ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। Logo শান্তিগঞ্জের জয়সিদ্ধি-বসিউয়াখাউরী গ্রামে বিএনপির কর্মী সভা Logo জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর উপজেলার ৬ নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কমিটি গঠন Logo পরিবেশ নষ্ট করে কোন বাঁধ নির্মাণ হবেনা – পরিবেশ উপদেষ্টা Logo হাওরের জন্য সরকারের মাস্টার প্লান আছে- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান Logo জগন্নাথপুরে কমিউনিটি ক্লিনিক এর মাসিক সভা অনুষ্ঠিত Logo মাটিয়াইন ও টাঙুয়ার হাওর পরিদর্শন….. আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo নিরাপদ অভিবাসন ও বিদেশ-ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ শীর্ষক ইউনিয়ন কর্মশালা Logo ২০২৫–২৬ সেশনের জন্য ২নং পাটলী ইউনিয়ন জামায়াতের কমিটি ঘোষণা।

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ থেকে ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের নাস্তানাবুদ করেছে দাপুটে টাইগাররা.ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে টাইগারদের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়টি বিশ্ববাসীদের কাছে তো বটেই, বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে বড় চমক। স্পোর্টিং উইকেটে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের নাস্তানাবুদ করেছে দাপুটে স্বাগতিকরা।সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ইতিবাচক ছিল না। এ কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ সিরিজ জয়টি টাইগারদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সিরিজের ইতিবাচক দিকগুলো ধরে ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রে পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের পক্ষে ভালো কিছু করা সম্ভব।ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে দল নির্বাচন, অনুশীলন পদ্ধতি, লক্ষ্য নির্ধারণ, মাঠে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে জেতা এবং প্রয়োজনীয় মুহুর্তে স্নায়ু ধরে রাখা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব লক্ষ্যণীয় ছিল।

দল নির্বাচনে চমক

অভিজ্ঞদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গঠন করে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের নতুন যুগ শুরুর আভাস দিয়েছেন নির্বাচকরা। সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আলো ছড়ানো রনি তালুকদার, তানভীর ইসলাম, তৌহিদ হৃদয় এবং হাসান মাহমুদের মতো খেলোয়াড়রা দলে ডাক পেয়েছেন।২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখেই সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে স্কোয়াডটিকে গড়ে তোলা হচ্ছে বলে সিরিজের শুরু থেকে মনে হচ্ছিল। এ খেলোয়াড়দের যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হলে পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দারুণ একটি দল দাঁড় করানো সম্ভব। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়টি যেন সেই বার্তাই দিয়ে রাখল।

টি-টোয়েন্টি খেলার সঠিক প্রয়োগ

চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করে ইংল্যান্ড ১৫৬ রান সংগ্রহ করেছিল। রান তাড়ায় বাংলাদেশি ব্যাটাররা শুরু থেকেই ছিলেন দারুণ সাবলীল, যা এ সিরিজের অন্যতম বড় ইতিবাচক দিক। মার্ক উড, জফরা আর্চার, ক্রিস ওকস এবং ক্রিস জর্ডান নিয়ে গঠিত ইংল্যান্ডের বিশ্বমানের পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে টাইগাররা ছিলেন একইসঙ্গে আত্মবিশ্বাসী এবং আক্রমণাত্মক।এমনকি উইকেট হারানোর পরও ক্রিজে আসার পর মারমুখী ব্যাটিংয়ের ব্যাপারে বাংলাদেশি ব্যাটাররা দ্বিতীয়বার ভাবেননি। ঘণ্টায় ৯০ মাইলের বেশি গতিতে বোলিং করা উডের টানা ৪ বলে নাজমুল হোসেন শান্তর পরপর চার বাউন্ডারি হাঁকানোকে এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে ধরা যেতে পারে। বাংলাদেশি ব্যাটারদের কাছ থেকে টি-টোয়েন্টিতে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের ব্যাটিং দেখা যায়নি।

প্রয়োজনের সময় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া প্রত্যাবর্তন

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরেই প্রয়োজনের সময় ম্যাচের মোড় ঘোরাতে ব্যর্থ হওয়ায় হাতের মুঠোয় থাকা অনেক ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে এর বিপরীত চিত্র দেখা গেছে। চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে শেষ পাঁচ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং, মিরপুরে দ্বিতীয় ম্যাচে কঠিন চাপের মাঝেও শান্তর টিকে থাকা এবং একই ভেন্যুতে শেষ ম্যাচে পরপর দুই বলে মালান-বাটলারকে ফেরানো- সব মিলিয়ে এ সিরিজে অনেকবারই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে ফলাফল নিজেদের অনুকূলে এনেছে টাইগাররা।

দুর্দান্ত ফিল্ডিং

দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্ব নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছিলেন, টাইগারদের ফিল্ডিং দুর্দান্ত করা তার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। পুরো সিরিজেই বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিংয়ে হাথুরুসিংহের প্রতিশ্রুতির ছাপ লক্ষ্যণীয় ছিল। পুরো সিরিজে গ্রাউন্ড ফিল্ডিং এবং ক্যাচিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা সামগ্রিকভাবে উদ্যমী ছিলেন।

সিরিজের তৃতীয় ম্যাচের কথাই ধরা যাক। ১৫৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই উইকেট হারিয়ে ১০০ রান তুলা ইংল্যান্ড তখন সুবিধাজনক অবস্থানে। উইকেটে থাকা অধিনায়ক জস বাটলারকে সরাসরি থ্রোতে রান আউট করে ম্যাচের মোড় বাংলাদেশের দিকে ঘুরিয়ে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সেই ধাক্কা থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সফরকারীরা।পুরো সিরিজেই ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত প্রদর্শনী দেখিয়েছে টাইগাররা। সিরিজ শেষে ফিল্ডিংয়ে নিজেদের এশিয়ার সেরা দল হিসেবে দাবি করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে ফিল্ডিংয়ে আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন সাকিব।

পেসারদের প্রভাব

২০২১ সালে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডকে হারালেও উইকেট নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। তবে এবারের সিরিজের দুটি ম্যাচে উইকেট ছিল ব্যাটিংবান্ধব। তবে মজার বিষয় হলো, বাংলাদেশের পেসাররা দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। শুধু তাই না, বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ বরাবরই স্পিননির্ভর হলেও পেসাররা ভালো প্রভাব ফেলেছে।ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পুরো সিরিজে তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান এবং হাসান মাহমুদ দুর্দান্ত বোলিং করেন। এমনকি মিরপুরের উইকেট স্পিনারবান্ধব হলেও বোলিংয়ে দুই পাশ থেকেই পেসারদের ব্যবহার করেছেন, যা সচরাচর দেখা যায় না। প্রথম ম্যাচের ডেথ ওভারে হাসানের পারফরম্যান্স, দ্বিতীয় ম্যাচে বাটলারের বিপক্ষে তার উইকেট নেওয়া ডেলিভারি এবং তৃতীয় ম্যাচে তাসকিন ও মুস্তাফিজুরের ফল নির্ধারণী স্পেল- পেসারদের এমন প্রভাব অব্যহত থাকলে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ সমীহ জাগানিয়া হবে।

সাকিবের অধিনায়কত্ব

পুরো সিরিজেই অধিনায়ক হিসেবে সাকিব ছিলেন নিখুঁত। এমনকি বিভিন্ন মুহুর্তে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হননি এ অলরাউন্ডার। প্রথম দুই ওভারে খরুচে বোলিংয়ের পরও স্লগ ওভারে হাসানের ওপর আস্থা রেখেছিলেন সাকিব। ইনিংসের ১৭ এবং ১৯তম ওভারে মাত্র পাঁচ রান দিয়ে সাকিবের আস্থার প্রতিদান দেন এ ডানহাতি পেসার।দ্বিতীয় ম্যাচে রান তাড়ায় চাপের মুখে সাকিবের আগে মিরাজকে ব্যাটিংয়ে পাঠানো হয়েছিল। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দুই ছক্কায় মিরাজের ব্যাট থেকে আসা ২০ রান বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাছাড়া, ফিন্ডিং বিন্যাস এবং বোলিংয়ের সময়ে ফল নির্ধারণী পরিবর্তনের কারণে সাকিবের অধিনায়কত্ব প্রশংসার দাবিদার।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ।

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ থেকে ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা

আপডেট সময় ০৮:১৯:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের নাস্তানাবুদ করেছে দাপুটে টাইগাররা.ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে টাইগারদের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়টি বিশ্ববাসীদের কাছে তো বটেই, বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে বড় চমক। স্পোর্টিং উইকেটে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের নাস্তানাবুদ করেছে দাপুটে স্বাগতিকরা।সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ইতিবাচক ছিল না। এ কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ সিরিজ জয়টি টাইগারদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সিরিজের ইতিবাচক দিকগুলো ধরে ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রে পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের পক্ষে ভালো কিছু করা সম্ভব।ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে দল নির্বাচন, অনুশীলন পদ্ধতি, লক্ষ্য নির্ধারণ, মাঠে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে জেতা এবং প্রয়োজনীয় মুহুর্তে স্নায়ু ধরে রাখা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব লক্ষ্যণীয় ছিল।

দল নির্বাচনে চমক

অভিজ্ঞদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গঠন করে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের নতুন যুগ শুরুর আভাস দিয়েছেন নির্বাচকরা। সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আলো ছড়ানো রনি তালুকদার, তানভীর ইসলাম, তৌহিদ হৃদয় এবং হাসান মাহমুদের মতো খেলোয়াড়রা দলে ডাক পেয়েছেন।২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখেই সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে স্কোয়াডটিকে গড়ে তোলা হচ্ছে বলে সিরিজের শুরু থেকে মনে হচ্ছিল। এ খেলোয়াড়দের যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হলে পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দারুণ একটি দল দাঁড় করানো সম্ভব। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়টি যেন সেই বার্তাই দিয়ে রাখল।

টি-টোয়েন্টি খেলার সঠিক প্রয়োগ

চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করে ইংল্যান্ড ১৫৬ রান সংগ্রহ করেছিল। রান তাড়ায় বাংলাদেশি ব্যাটাররা শুরু থেকেই ছিলেন দারুণ সাবলীল, যা এ সিরিজের অন্যতম বড় ইতিবাচক দিক। মার্ক উড, জফরা আর্চার, ক্রিস ওকস এবং ক্রিস জর্ডান নিয়ে গঠিত ইংল্যান্ডের বিশ্বমানের পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে টাইগাররা ছিলেন একইসঙ্গে আত্মবিশ্বাসী এবং আক্রমণাত্মক।এমনকি উইকেট হারানোর পরও ক্রিজে আসার পর মারমুখী ব্যাটিংয়ের ব্যাপারে বাংলাদেশি ব্যাটাররা দ্বিতীয়বার ভাবেননি। ঘণ্টায় ৯০ মাইলের বেশি গতিতে বোলিং করা উডের টানা ৪ বলে নাজমুল হোসেন শান্তর পরপর চার বাউন্ডারি হাঁকানোকে এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে ধরা যেতে পারে। বাংলাদেশি ব্যাটারদের কাছ থেকে টি-টোয়েন্টিতে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের ব্যাটিং দেখা যায়নি।

প্রয়োজনের সময় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া প্রত্যাবর্তন

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরেই প্রয়োজনের সময় ম্যাচের মোড় ঘোরাতে ব্যর্থ হওয়ায় হাতের মুঠোয় থাকা অনেক ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে এর বিপরীত চিত্র দেখা গেছে। চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে শেষ পাঁচ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং, মিরপুরে দ্বিতীয় ম্যাচে কঠিন চাপের মাঝেও শান্তর টিকে থাকা এবং একই ভেন্যুতে শেষ ম্যাচে পরপর দুই বলে মালান-বাটলারকে ফেরানো- সব মিলিয়ে এ সিরিজে অনেকবারই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে ফলাফল নিজেদের অনুকূলে এনেছে টাইগাররা।

দুর্দান্ত ফিল্ডিং

দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্ব নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছিলেন, টাইগারদের ফিল্ডিং দুর্দান্ত করা তার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। পুরো সিরিজেই বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিংয়ে হাথুরুসিংহের প্রতিশ্রুতির ছাপ লক্ষ্যণীয় ছিল। পুরো সিরিজে গ্রাউন্ড ফিল্ডিং এবং ক্যাচিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা সামগ্রিকভাবে উদ্যমী ছিলেন।

সিরিজের তৃতীয় ম্যাচের কথাই ধরা যাক। ১৫৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই উইকেট হারিয়ে ১০০ রান তুলা ইংল্যান্ড তখন সুবিধাজনক অবস্থানে। উইকেটে থাকা অধিনায়ক জস বাটলারকে সরাসরি থ্রোতে রান আউট করে ম্যাচের মোড় বাংলাদেশের দিকে ঘুরিয়ে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সেই ধাক্কা থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সফরকারীরা।পুরো সিরিজেই ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত প্রদর্শনী দেখিয়েছে টাইগাররা। সিরিজ শেষে ফিল্ডিংয়ে নিজেদের এশিয়ার সেরা দল হিসেবে দাবি করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে ফিল্ডিংয়ে আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন সাকিব।

পেসারদের প্রভাব

২০২১ সালে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডকে হারালেও উইকেট নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। তবে এবারের সিরিজের দুটি ম্যাচে উইকেট ছিল ব্যাটিংবান্ধব। তবে মজার বিষয় হলো, বাংলাদেশের পেসাররা দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। শুধু তাই না, বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ বরাবরই স্পিননির্ভর হলেও পেসাররা ভালো প্রভাব ফেলেছে।ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পুরো সিরিজে তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান এবং হাসান মাহমুদ দুর্দান্ত বোলিং করেন। এমনকি মিরপুরের উইকেট স্পিনারবান্ধব হলেও বোলিংয়ে দুই পাশ থেকেই পেসারদের ব্যবহার করেছেন, যা সচরাচর দেখা যায় না। প্রথম ম্যাচের ডেথ ওভারে হাসানের পারফরম্যান্স, দ্বিতীয় ম্যাচে বাটলারের বিপক্ষে তার উইকেট নেওয়া ডেলিভারি এবং তৃতীয় ম্যাচে তাসকিন ও মুস্তাফিজুরের ফল নির্ধারণী স্পেল- পেসারদের এমন প্রভাব অব্যহত থাকলে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ সমীহ জাগানিয়া হবে।

সাকিবের অধিনায়কত্ব

পুরো সিরিজেই অধিনায়ক হিসেবে সাকিব ছিলেন নিখুঁত। এমনকি বিভিন্ন মুহুর্তে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হননি এ অলরাউন্ডার। প্রথম দুই ওভারে খরুচে বোলিংয়ের পরও স্লগ ওভারে হাসানের ওপর আস্থা রেখেছিলেন সাকিব। ইনিংসের ১৭ এবং ১৯তম ওভারে মাত্র পাঁচ রান দিয়ে সাকিবের আস্থার প্রতিদান দেন এ ডানহাতি পেসার।দ্বিতীয় ম্যাচে রান তাড়ায় চাপের মুখে সাকিবের আগে মিরাজকে ব্যাটিংয়ে পাঠানো হয়েছিল। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দুই ছক্কায় মিরাজের ব্যাট থেকে আসা ২০ রান বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাছাড়া, ফিন্ডিং বিন্যাস এবং বোলিংয়ের সময়ে ফল নির্ধারণী পরিবর্তনের কারণে সাকিবের অধিনায়কত্ব প্রশংসার দাবিদার।