সবুজ মিয়া বলেন, ‘বাড়িতে তিন ছেলে-মেয়েসহ আমরা ৫ সদস্যের পরিবার। বাজারে এসে মুরগি, তরকারি, চাল কেনার হিসাব মেলাতে পারছি না। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি। আমাদের চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’সুনামগঞ্জে মুরগি, ডিম, খাসি ও গরুর মাংসের বাজার কিছু দিন ধরে অস্থির হয়ে ওঠেছে। খরচ কমাতে ভোক্তারা ডিম ও মাংস কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। অন্য যে কোনো সময় মুরগির দাম বাড়লে ডিম মানুষের ভরসা ছিল। এবার মুরগির উত্তাপে ডিমের দামও সাধারণের নাগালের বাইরেবাজার ঘুরে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে প্রতি হালি ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা এবং প্রতি কেজি মাংসের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে। এদিকে দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি কমেছে বলে জানান বিক্রেতারা।এক সপ্তাহ আগেও ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকায়। এখন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। অথচ একমাস আগেও প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা করে। এক মাসে কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে মুরগির দাম। একই সঙ্গে বেড়েছে অন্যান্য মুরগির দাম। বেড়েছে হাঁসের দাম এবং গরুর মাংসের দামও।পৌর শহরের জেল রোডে পোল্ট্রি ফার্মের দোকানে গিয়ে জানা যায়, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা, সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, লেয়ার প্রতিটি ৬৫০ টাকা, হাঁস প্রতিটি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৮০ টাকা করে, সোনালী মুরগি ২৫০ টাকা, লেয়ার প্রতিটি ৫৫০ টাকা এবং হাঁস প্রতিটি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। এদিকে পোল্ট্রি ফার্মের ডিম গত সপ্তাহে প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।ওয়েজখালি বাজার ঘুরে জানা যায়, গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। অথচ গত সপ্তাহে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬৫০ টাকায়।বিক্রেতারা জানান, সুনামগঞ্জে লোকাল খামারিদের নিকট থেকে ব্রয়লার মুরগি কিনতে পারছি না। সিলেট এবং হবিগঞ্জ থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। এছাড়া খাদ্যের দামও বেড়েছে। সবকিছুর জন্যই ব্রয়লার মুরগিসহ অন্যান্য মুরগির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে ক্রেতারা জানান, হু হু করে দাম বাড়ছে, এসব দেখার কি কেউ নেই। কম আয়ের মানুষের কেনায় কাটছাঁট ছাড়া উপায় নেই।শহরের ওয়েজখালি এলাকার বাসিন্দা সবুজ মিয়া বলেন, ‘বাড়িতে তিন ছেলে-মেয়েসহ আমরা ৫ সদস্যের পরিবার। বাজারে এসে মুরগি, তরকারি, চাল কেনার হিসাব মেলাতে পারছি না। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি। আমাদের চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’জেল রোড এলাকার ব্যবসায়ী আলেক মিয়া বলেন, ‘সুনামগঞ্জে লোকাল ব্রয়লার মুরগি কিনতে পাওয়া যায় না। শীতে বাচ্চা মরে যাওয়ার ভয়ে খামারিরা বাচ্চা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। আমরা সিলেট, হবিগঞ্জ থেকে ব্রয়লার মুরগি কিনে এনেছি। খাদ্যের দামও বেশি। যে কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’