ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের রফিনগর গ্রামের সাজ্জাতুলের বাড়িঘরে হামলা,ভাংচুর লুটপাঠসহ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ভাংচুরের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত -নিহতদের স্মরণে দোয়ারাবাজারে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত Logo অন্তবর্তীকালীন সরকার পতনের ষড়যন্ত্র গোপন বৈঠকে থাকা ছাত্রলীগের ৩৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি Logo শান্তিগঞ্জে বিনামূল্যে গরু বিতরণের লক্ষ্যে অবহিতকরণ সভা ও প্রশিক্ষণ Logo দোয়ারাবাজারে সরকারি গাছ কর্তন।। জব্দ করলো প্রশাসন Logo শান্তিগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা  Logo ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে তাহিরপুরে’স্মরণ সভা’ Logo ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে শান্তিগঞ্জে ‘স্মরণ সভা’ Logo চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ বাম্পার ফলনে শান্তিগঞ্জের কৃষকের মুখে হাসি Logo জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅদ্ভুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ছাতকে স্মরণ সভা

সংঘর্ষ-হামলা-আগুনে রণক্ষেত্র রাবি এলাকায় বিজিবির টহল

বাস শ্রমিকদের সঙ্গে বচসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ-হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনা চার ঘণ্টা পর থেমেছে। রাতে থমথমে পরিস্থিতিতে এলাকাজড়ুে বিজিবি মোতায়েন রয়েছে; উত্তেজনা ছড়িয়েছে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে, বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ক্লাস ও পরীক্ষা।শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পরপর শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে। স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষে অন্তত ২০০ জন আহত হয়েছে।এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। সংঘর্ষের সময় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেইটের পাশে সীমানা প্রাচীর লাগোয়া বেশ কয়েকটি দোকানপাটে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিছু দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।এসময় আগুন দেওয়া হয়েছে বিনোদপুর গেইট সংলগ্ন পুলিশ বক্সেও। সেখানে পুলিশের একটিসহ মোট তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অর্ধ শতাধিক কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।     রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে’ রোব ও সোমবারের সব পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে।মতিহার থানার ওসি হাফিজুর রহমান হাফিজ রাতে সাংবাদিকদের বলেন, “এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত রয়েছে। সবকিছু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসা হয়েছে।”শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার বগুড়া থেকে মোহাম্মদ পরিবহনের বাসে করে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ। বাসে সিটে বসা এবং ভাড়াকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।সন্ধ্যায় বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেইটে এলে আবারও পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর বচসা হয়। তখন স্থানীয় এক দোকানদার এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং পরিবহন শ্রমিককে মারধর করেন। স্থানীয় দোকানদাররা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গেও কথা কাটাকাটি হয় শিক্ষার্থীদের।একপর্যায়ে স্থানীয় জনতা ও দোকানদারদাররা এক জোট হয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। তখন শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর গেইট দিয়ে ক্যাম্পাসে ভিতরে চলে যায়। এ সময় থেকেই ওই পথে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।স্থানীয় জনতা তখন ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় কিছু ভাঙচুরও করা হয় এবং কয়েক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এ সময় গোটা ক্যাম্পাসেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।     তার কিছু পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী জোট বেঁধে বিনোদপুর গেইট দিয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে এসে অবরোধ করে এবং তারা বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা স্থানীয় দোকানদার ও জনতাকে ধাওয়া দেয় এবং ইট নিক্ষেপ করতে থাকে। স্থানীয়রাও তখন পাল্টা জবাব দেয়।একপর্যায়ে সীমানা প্রাচীর লাগোয়া বেশ কয়েকটি দোকানপাটে এবং বিনোদপুর গেইট সংলগ্ন পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। এর পরই মূলত গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। তখন পুলিশ এসে রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।টানা প্রায় তিন ঘণ্টা এই অবস্থা চলার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ বিনোদপুর বাজার এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়। তখন স্থানীয়রা বাজার ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়। অপরদিকে শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর গেইট ভিতরে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। কিন্তু উত্তেজনা ছিল।মূলত এই সময়েই আহতের ঘটনা ঘটে। অনেকেই মাথায় আঘাত পান। অনেকের চোখে ইটের আঘাত লাগে। শরীরের নানাস্থানে জখম হন তারা। তাদের কাউকে কাউকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহত অনেকে কাতরাতে থাকেন। এগুলো দেখে শিক্ষার্থীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন।তখন আহতদের দ্রুততার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ও অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।এর মধ্যেই রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। মেয়র এসে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে শান্ত করার চেষ্টা করেন।পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকসহ অন্যরা। রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবার বিনোদপুর গেইট দিয়ে ক্যাম্পাসে থেকে বেরিয়ে পড়ে। তারা মহাসড়কে এসে ফের বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে বিনোদপুর বাজারে গিয়ে দোকানপাটে হামলা চালায় তারা। কয়েকটি দোকানে আগুনও দেওয়া হয়। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় আবার পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।তখন পুলিশ আবার কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজপথ ছেড়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। তারা সেখানে পরিবহন শ্রমিক ও স্থানীয়দের বিচার দাবি করে স্লোগান দিতে থাকে। কিছু শিক্ষার্থী হলে ফিরে যায়। হামলা সংঘর্ষের মাঝখানেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, “উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে রোব ও সোমবারের সব ধরনের পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।”এই সংঘর্ষের পর দেড়শ জনের অধিক আহত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছে বলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাহিদুল ইসলাম জানান।রাত ১১টার দিকে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এখন পর্যন্ত দেড়শ জনের অধিক আহত চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৪৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।“এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি আব্দুস সালাম রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তুচ্ছ কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।”

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের রফিনগর গ্রামের সাজ্জাতুলের বাড়িঘরে হামলা,ভাংচুর লুটপাঠসহ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ভাংচুরের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন

সংঘর্ষ-হামলা-আগুনে রণক্ষেত্র রাবি এলাকায় বিজিবির টহল

আপডেট সময় ০৭:১৩:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩

বাস শ্রমিকদের সঙ্গে বচসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ-হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনা চার ঘণ্টা পর থেমেছে। রাতে থমথমে পরিস্থিতিতে এলাকাজড়ুে বিজিবি মোতায়েন রয়েছে; উত্তেজনা ছড়িয়েছে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে, বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ক্লাস ও পরীক্ষা।শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পরপর শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে। স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষে অন্তত ২০০ জন আহত হয়েছে।এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। সংঘর্ষের সময় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেইটের পাশে সীমানা প্রাচীর লাগোয়া বেশ কয়েকটি দোকানপাটে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিছু দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।এসময় আগুন দেওয়া হয়েছে বিনোদপুর গেইট সংলগ্ন পুলিশ বক্সেও। সেখানে পুলিশের একটিসহ মোট তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অর্ধ শতাধিক কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।     রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে’ রোব ও সোমবারের সব পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে।মতিহার থানার ওসি হাফিজুর রহমান হাফিজ রাতে সাংবাদিকদের বলেন, “এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত রয়েছে। সবকিছু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসা হয়েছে।”শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার বগুড়া থেকে মোহাম্মদ পরিবহনের বাসে করে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ। বাসে সিটে বসা এবং ভাড়াকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।সন্ধ্যায় বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেইটে এলে আবারও পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর বচসা হয়। তখন স্থানীয় এক দোকানদার এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং পরিবহন শ্রমিককে মারধর করেন। স্থানীয় দোকানদাররা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গেও কথা কাটাকাটি হয় শিক্ষার্থীদের।একপর্যায়ে স্থানীয় জনতা ও দোকানদারদাররা এক জোট হয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। তখন শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর গেইট দিয়ে ক্যাম্পাসে ভিতরে চলে যায়। এ সময় থেকেই ওই পথে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।স্থানীয় জনতা তখন ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় কিছু ভাঙচুরও করা হয় এবং কয়েক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এ সময় গোটা ক্যাম্পাসেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।     তার কিছু পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী জোট বেঁধে বিনোদপুর গেইট দিয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে এসে অবরোধ করে এবং তারা বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা স্থানীয় দোকানদার ও জনতাকে ধাওয়া দেয় এবং ইট নিক্ষেপ করতে থাকে। স্থানীয়রাও তখন পাল্টা জবাব দেয়।একপর্যায়ে সীমানা প্রাচীর লাগোয়া বেশ কয়েকটি দোকানপাটে এবং বিনোদপুর গেইট সংলগ্ন পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। এর পরই মূলত গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। তখন পুলিশ এসে রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।টানা প্রায় তিন ঘণ্টা এই অবস্থা চলার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ বিনোদপুর বাজার এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়। তখন স্থানীয়রা বাজার ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়। অপরদিকে শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর গেইট ভিতরে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। কিন্তু উত্তেজনা ছিল।মূলত এই সময়েই আহতের ঘটনা ঘটে। অনেকেই মাথায় আঘাত পান। অনেকের চোখে ইটের আঘাত লাগে। শরীরের নানাস্থানে জখম হন তারা। তাদের কাউকে কাউকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহত অনেকে কাতরাতে থাকেন। এগুলো দেখে শিক্ষার্থীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন।তখন আহতদের দ্রুততার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ও অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।এর মধ্যেই রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। মেয়র এসে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে শান্ত করার চেষ্টা করেন।পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকসহ অন্যরা। রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবার বিনোদপুর গেইট দিয়ে ক্যাম্পাসে থেকে বেরিয়ে পড়ে। তারা মহাসড়কে এসে ফের বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে বিনোদপুর বাজারে গিয়ে দোকানপাটে হামলা চালায় তারা। কয়েকটি দোকানে আগুনও দেওয়া হয়। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় আবার পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।তখন পুলিশ আবার কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজপথ ছেড়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। তারা সেখানে পরিবহন শ্রমিক ও স্থানীয়দের বিচার দাবি করে স্লোগান দিতে থাকে। কিছু শিক্ষার্থী হলে ফিরে যায়। হামলা সংঘর্ষের মাঝখানেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, “উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে রোব ও সোমবারের সব ধরনের পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।”এই সংঘর্ষের পর দেড়শ জনের অধিক আহত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছে বলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাহিদুল ইসলাম জানান।রাত ১১টার দিকে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এখন পর্যন্ত দেড়শ জনের অধিক আহত চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৪৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।“এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি আব্দুস সালাম রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তুচ্ছ কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।”