ঢাকা , শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo জগন্নাথপুরে জুলাই বিপ্লব ২৪ ডটকম এর আত্ম প্রকাশ Logo শান্তিগঞ্জে ‘আব্দুন নূর চেয়ারম্যান স্মৃতি প্রাথমিক মেধা বৃত্তির পরীক্ষা কাল শনিবার (৩০ নভেম্বর) Logo শান্তিগঞ্জে হাওরের ১০০ বছর ও আমাদের করণীয় শীর্ষক কর্মশালা Logo মধ্যনগরে আওয়ামী লীগ নেতার দখল থেকে সরকারী ভুমি পুনরুদ্ধার Logo সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের রফিনগর গ্রামের সাজ্জাতুলের বাড়িঘরে হামলা,ভাংচুর লুটপাঠসহ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ভাংচুরের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত -নিহতদের স্মরণে দোয়ারাবাজারে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত Logo অন্তবর্তীকালীন সরকার পতনের ষড়যন্ত্র গোপন বৈঠকে থাকা ছাত্রলীগের ৩৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি Logo শান্তিগঞ্জে বিনামূল্যে গরু বিতরণের লক্ষ্যে অবহিতকরণ সভা ও প্রশিক্ষণ Logo দোয়ারাবাজারে সরকারি গাছ কর্তন।। জব্দ করলো প্রশাসন Logo শান্তিগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা 

‘বেশি স্মার্টনেস দেখাবেন না’, পুলিশ কর্মকর্তাকে সতর্ক করে হাইকোর্ট

মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল (২২) হত্যার ঘটনার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানাকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আদালতে বেশি স্মার্টনেস দেখাবেন না। একদম কারাগারে পাঠিয়ে দেবো।’তলবাদেশে হাজির হওয়ার পর এ সংক্রান্ত মামলার শুনানিকালে সোমবার (৩ এপ্রিল) বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন।শুনানির শুরুতে হত্যা মামলা ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, ‘আপনার মতো পুলিশ অফিসার দরকার। আপনি মাত্র ৪২ ঘণ্টায় হত্যা মামলা তদন্ত শেষ করলেন? এ সময়ের মধ্যে কখন সাক্ষী নিলেন, কখন ঘুমালেন, কখন খাওয়া দাওয়া করলেন? তা আমাদের দেখান। আর কতটি মামলা আপনি তদন্ত করেছেন, সেগুলো কত সময়ে শেষ করেছেন তার তালিকা দেন।’জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, ‘এটা আমার প্রথম তদন্ত।’ এরপর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, ‘চার্জশিট দ্রুত দিলেও সমস্যা। আবার দেরি করে দিলেও সমস্যা!’তখন আদালত বলেন, ‘তাহলে আমরা একটা মক ট্রায়াল করি। কত দ্রুত চার্জশিট দিতে পারেন, সেটা আমরা দেখতে চাই।’জবাবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, ‘সেটা দেখার এখতিয়ার আপনাদের আছে।’এক পর্যায়ে আদালত দাখিল করা নথিতে দেখতে পান মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার মামলার একটি তদন্ত প্রতিবেদন রেফারেন্স হিসেবে নথিতে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। পরে আদালত পুলিশ কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানাকে ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘কেন আপনি এটা দিলেন। আপনার কাছে তো রেফারেন্স চাওয়া হয়নি। বেশি স্মার্টনেস দেখাচ্ছেন। নিজেকে বেশি স্মার্ট মনে করেন? কোর্টের সঙ্গে বেশি স্মার্টনেস দেখাবেন না। একেবারে কারাগারে পাঠিয়ে দেবো।পরে আদালত এই মামলার শুনানি দুপুর ২টা পর্যন্ত মুলতবি করেন।প্রসঙ্গত, গত ১৪ মার্চ মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল (২২) হত্যার ঘটনায় মরদেহ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুবেল হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মাসুদ রানাকে কেস ডকেটসহ আদালতে হাজির হতে বলা হয়।এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।গত ১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘লাশ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র, ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।ওই প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, মরদেহ রাত দেড়টায় উদ্ধারের পর সুরতহাল করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে। এরপর মামলা, আসামি গ্রেপ্তার, ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মানচিত্র তৈরি, সাক্ষ্য গ্রহণসহ একে একে অন্তত ৯টি ধাপ পেরিয়ে হত্যা মামলার তদন্ত শেষ মাত্র ২২ ঘণ্টায়। পরবর্তী ২০ ঘণ্টার মধ্যে আসামিকে আদালতে হাজির, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায়সহ তদন্তের সব প্রক্রিয়া শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অর্থাৎ, মরদেহ উদ্ধার থেকে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে পুলিশের সময় লেগেছে মাত্র ৪২ ঘণ্টা।একটি খুনের মামলার তদন্তে এমন ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায়। দুই দিনের কম সময়ে খুনের মামলার তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দেওয়ার ঘটনায় অনেকে প্রশংসা করলেও প্রশ্ন তুলেছেন আইন ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, মামলাটির তদন্ত শেষ হয়েছে রকেটের চেয়েও দ্রুতগতিতে। এটা ব্যতিক্রমী ও আশ্চর্যজনক ঘটনা। পুলিশের এমন তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যেরাও।এর আগে ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের একটি হ্যাচারিতে খুন হন মো. রুবেল (২২)। পরদিন নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে সোহেল নামের একজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

জগন্নাথপুরে জুলাই বিপ্লব ২৪ ডটকম এর আত্ম প্রকাশ

‘বেশি স্মার্টনেস দেখাবেন না’, পুলিশ কর্মকর্তাকে সতর্ক করে হাইকোর্ট

আপডেট সময় ০১:৫১:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০২৩

মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল (২২) হত্যার ঘটনার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানাকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আদালতে বেশি স্মার্টনেস দেখাবেন না। একদম কারাগারে পাঠিয়ে দেবো।’তলবাদেশে হাজির হওয়ার পর এ সংক্রান্ত মামলার শুনানিকালে সোমবার (৩ এপ্রিল) বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন।শুনানির শুরুতে হত্যা মামলা ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, ‘আপনার মতো পুলিশ অফিসার দরকার। আপনি মাত্র ৪২ ঘণ্টায় হত্যা মামলা তদন্ত শেষ করলেন? এ সময়ের মধ্যে কখন সাক্ষী নিলেন, কখন ঘুমালেন, কখন খাওয়া দাওয়া করলেন? তা আমাদের দেখান। আর কতটি মামলা আপনি তদন্ত করেছেন, সেগুলো কত সময়ে শেষ করেছেন তার তালিকা দেন।’জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, ‘এটা আমার প্রথম তদন্ত।’ এরপর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, ‘চার্জশিট দ্রুত দিলেও সমস্যা। আবার দেরি করে দিলেও সমস্যা!’তখন আদালত বলেন, ‘তাহলে আমরা একটা মক ট্রায়াল করি। কত দ্রুত চার্জশিট দিতে পারেন, সেটা আমরা দেখতে চাই।’জবাবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, ‘সেটা দেখার এখতিয়ার আপনাদের আছে।’এক পর্যায়ে আদালত দাখিল করা নথিতে দেখতে পান মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার মামলার একটি তদন্ত প্রতিবেদন রেফারেন্স হিসেবে নথিতে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। পরে আদালত পুলিশ কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানাকে ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘কেন আপনি এটা দিলেন। আপনার কাছে তো রেফারেন্স চাওয়া হয়নি। বেশি স্মার্টনেস দেখাচ্ছেন। নিজেকে বেশি স্মার্ট মনে করেন? কোর্টের সঙ্গে বেশি স্মার্টনেস দেখাবেন না। একেবারে কারাগারে পাঠিয়ে দেবো।পরে আদালত এই মামলার শুনানি দুপুর ২টা পর্যন্ত মুলতবি করেন।প্রসঙ্গত, গত ১৪ মার্চ মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল (২২) হত্যার ঘটনায় মরদেহ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুবেল হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মাসুদ রানাকে কেস ডকেটসহ আদালতে হাজির হতে বলা হয়।এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।গত ১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘লাশ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র, ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।ওই প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, মরদেহ রাত দেড়টায় উদ্ধারের পর সুরতহাল করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে। এরপর মামলা, আসামি গ্রেপ্তার, ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মানচিত্র তৈরি, সাক্ষ্য গ্রহণসহ একে একে অন্তত ৯টি ধাপ পেরিয়ে হত্যা মামলার তদন্ত শেষ মাত্র ২২ ঘণ্টায়। পরবর্তী ২০ ঘণ্টার মধ্যে আসামিকে আদালতে হাজির, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায়সহ তদন্তের সব প্রক্রিয়া শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অর্থাৎ, মরদেহ উদ্ধার থেকে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে পুলিশের সময় লেগেছে মাত্র ৪২ ঘণ্টা।একটি খুনের মামলার তদন্তে এমন ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায়। দুই দিনের কম সময়ে খুনের মামলার তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দেওয়ার ঘটনায় অনেকে প্রশংসা করলেও প্রশ্ন তুলেছেন আইন ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, মামলাটির তদন্ত শেষ হয়েছে রকেটের চেয়েও দ্রুতগতিতে। এটা ব্যতিক্রমী ও আশ্চর্যজনক ঘটনা। পুলিশের এমন তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যেরাও।এর আগে ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের একটি হ্যাচারিতে খুন হন মো. রুবেল (২২)। পরদিন নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে সোহেল নামের একজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।