পাবেল আহমেদ,শাল্লা::-সুনামগঞ্জের শাল্লা শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা হওয়া সত্বেও অত্যান্ত দুঃখের বিষয় উপজেলার আগুয়াই,মৌরাপুর,দত্তপাড়া,শাসখাই ও বিলপুরের প্রায় ১’হাজার পরিবার এখনো অন্ধকারেই দিন কাটাচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে গত বছরের ভয়াবহ বন্যার পূর্ব পর্যন্ত সরকারের দেওয়া সৌর সোলার বিদ্যুতের আওতায় ছিল তারা। গত ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় এই সৌর সোলার প্রকল্পের সবকিছু তছনছ করে ফেলে। বন্যার সময় থেকে প্রায় ১০ মাস যাবত বিদ্যুৎ বিহীন রয়েছে উপজেলার এই পাঁচটি গ্রাম। তবে বন্যায় একেবারে অকেজো হয়ে পড়ায়
দিরাই পিডিপি অফিসে এই সৌর সোলার প্রকল্পের বকেয়া বিলসহ সব মিটার জমা দিয়েছেন গ্রাহকেরা। এব্যাপারে পিডিপির দিরাই শাখার আবাসিক প্রকৌশলীর মোঃ রুবেল রানা জানান আগে বকেয়া বিলগুলো দিতে হবে তারপর উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে বিস্তারিত কথা বলে আপনাকে জানাতে পারব।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যুৎ না থাকায় শাসখাই (পঞ্চগ্রাম) বাজারে ব্যবসাতে কোন ধরনের উন্নয়নমূলক প্রসার ঘটাতে পারছেন না ব্যবসায়িরা। দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যুৎ বিহীন থাকায় এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটাসহ অনেক অনুন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে এলাকাটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রকল্পের ভেতরে গরুছাগল বসবাস করছে,খুঁটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে কোন জায়গায় উপচে পড়ে রয়েছে লাইন,কোন জায়গায় মানুষের মাথায় স্পর্শ করছে বিদ্যুতের লাইন।ব্যবসায়িরা ভেবেছিল বিদ্যুৎ পেয়ে ব্যবসায় প্রসার ঘটাবে কিন্তু এই এলাকাবাসীর কপালে ঘটেছে এর উল্টো।গ্রাহকরা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন তারা বিল দিতে ইচ্ছুক থাকা সত্বেও প্রকল্প কতৃপক্ষ সঠিক সময়ে ঠিকমতো বিল নিতে আসেননি।এদিকে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটিও টাঙ্গানো হয়েছে এই পাঁচ গ্রামের এরিয়ায় কিন্তু দুঃখের বিষয় পল্লী বিদ্যুতের সংযোগও পাচ্ছেন না গ্রাহকরা।কেন সংযোগ পাচ্ছে না কেনই বা এপ্রকল্পটিও মেরামত করে সংযোগ দিচ্ছে না এসবের কোনকিছুরই সদুত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।
শাসখাই সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বন্যায় ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে বিদ্যুতের সংযোগ ও খুঁটির লাইন।বন্যার আগে কোনরকমে ২-৩ ঘন্টা বিদ্যুৎ পেলেও বন্যার কবলে পরে এই প্রকল্পটি কোন কাজে আসছে না এলাকাবাসীর। এতে শাসখাই, মৌরাপুর, আগুয়াই, দত্তপাড়া ও বিলপুর এই পাঁচটি গ্রামের লোকজন একেবারে অন্ধকারেই জীবনযাপন করছেন বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ও বন মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রহিম আফরোজের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। ৪০০ কিলোওয়াটে প্রায় ৩২ কোটি টাকার এই বিদুৎ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে তারপর ২০১৭ সালের ১০ ই ডিসেম্বর ভার্চ্যুয়ালালি উদ্ভোদন করেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।কিন্তু এত টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।বিদুৎ পেয়েও সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের। অভিযোগ রয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রহিম আফরোজ কতৃপক্ষ ঠিকমতো বিল না নেওয়ায় গ্রাহকদের কাছে জমা হচ্ছে মোটা অংকের বকেয়া বিল। তারপরও পিডিপির আশ্বাস ও নির্দেশনা পেয়ে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ পাওয়ার আশায় মোটা অঙ্কের বিলই পরিশোধ করেছেন এলাকার বেশিরভাগ গ্রাহক।
এবিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ দিরাই সাব-জোনাল অফিসের এজিএম মোঃ নুরুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানান আমরা সবকিছু রেডি করে রেখেছি মন্ত্রনালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়ার পর রহিম আফরোজ কতৃপক্ষ অনুমতি দেওয়া মাত্রই আমরা পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে দেব।তিনি বলেন এটা নিয়ে আমাদের এমপি মহোদয় অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এব্যাপারে দিরাই-শাল্লা আসনের সংসদ সদস্য ডক্টর জয়া সেনগুপ্তা বলেন শাসখাই এলাকার বিদ্যুতের বিষয়টি নিয়ে আমি সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়েছি রহিম আফরোজ কতৃপক্ষ রাজিও হয়েছে। এখন তারা নো অবজেকশন দিলেই দ্রুত হয়ে যাবে, এব্যাপারে তার যথেষ্ট তৎপরতা রয়েছে বলে জানান তিনি।