প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিতে উঠলো মরক্কো। বিশ্বের ২য় সেরা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দলকে ১-০ গোলে কান্নার সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে মহানন্দে ভাসল আফ্রিকার সিংহরা।
প্রথমার্ধে সাইডবেঞ্চে বসে রয়েছিলেন রোনালদো। অপেক্ষায় ছিলেন রোনালদো বিহীন পর্তুগালের গোলের জন্য। কিন্তু সমীকরণ পুরো উল্টো। ম্যাচের ৪২তম মিনিটে দুর্দান্ত এক হেডে পর্তুগালের জালে বল জড়িয়ে দেন মরক্কোর ইউসুফ এন-নেসিরি।
আল থুমামা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দল পর্তুগাল এবং আফ্রিকান অদম্য সিংহ মরক্কো।
পুরো ম্যাচে স্পষ্ট প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেছে পর্তুগাল। বল দখলের লড়াইয়ে পর্তুগালের ছিল ৬৫ ভাগ এবং মরক্কোর ছিলো কেবল ৩৫ ভাগ। কিন্তু প্রতি আক্রমণে অসাধারণ গোলটি আদায় করে নিয়েছে মরক্কানরা।
বাম পাশ থেকে আতিয়াত-আল্লাহ’র দুর্দান্ত ক্রস লাফ দিয়ে উঠে ধরতে চেয়েছিলেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক দিয়েগো কস্তা। কিন্তু তার আগেই দৌড়ে এসে লাফিয়ে উঠে মাথায় বল ছুঁইয়ে দেন সেভিয়া স্ট্রাইকার এন-নেসিরি। বল জড়িয়ে যান পর্তুগালের জালে। এই গোলের আগে আরও দুটি হেড মিস করেছিলেন এন-নেসিরি।
৪৫তম মিনিটেই পর্তুগিজদের দুর্ভাগ্য হয়ে আসে বারে বল লেগে যাওয়া। দালতের ফ্লিক থেকে বল পেয়ে ব্রুনো ফার্নান্দেজ অসাধারণ এক শট নেন ডান প্রান্ত থেকে। কিন্তু বল পর্তুগিজদের উপরের বারে লেগে ফিরে আসে।
বিরতি থেকে ফিরেই কোচ ফার্নান্দো সান্তোস মাঠে নামান রোনালদোকে। মুহুর্মুহু আক্রমণে মরক্কোর ডিফেন্সে ঝড় তোলে পর্তুগিজরা। ৫৯ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে ওতাভিয়ার ক্রসে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন রামোস।
৬৫ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পায় পর্তুগাল। কিন্তু ব্রুনো ফার্নান্দেজের দুর্দান্ত শট গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়। হতাশায় মুষড়ে পড়েন ব্রুনো।
৮৩ মিনিটে মরক্কোকে নিশ্চিত গোল খাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেন মরক্কোর গোলরক্ষক আগের ম্যাচের নাত্যক বুনু। ডি বক্সের সামান্য ভেতরে থেকে হোয়াও ফেলিক্স বা পায়ের দুর্দান্ত বাকানো শট নিলে ডান দিকে ঝাপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন বুনু।
৯০ মিনিটে ডিবক্সের ভেতর থেকে রোনালদোর ডান পায়ের জোড়ালো শট রুখে দেন বুনু। ৯২ মিনিটে মরক্কোর চেদিরা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় আফ্রিকান দলটি।
৯৫ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ মিস করেন মরক্কোর আবুখলিল। পর্তুগিজ গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল দিতে পারেননি তিনি। ৯৭ মিনিটে পেপের দুর্দান্ত হেড গোলবার ঘেষে চলে গেলে গোলবঞ্চিত হয় পর্তুগাল।
ম্যাচের একদম শেষ দিকে আরো দুটি গোলের সুযোগ তৈরি করলেও গোল দিতে পারেনি পর্তুগাল৷ ফলে বিশ্বকাপ থেকে খালি হাতেই বিদায় নিল পর্তুগাল। আর ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠলো মরক্কো।