গ্রীসের উত্তরে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত ৩৬ জন নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে সাড়ে তিনশো যাত্রীবাহী একটি ট্রেনের সঙ্গে একটি মালবাহী ট্রেনের এই সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবাহী ট্রেনটির প্রথম দুটি বগিতে আগুন ধরে গিয়ে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক গভর্নর।গ্রীসের উত্তরাঞ্চলীয় শহর লারিসায় এই দুর্ঘটনার পর উদ্ধার-কর্মীরা সেখানে সারা রাত ধরে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছেন।গ্রীসের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটিকে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।রেলওয়ে ইউনিয়নের প্রধান গ্রীসের স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কিভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটলো, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ে জীবন বাঁচিয়েছেন ২৮ বছর বয়সী স্টারজিওস মিনেনিস।“আমরা একটা বিকট শব্দ শুনতে পাই” বলছিলেন তিনি।“ট্রেনের কামরার মধ্যে আমরা গড়াগড়ি খাচ্ছিলাম। তারপর এটি গড়িয়ে একদিকে থামলো, তারপর সবার মধ্যে আতংক সৃষ্টি হলো। চারিদিকে তার ঝুলছে, আগুন। সাথে সাথেই আগুন ধরে গিয়েছিল। আমরা আগুনে পুড়ে যাচ্ছিলাম।”ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি রয়টার্সকে বলেন, “দশ-পনের সেকেন্ড ধরে চরম বিশৃঙ্খলা চলেছে। একজন আরেকজনের ওপর গিয়ে পড়ছে, উপর থেকে তার ঝুলছে, চারিদিকে ভাঙ্গা জানালা, লোকজন চিৎকার করছে।”
দুর্ঘটনার প্রথম দশ সেকেন্ডকে যাত্রীরা দুঃস্বপ্ন বলে বর্ণনা করেছেন ,যাত্রীরা জানিয়েছেন, ট্রেন থেকে বেরুনোর জন্য তাদেরকে জানালার কাঁচ ভাঙ্গতে হয়েছে।স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। কোন প্রাথমিক ধারণা এখনো পাওয়া যাচ্ছে না।গ্রীসে এটিকে দেশটির ইতিহাসের ভয়ংকরতম দুর্ঘটনা বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।দেড়শোর বেশি দমকল কর্মী এবং ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনাস্থলে কাজ করছিল।আঞ্চলিক গভর্নর কোস্টাস আগোরাস্টস জানিয়েছেন, দুই ট্রেনের মধ্যে এই সংঘর্ষ ছিল বেশ তীব্র।
আমি আমার পুরো জীবনে এরকম ঘটনা দেখিনি। খুবই মর্মান্তিক দৃশ্য। পাঁচ ঘণ্টা পরেও আমরা এখানে মৃতদেহ খুঁজে পাচ্ছি”, পরিশ্রান্ত এক উদ্ধারকর্মী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলছিলেন।এই দুর্ঘটনার পর গ্রীসে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিস দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এরকম দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটলো, তা খুঁজে বের করা এবং এমন যাতে আর না ঘটে তার ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।