ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅদ্ভুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ছাতকে স্মরণ সভা Logo বালি মহালে ইজারা পদ্বতি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন Logo ছাতকে আওয়ামিলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার Logo পিলখানা হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। Logo শান্তিগঞ্জের জয়সিদ্ধি-বসিউয়াখাউরী গ্রামে বিএনপির কর্মী সভা Logo জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর উপজেলার ৬ নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কমিটি গঠন Logo পরিবেশ নষ্ট করে কোন বাঁধ নির্মাণ হবেনা – পরিবেশ উপদেষ্টা Logo হাওরের জন্য সরকারের মাস্টার প্লান আছে- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
চোরাই পথে কয়লা আনতে ৮ মাসে ৩ জনের মৃত্যু, বিএসএফের হাতে আটক ৫, বিজিবিসহ আহত অর্ধশতাধিক

“কয়লা চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য তাহিরপুর “

 সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত এখন ভারতীয় কয়লা চোরাচালানের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। তাহিরপুর সীমান্ত কয়লা চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য” পরিনত হয়ে। তাহিরপুর সীমান্তকে ব্যবহার করে স্থানীয় বেশ কয়েকটি কয়লা চোরাকারবারি সিন্ডিকেট চক্রের প্রতি রাতেই ভারত থেকে চোরাই পথে নিয়ে আসছে হাজার বস্তা ভারতীয় চোরাই কয়লার বস্তা। ওই চোরাকারবারি সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য বড়ছড়া গ্রামে মৃত্যু ইসমাঈলের ছেলে ইছাক মিয়া(৪০), লাকমা গ্রামের সিরাজ মহালদারের ছেলে রতন মহালদার, লালঘাট গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা কালাম গংদের ছত্রছায়ায় তাহিরপুর উপজেলার রজনী লাইন, টেকেরঘাট, লাকমা, চারাগঁও, কলাগাও- বাশতলা, বিরেন্দ্রনগর ও বাগলী সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাই পথে সীমান্তের ওপারে ভারত থেকে চোরাই কয়লা আনতে গিয়ে গত ৮ মাসে কয়লার গুহায় মাটি চাপা পড়ে ৩ বাংলাদেশী শ্রমিকের মৃত্যু, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে ৫ বাংলাদেশী যুবক আটক। এবং ভারতীয় চোরাই কয়লার বস্তার ভাগবোটোয়ারা নিয়ে সীমান্তে কয়েকটি চোরাচালানকারী সিন্ডিকেট গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এপর্যন্ত বিজিবি সদস্যসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে- পাচাঁরকৃত অবৈধ ১বস্তা কয়লা (৪০কেজি) থেকে টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের নাম ভাংগিয়ে সোর্স ইসাক মিয়া চাঁদা নেয় ১শ টাকা, বড়ছড়া শুল্কস্টেশনে নাম ভাংগিয়ে সোর্স রতন মহলদার গং চাঁদা নেয় ৫০টাকা করে। অন্যদিকে বালিয়াঘাট ক্যাম্পের বিজিবি, পুলিশ ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে চিহ্নিত চোরাকারবারী সোর্স ইয়াবা কালাম মিয়া ১বস্ত চোরাই কয়লা থেকে ১৭০টাকা হারে চাঁদা নেয় বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও বৈধ কয়লা ব্যবসায়ীদের। শুধু তাই নয়! গত ২০২০ সালের ২২শে অক্টোবর রাতে চোরাই পথে ভারত থেকে কয়লা আনার সময় গত বছর উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবি সদস্যরা বাঁধ দিলে বিজিবি ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় চোরাকারবারিদের পক্ষ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিজিবি সদস্যদের মধ্যে দাওয়া পাল্টা দাওয়া শুরু হয়। এতে বিজিবির দুই কর্মকর্তা, সৈনিক ও শিশুসহ ১০জন আহত হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবি ১১ রাউন্ড এস এম জির ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সীমান্তের অনেকেই জানান, তাহিরপুর সীমান্তের ওইসব প্রভাবশালী চোরাকারবারি সিন্ডিকেট চক্রের নিয়জিত লোকজন অবৈধ অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশের ওপারে ভারতের কায়লার গুহা থেকে চুরি করে কয়লা আনতে গিয়ে গুহার মাটি চাপা পড়ে গত ৮ মাসে ৩ বাংলাদেশীর মৃত্যু, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর হাতে ৫ যুবক আটক ও চোরাই কয়লার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সংঘর্ষে এপর্যন্ত বিজিবি সদস্য, নারী-পুরুষ শিশুসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত সহ সংঘর্ষর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবির ১১ রাউন্ড গুলি খরচ হয়েলেও চোরাকারবারিরা দাপটের সাথেই তাদের কয়লা চোরাচালান চালিয়ে যাচ্ছে। এনিয়ে নেই কারো মাথা ব্যথা। প্রশাসনও রয়েছে নিরব ভূমিকায়। স্থানীয় এলাকাবাসী ও সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার চানপুর, ট্যাকেরঘাট, বালিয়াঘাট, চাড়াগাঁও, ধীরেন্দ্রনগর ও বাগলী সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈপথে ভারত থেকে কয়লা বস্তা আনতে গিয়ে গত(১৭ এপ্রিল ২০২২) বালিয়াঘাট সীমান্ত ফাঁড়ির লাকমা এলাকাদিয়ে চুরি করে কয়লা আনতে গিয়ে কোয়ারীর মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয় উত্তর শ্রীপর ইউনিয়নের লাকমা গ্রামের অব্দুল কুদ্দুছের ছেলে অনিক মিয় (২০) এর মৃত্যু হয়। গত (২৬ জুন ) লাউড়েরগড় সীমান্তের ১২০৩ পিলার এলাকার বারেকটিলা সংলগ্ন যাদুকাটা নদী দিয়ে ভারতে গিয়ে কয়লার বস্তা আনার সময় যাদুকাটা নদীতে ডুবে বড়গুফ টিলা গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে সাব্বির মিয়া(২৫) এর মৃত্যু হয়। গত (৪ অক্টোবর) ট্যাকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের কয়লা কোয়ারি থেকে চোরাই পথে কয়লা আনতে গিয়ে কয়লার গুহায় পাথর চাপায় উত্তর বড়দল ইউনিয়নের রজনী লাইন গ্রামের কেনু মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। এবং গত (৭ নভেম্বর) চাঁনপুর সীমান্তের ১২০৫ পিলার অতিক্রম করে চোরাচালানের মাধ্যমে ভারতের ভিতরে কয়লা আনতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে আটক হয় উপজেলার সীমান্তবর্তী চাঁনপুর গ্রামের কাদির মিয়ার ছেলে নজির মিয়া,একই গ্রামের সামসুদ্দিনের ছেলে জসিম মিয়া,পার্শ্ববর্তী আমতৈল গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে আশক আলী প্রমুখ । এদিকে গত (৩০শে ডিসেম্বর) শুক্রবার বাগলী রাত ৮টায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের বাগলী শুল্কস্টেশন সংলগ্ন বাগলীছড়া দিয়ে ভারত থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে বিপুল পরিমান কয়লা পাচাঁর করে জিরো পয়েন্টে মজুত করে রাখে একটি চোরাকারবারি গ্রুপ। পরে বাগলী কয়লা ও চুনাপাথর আমদানী কারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন চোরাই কয়লা পাচারে বাধা দিলে সমিতির ক্যাশিয়ার আলী হোসেন গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় সংঘর্ষে আনোয়ার খন্দকার(৩০), সালাম মিয়া (৩৫), হযরত আলী (৩৮), আলী আকবর (৩৬) ও মনির হোসেনসহ মোট ১০জন আহত হয়। তাদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় আনোয়ার খন্দাকার (৩০) কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এবং অন্য আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এঘটনাটি বিজিবি জানতে পেরে বাগলী ছড়ায় অভিযান চালিয়ে সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ৫০ কেজি ওজনের ২৭০বস্তা অবৈধ চোরাই কয়লা ও ২০বোতল মদ জব্দ করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। গত (৭ ডিসেম্বর) উপজেলা দুই চোরাকারবারি মাইঝহাটি গ্রামের ছালাম উদ্দিনের পুত্র ডালিম মিয়া ও একই গ্রামের হারুন মিয়া দু,জনেই চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে নিয়ে আসা চোরাই কয়লার বস্তার মালিকানা দাবি করে। এতে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে দু পক্ষের আত্মীয় স্বজন নিয়ে সংঘর্ষে জিড়িয়ে পরে। এসময় সংঘর্ষে ডালিম মিয়া(৩২) ও তার চাচা হারিছ মিয়া (৪২)-সহ আরও ১০ জন আহত হয়। এব্যাপারে টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সোর্স পরিচয়ধারী ইছাকের বক্তব্য জানতে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ০১৭৪৫২৬০৭৫১ নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ভাত খাওয়ার কথা বলে কল কেটে দেয়। পরে একাধিকবার ফোন করলেও সে ফোন রিসিভ করেনি। এব্যাপারে বীরেন্দ্রনগর বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার খলিল বলেন- সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করাসহ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ২৭০বস্তা অবৈধ কয়লা ও ২০বোতল মদ উদ্ধার করা হয়েছে। এব্যাপারে টেকেরঘাট কোম্পানীর বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার( ভারপ্রাপ্ত) হাবিলদার শামসুল বলেন- কোম্পানী কমান্ডার ইয়াহিয়া খান সাহেব বাহিরে গেছেন, বর্তমানে আমি দায়িত্বে আছি, ইসাক মিয়া আমাদের সোর্স কিন্তু সে কয়লা পাচাঁরের সাথে জড়িত থেকে আমাদের নামে চাঁদা নেয় কিনা এব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এব্যাপারে সুনামগঞ্জ-২৮ বডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবি অধিনায়ক মাহবুবুর রহমানের বক্তব্য জানতে সরকারি মোবাইল ০১৭৬৯৬০৩১৩০ নাম্বারে বেশ কয়েকবার ফোন দিলে কল রিসিভ না করায় উনার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅদ্ভুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ছাতকে স্মরণ সভা

চোরাই পথে কয়লা আনতে ৮ মাসে ৩ জনের মৃত্যু, বিএসএফের হাতে আটক ৫, বিজিবিসহ আহত অর্ধশতাধিক

“কয়লা চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য তাহিরপুর “

আপডেট সময় ০৬:১৭:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩
 সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত এখন ভারতীয় কয়লা চোরাচালানের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। তাহিরপুর সীমান্ত কয়লা চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য” পরিনত হয়ে। তাহিরপুর সীমান্তকে ব্যবহার করে স্থানীয় বেশ কয়েকটি কয়লা চোরাকারবারি সিন্ডিকেট চক্রের প্রতি রাতেই ভারত থেকে চোরাই পথে নিয়ে আসছে হাজার বস্তা ভারতীয় চোরাই কয়লার বস্তা। ওই চোরাকারবারি সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য বড়ছড়া গ্রামে মৃত্যু ইসমাঈলের ছেলে ইছাক মিয়া(৪০), লাকমা গ্রামের সিরাজ মহালদারের ছেলে রতন মহালদার, লালঘাট গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা কালাম গংদের ছত্রছায়ায় তাহিরপুর উপজেলার রজনী লাইন, টেকেরঘাট, লাকমা, চারাগঁও, কলাগাও- বাশতলা, বিরেন্দ্রনগর ও বাগলী সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাই পথে সীমান্তের ওপারে ভারত থেকে চোরাই কয়লা আনতে গিয়ে গত ৮ মাসে কয়লার গুহায় মাটি চাপা পড়ে ৩ বাংলাদেশী শ্রমিকের মৃত্যু, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে ৫ বাংলাদেশী যুবক আটক। এবং ভারতীয় চোরাই কয়লার বস্তার ভাগবোটোয়ারা নিয়ে সীমান্তে কয়েকটি চোরাচালানকারী সিন্ডিকেট গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এপর্যন্ত বিজিবি সদস্যসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে- পাচাঁরকৃত অবৈধ ১বস্তা কয়লা (৪০কেজি) থেকে টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের নাম ভাংগিয়ে সোর্স ইসাক মিয়া চাঁদা নেয় ১শ টাকা, বড়ছড়া শুল্কস্টেশনে নাম ভাংগিয়ে সোর্স রতন মহলদার গং চাঁদা নেয় ৫০টাকা করে। অন্যদিকে বালিয়াঘাট ক্যাম্পের বিজিবি, পুলিশ ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে চিহ্নিত চোরাকারবারী সোর্স ইয়াবা কালাম মিয়া ১বস্ত চোরাই কয়লা থেকে ১৭০টাকা হারে চাঁদা নেয় বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও বৈধ কয়লা ব্যবসায়ীদের। শুধু তাই নয়! গত ২০২০ সালের ২২শে অক্টোবর রাতে চোরাই পথে ভারত থেকে কয়লা আনার সময় গত বছর উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবি সদস্যরা বাঁধ দিলে বিজিবি ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় চোরাকারবারিদের পক্ষ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিজিবি সদস্যদের মধ্যে দাওয়া পাল্টা দাওয়া শুরু হয়। এতে বিজিবির দুই কর্মকর্তা, সৈনিক ও শিশুসহ ১০জন আহত হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবি ১১ রাউন্ড এস এম জির ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সীমান্তের অনেকেই জানান, তাহিরপুর সীমান্তের ওইসব প্রভাবশালী চোরাকারবারি সিন্ডিকেট চক্রের নিয়জিত লোকজন অবৈধ অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশের ওপারে ভারতের কায়লার গুহা থেকে চুরি করে কয়লা আনতে গিয়ে গুহার মাটি চাপা পড়ে গত ৮ মাসে ৩ বাংলাদেশীর মৃত্যু, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর হাতে ৫ যুবক আটক ও চোরাই কয়লার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সংঘর্ষে এপর্যন্ত বিজিবি সদস্য, নারী-পুরুষ শিশুসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত সহ সংঘর্ষর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবির ১১ রাউন্ড গুলি খরচ হয়েলেও চোরাকারবারিরা দাপটের সাথেই তাদের কয়লা চোরাচালান চালিয়ে যাচ্ছে। এনিয়ে নেই কারো মাথা ব্যথা। প্রশাসনও রয়েছে নিরব ভূমিকায়। স্থানীয় এলাকাবাসী ও সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার চানপুর, ট্যাকেরঘাট, বালিয়াঘাট, চাড়াগাঁও, ধীরেন্দ্রনগর ও বাগলী সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈপথে ভারত থেকে কয়লা বস্তা আনতে গিয়ে গত(১৭ এপ্রিল ২০২২) বালিয়াঘাট সীমান্ত ফাঁড়ির লাকমা এলাকাদিয়ে চুরি করে কয়লা আনতে গিয়ে কোয়ারীর মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয় উত্তর শ্রীপর ইউনিয়নের লাকমা গ্রামের অব্দুল কুদ্দুছের ছেলে অনিক মিয় (২০) এর মৃত্যু হয়। গত (২৬ জুন ) লাউড়েরগড় সীমান্তের ১২০৩ পিলার এলাকার বারেকটিলা সংলগ্ন যাদুকাটা নদী দিয়ে ভারতে গিয়ে কয়লার বস্তা আনার সময় যাদুকাটা নদীতে ডুবে বড়গুফ টিলা গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে সাব্বির মিয়া(২৫) এর মৃত্যু হয়। গত (৪ অক্টোবর) ট্যাকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের কয়লা কোয়ারি থেকে চোরাই পথে কয়লা আনতে গিয়ে কয়লার গুহায় পাথর চাপায় উত্তর বড়দল ইউনিয়নের রজনী লাইন গ্রামের কেনু মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। এবং গত (৭ নভেম্বর) চাঁনপুর সীমান্তের ১২০৫ পিলার অতিক্রম করে চোরাচালানের মাধ্যমে ভারতের ভিতরে কয়লা আনতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে আটক হয় উপজেলার সীমান্তবর্তী চাঁনপুর গ্রামের কাদির মিয়ার ছেলে নজির মিয়া,একই গ্রামের সামসুদ্দিনের ছেলে জসিম মিয়া,পার্শ্ববর্তী আমতৈল গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে আশক আলী প্রমুখ । এদিকে গত (৩০শে ডিসেম্বর) শুক্রবার বাগলী রাত ৮টায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের বাগলী শুল্কস্টেশন সংলগ্ন বাগলীছড়া দিয়ে ভারত থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে বিপুল পরিমান কয়লা পাচাঁর করে জিরো পয়েন্টে মজুত করে রাখে একটি চোরাকারবারি গ্রুপ। পরে বাগলী কয়লা ও চুনাপাথর আমদানী কারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন চোরাই কয়লা পাচারে বাধা দিলে সমিতির ক্যাশিয়ার আলী হোসেন গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় সংঘর্ষে আনোয়ার খন্দকার(৩০), সালাম মিয়া (৩৫), হযরত আলী (৩৮), আলী আকবর (৩৬) ও মনির হোসেনসহ মোট ১০জন আহত হয়। তাদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় আনোয়ার খন্দাকার (৩০) কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এবং অন্য আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এঘটনাটি বিজিবি জানতে পেরে বাগলী ছড়ায় অভিযান চালিয়ে সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ৫০ কেজি ওজনের ২৭০বস্তা অবৈধ চোরাই কয়লা ও ২০বোতল মদ জব্দ করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। গত (৭ ডিসেম্বর) উপজেলা দুই চোরাকারবারি মাইঝহাটি গ্রামের ছালাম উদ্দিনের পুত্র ডালিম মিয়া ও একই গ্রামের হারুন মিয়া দু,জনেই চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে নিয়ে আসা চোরাই কয়লার বস্তার মালিকানা দাবি করে। এতে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে দু পক্ষের আত্মীয় স্বজন নিয়ে সংঘর্ষে জিড়িয়ে পরে। এসময় সংঘর্ষে ডালিম মিয়া(৩২) ও তার চাচা হারিছ মিয়া (৪২)-সহ আরও ১০ জন আহত হয়। এব্যাপারে টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সোর্স পরিচয়ধারী ইছাকের বক্তব্য জানতে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ০১৭৪৫২৬০৭৫১ নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ভাত খাওয়ার কথা বলে কল কেটে দেয়। পরে একাধিকবার ফোন করলেও সে ফোন রিসিভ করেনি। এব্যাপারে বীরেন্দ্রনগর বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার খলিল বলেন- সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করাসহ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ২৭০বস্তা অবৈধ কয়লা ও ২০বোতল মদ উদ্ধার করা হয়েছে। এব্যাপারে টেকেরঘাট কোম্পানীর বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার( ভারপ্রাপ্ত) হাবিলদার শামসুল বলেন- কোম্পানী কমান্ডার ইয়াহিয়া খান সাহেব বাহিরে গেছেন, বর্তমানে আমি দায়িত্বে আছি, ইসাক মিয়া আমাদের সোর্স কিন্তু সে কয়লা পাচাঁরের সাথে জড়িত থেকে আমাদের নামে চাঁদা নেয় কিনা এব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এব্যাপারে সুনামগঞ্জ-২৮ বডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবি অধিনায়ক মাহবুবুর রহমানের বক্তব্য জানতে সরকারি মোবাইল ০১৭৬৯৬০৩১৩০ নাম্বারে বেশ কয়েকবার ফোন দিলে কল রিসিভ না করায় উনার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।