্যাহত ছিল। যদিও আগের দিনের তুলনায় তীব্রতা কম ছিল।এই যুদ্ধবিরতি যদি ভেস্তে যায় তাহলে লড়াই বন্ধে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাটিও অকার্যকর বলে প্রমাণিত হবে।সংঘাতরত সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) শুক্রবার পৃথকভাবে বলেছে, ঈদ-উল-ফিতর উদযাপনের সুযোগ দিতে তারা দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী আশা করে বিদ্রোহীরা যুদ্ধবিরতির সব শর্ত মেনে চলবে এবং এতে বাধা সৃষ্টিকারী যেকোনও সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করবে।মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন যুদ্ধবিরতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সুদানের সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্বকে অবিলম্বে একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে হবে যাতে দেশের আরও ক্ষতি ঠেকানো যায়।আরএসএফ শুক্রবার বলেছে, তারা সুদানের সব বিমানবন্দর আংশিকভাবে খোলার জন্য প্রস্তুত যাতে বিদেশি সরকারগুলো তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে পারে।বিবৃতিতে আরএসএফ বলেছে, প্রবাসী এবং বিভিন্ন দেশের মিশনের কর্মীদের নিরাপদে দেশ ত্যাগ করতে তারা সহযোগিতা, সমন্বয় এবং সব সুবিধা প্রদান করবে।সুদানের বিমানবন্দরগুলো আরএসএফ কতটা নিয়ন্ত্রণ করে তা স্পষ্ট নয়। কয়েক দিন আগে খার্তুম বিমানবন্দরে সংঘর্ষ হয়েছে। টারমাকে উড়োজাহাজ পোড়ানোর হয়েছে। বেশ কয়েক দিন আগে বাণিজ্যিক এয়ারলাইন্সগুলো ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে।শুক্রবার সেনাবাহিনী ও আরএসএফ-এর সেনারা দিনভর শহর ও আশেপাশের এলাকায় একে অপরকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেছে। ভোরে ঈদের নামাজের সময় কামান, বিমান হামলা এবং বন্দুকের গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে।