ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। Logo শান্তিগঞ্জের জয়সিদ্ধি-বসিউয়াখাউরী গ্রামে বিএনপির কর্মী সভা Logo জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর উপজেলার ৬ নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কমিটি গঠন Logo পরিবেশ নষ্ট করে কোন বাঁধ নির্মাণ হবেনা – পরিবেশ উপদেষ্টা Logo হাওরের জন্য সরকারের মাস্টার প্লান আছে- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান Logo জগন্নাথপুরে কমিউনিটি ক্লিনিক এর মাসিক সভা অনুষ্ঠিত Logo মাটিয়াইন ও টাঙুয়ার হাওর পরিদর্শন….. আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo নিরাপদ অভিবাসন ও বিদেশ-ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ শীর্ষক ইউনিয়ন কর্মশালা Logo ২০২৫–২৬ সেশনের জন্য ২নং পাটলী ইউনিয়ন জামায়াতের কমিটি ঘোষণা।

৩৩ বছর পর ঢাকা সফরে ফ্রান্সের কোনও প্রেসিডেন্ট, সুবিধা আদায়ের ‘সুযোগ’

দুই দিনের সফরে ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা আসছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এর মধ্য দিয়ে ৩৩ বছর পর ফ্রান্সের কোনও প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করছেন। ১৯৯০ সালে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরা ঢাকা সফর করেন। ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ঢাকা সফরে বাণিজ্যিক, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক বিষয় প্রাধান্য পেলেও সময় ও ভূ-রাজনৈতিক কারণে এটিকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, একদিকে এই সফরের মাধ্যমে ইউরোপের একটি শক্তিশালী দেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপনের যেমন একটি সম্ভাবনা তৈরি হবে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সুবিধা আদায়ের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষাসহ সবদিক থেকে (ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর) এই সফরটা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অন্যতম বাণিজ্যিক অংশীদার ফ্রান্স। অন্যদিকে ২০২১ সালে দুই দেশ একটি প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক সই করেছে।’

রাজনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়গুলো এবারের সফরে প্রাধান্য পেতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এয়ারবাস অনেক দিন থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। ফলে প্লেন ক্রয়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের একটি অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’

সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়

২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্রান্স সফরের সময়ে যৌথ বিবৃতিতে সম্পর্ক উন্নীত করার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। এবারের সফরে কৌশলগত উপাদান আছে—এমন কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এয়ারবাস থেকে একটি স্যাটেলাইট কেনার প্রস্তাবেও সাড়া দিতে পারে বাংলাদেশ এবং এ বিষয়ে একটি চুক্তিও হতে পারে। অন্যদিকে ফ্রান্সের সাহায্য সংস্থা এএফডি থেকে ২০ কোটি ডলার সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

অ্যারোনোটিকস খাতে ফ্রান্সের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ রয়েছে বাংলাদেশের এবং এয়ারবাস থেকে ১০টি বিমান ক্রয় করা নিয়েও দৃঢ় প্রতিশ্রুতি থাকতে পারে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জোরালো সহায়তার বিষয়ে ফ্রান্সকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ইন্দো-প্যাসিফিকে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশিদের স্কলারশিপসহ অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ইন্দো-প্যাসিফিকে আগ্রহ ফ্রান্সের

ইউরোপের বাইরে ফ্রান্সের বড় আগ্রহের জায়গা হচ্ছে আফ্রিকা। কারণ, তার বেশিরভাগ কলোনি ওই মহাদেশে অবস্থিত। এখন তারা ইন্দো-প্যাসিফিকে বড় ভূমিকা রাখতে চাইছে এবং এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে ইচ্ছুক।

এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ’ইন্দো-প্যাসিফিকের গুরুত্বের কারণে এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও বাড়াতে চায় ফ্রান্স। ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রীর প্যারিস সফরের কারণে বাংলাদেশের প্রতি তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।’

এবারের সফরের সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক কাঠামোগত পরিবর্তন হচ্ছে এবং ফ্রান্স একটি মাঝারি আকারের শক্তি হিসেবে ক্রমেই নিজের অবস্থান শক্ত করছে।’

বাংলাদেশের করণীয়

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থান এখন আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় ভালো এবং এর প্রবৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বমুখী। ফলে বিভিন্ন দেশ এখানে বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে চায়।

এ বিষয়ে মো. শহীদুল হক বলেন, ‘অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাংলাদেশের একটি বড় অস্ত্র এবং এটি বিচক্ষণতার সঙ্গে ব্যবহার করা দরকার।’

জাতিসংঘে ‘ভেটো’ দেওয়ার ক্ষমতার অধিকারী ফ্রান্স এবং একই সঙ্গে তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সবচেয়ে শক্তিশালী দুটি রাষ্ট্রের একটি। ফলে রাজনৈতিকভাবে ফ্রান্সের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাংলাদেশকে হয়তো সুবিধা এনে দিতে পারে বলে মনে করেন সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ।

৩৩ বছর পর ঢাকা সফরে ফ্রান্সের কোনও প্রেসিডেন্ট, সুবিধা আদায়ের ‘সুযোগ’

আপডেট সময় ১১:১৭:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দুই দিনের সফরে ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা আসছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এর মধ্য দিয়ে ৩৩ বছর পর ফ্রান্সের কোনও প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করছেন। ১৯৯০ সালে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরা ঢাকা সফর করেন। ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ঢাকা সফরে বাণিজ্যিক, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক বিষয় প্রাধান্য পেলেও সময় ও ভূ-রাজনৈতিক কারণে এটিকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, একদিকে এই সফরের মাধ্যমে ইউরোপের একটি শক্তিশালী দেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপনের যেমন একটি সম্ভাবনা তৈরি হবে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সুবিধা আদায়ের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষাসহ সবদিক থেকে (ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর) এই সফরটা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অন্যতম বাণিজ্যিক অংশীদার ফ্রান্স। অন্যদিকে ২০২১ সালে দুই দেশ একটি প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক সই করেছে।’

রাজনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়গুলো এবারের সফরে প্রাধান্য পেতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এয়ারবাস অনেক দিন থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। ফলে প্লেন ক্রয়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের একটি অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’

সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়

২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্রান্স সফরের সময়ে যৌথ বিবৃতিতে সম্পর্ক উন্নীত করার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। এবারের সফরে কৌশলগত উপাদান আছে—এমন কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এয়ারবাস থেকে একটি স্যাটেলাইট কেনার প্রস্তাবেও সাড়া দিতে পারে বাংলাদেশ এবং এ বিষয়ে একটি চুক্তিও হতে পারে। অন্যদিকে ফ্রান্সের সাহায্য সংস্থা এএফডি থেকে ২০ কোটি ডলার সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

অ্যারোনোটিকস খাতে ফ্রান্সের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ রয়েছে বাংলাদেশের এবং এয়ারবাস থেকে ১০টি বিমান ক্রয় করা নিয়েও দৃঢ় প্রতিশ্রুতি থাকতে পারে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জোরালো সহায়তার বিষয়ে ফ্রান্সকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ইন্দো-প্যাসিফিকে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশিদের স্কলারশিপসহ অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ইন্দো-প্যাসিফিকে আগ্রহ ফ্রান্সের

ইউরোপের বাইরে ফ্রান্সের বড় আগ্রহের জায়গা হচ্ছে আফ্রিকা। কারণ, তার বেশিরভাগ কলোনি ওই মহাদেশে অবস্থিত। এখন তারা ইন্দো-প্যাসিফিকে বড় ভূমিকা রাখতে চাইছে এবং এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে ইচ্ছুক।

এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ’ইন্দো-প্যাসিফিকের গুরুত্বের কারণে এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও বাড়াতে চায় ফ্রান্স। ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রীর প্যারিস সফরের কারণে বাংলাদেশের প্রতি তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।’

এবারের সফরের সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক কাঠামোগত পরিবর্তন হচ্ছে এবং ফ্রান্স একটি মাঝারি আকারের শক্তি হিসেবে ক্রমেই নিজের অবস্থান শক্ত করছে।’

বাংলাদেশের করণীয়

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থান এখন আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় ভালো এবং এর প্রবৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বমুখী। ফলে বিভিন্ন দেশ এখানে বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে চায়।

এ বিষয়ে মো. শহীদুল হক বলেন, ‘অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাংলাদেশের একটি বড় অস্ত্র এবং এটি বিচক্ষণতার সঙ্গে ব্যবহার করা দরকার।’

জাতিসংঘে ‘ভেটো’ দেওয়ার ক্ষমতার অধিকারী ফ্রান্স এবং একই সঙ্গে তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সবচেয়ে শক্তিশালী দুটি রাষ্ট্রের একটি। ফলে রাজনৈতিকভাবে ফ্রান্সের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাংলাদেশকে হয়তো সুবিধা এনে দিতে পারে বলে মনে করেন সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব।