স্টাফ রিপোর্টার:(সুনামগঞ্জ)
‘এই রাস্তায় এক যুগে এক টুকরো মাটি পড়েনি, ইট-পাথর তো দূরের কথা। নির্বাচন এলে প্রার্থীরা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচনের পর আর মনে থাকে না। এই রাস্তার জন্য কৃষকরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন, কৃষিপণ্য নিতে পারছেন না। বাচ্চারা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এমনকি মরার খাট পর্যন্ত নেওয়া যায় না।’ সুনামগঞ্জ জেলা
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের হাসারচর, আমদাবাজ এলাকার রাস্তাটির দুর্দশা নিয়ে এমন মন্তব্য করেন স্থানীয় ঐ গ্রামের লোকজন।শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি )সকালে সরেজমিনে ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকা রাস্তাটির দুর্দশার কথা জানান।
তারা জানান, মাটির রাস্তাটি নিয়ে এই এলাকার মানুষের ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। প্রতিদিন তিন গ্রামের পাচঁ হাজারেরও বেশি মানুষ চলাচল করেন। এ ছাড়া গনিনগর ষোলগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়,হাসারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,শ্রীনাথপুর ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা, আমদাবাজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াখালী সপ্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়,সহ শহরমুখী শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এ রাস্তা ব্যবহার করেন।
বছরের প্রায় সবসময় পানি জমে রাস্তাটি কর্দমাক্ত অবস্থায় থাকে। ফলে চলাচলের সময় মাঝেমধ্যে শিক্ষার্থীদের জামা-কাপড় ও বই-খাতা নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া কৃষিপণ্য, অসুস্থ রোগী ও নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
জাকারিয়া আহমেদ স্বাধীন নামের এক যুবক বলেন, রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। অনেক স্থানে রাস্তার মাটি খালের মধ্যে পড়েছে। জোয়ারের পানি রাস্তার ওপর দিয়ে গড়িয়ে ফসলের মাঠে প্রবেশ করে থাকে।বর্ষাকালে অতিবৃষ্টিতে নদীর পানি রাস্তা প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠে যায়, ছেলে-মেয়েরা পানির জন্য স্কুলে যেতে পারেনা।
আনোয়ার হোসেন নামে আরেক ভূক্তভোগী বলেন, জন্মের পর এই রাস্তায় মাটি দিতে দেখিনি। মেরামত, সংস্কার বা পাকা করা তো দূরের কথা। মেম্বার-চেয়ারম্যানের বাড়ি এই এলাকায় না হওয়ায় তারা সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নেন না। একটু বৃষ্টি হলেই পানি উঠে যায়, স্কুল-কলেজে যাওয়ার মতো অবস্থা থাকে না।
‘সড়কটি পাকা হলে জেলা শহরের সঙ্গে স্থানীয়দের যাতায়াত সহজ হবে। সাধারণ মানুষ শহরমুখী হলে তাদের উপার্জন বাড়বে। পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হবে। কৃষিপণ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে শহরে পৌঁছানো যাবে। সর্বোপরি রাস্তাটি পাকা হলে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ উপকৃত হবেন। তাই জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি পাকা করার জন্য দাবি জানান এলাকাবাসী। এসময় উপস্থিত ছিলেন হাসারচরের ইসলাম উদ্দিন, নতুন জাহানপুর ইয়া,আমদাবাজের সমেরন্ড দাস,মোঃনুর ইসলাম পিন্টু দাস সহ আরও অনেকই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা বলেন, ‘এ সংক্রান্ত সমস্যার কথা নিয়ে একটি আবেদন পেয়েছি বরাদ্দ আসলে খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।