ঢাকা , বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo নারী শিক্ষার উন্নয়ন সরকার কাজ করে যাচ্ছে –পরিচালক মহিলা অধিদপ্তর Logo বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ভাটিপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের প্রস্তুতি সভা Logo শান্তিগঞ্জে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ Logo সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন Logo শান্তিগঞ্জে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করতে চাই কাউন্সিল ও কর্মী সম্মেলনে সৈয়দ তালহা আলম Logo শান্তিগঞ্জে নানা আয়োজনে জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন Logo দোয়ারাবাজারে নারীসহ তিন ইয়াবা কারবারি আটক Logo জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে শান্তিগঞ্জে র‍্যালী ও আলোচনা সভা Logo তাহিরপুরে যুব দিবস উদযাপন Logo সকল গুম খুনের বিচার করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে: মাও তোফায়েল আহমদ খাঁন

সুদখোরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ সাবেক চেয়ারম্যানের আত্মহত্যা

২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে বিজয় লাভ করে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৩নং রাজানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আরোহন করেছিলেন তিনি। এলাকার লোকমুখে তখন নতুন করে সৌম্য চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। এলাকার জনসাধারণের নিকট তিনি ছিলেন একজন সহজ সরল সাদা মনের মানুষ। সৌম্য চৌধুরীর পূর্ব পুরুষগণ ছিলেন জমিদার। সেই জমিদারি রেওয়াজ, চিহ্ন আজও তাদের আচরন, তাদের বাড়ি ঘর সাক্ষী বহন করে।

গত শনিবার দিবাগত রাত  ২টার দিকে রাজানগর ইউনিয়নবাসীর প্রিয় সাবেক চেয়ারম্যান সৌম্য চৌধুরীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তিনি তখন মৌলভীবাজার অবস্থান করছিলেন। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকি’সাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জানা যায়, শনিবার রাত ১০ টার দিকে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কের ফুলবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। এদিকে মৃত্যুর একদিন আগে সৌম্য চৌধুরী তার ফেসবুক আইডি থেকে স্থানীয় কয়েক দাদন ব্যবসায়ীর টাকা ও মামলার চাপের বিষয়ে একটি পোস্ট দেন। স্ট্যাটাসে এ পরিণতির জন্য ওই দাদন ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন তিনি।সৌম্য চৌধুরীর মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা দাদন ব্যবসায়ীদের শাস্তি দাবীতে সরব হয়ে ওঠেন।

সৌম্য চৌধুরীর স্ত্রী ইলা চৌধুরী বলেন, স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ী হবিবুর রহমান হবু, জসিম উদ্দিন , চিনুঠাকুর, সজল দাস, অসীত দেবনাথ, পুতুল আমাদের সাজানো-গোছানো সংসার তছনছ করে দিয়েছে। সুদের টাকার জন্য তারা আমার স্বামীর জীবন বিষিয়ে তুলেছিল। হবু, জসিম তাদের গুন্ডাবাহিনী নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি-ধমকি দিয়ে আমার স্বামীর কাছ থেকে ব্যংকের চেক নিয়ে যায়। বাড়ির জায়গা বিক্রি করে দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার মাধ্যমে তাদের টাকা পরিশোধ করেন আমার স্বামী।

তারা আদালতে চেকের মামলা দেয়। মামলায় আমার স্বামীর সাজা হয়। ১০/১২ দিন আগে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। স্বামীর মৃত্যুর জন্য হবিবুর রহমান হবু, জসিম উদ্দিনকে দায়ী করে ইলা চৌধুরী বলেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় তারা আমাদের হুমকি দিচ্ছিল। দিরাই গার্লস স্কুল রোডের বাসিন্দা হবিবুর রহমান হবু বলেন, আমার বিষয়টি বসে আলোচনার মাধ্যমে নিস্পত্তি হয়েছে। আমার ১৯ লাখ টাকা মধ্যে ১ লাখ টাকা পাওনা ছিল। দিরাই দোওজ গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, আমার অরিজিনাল ১৯ লাখ টাকা পাওনা ছিল। আমি ধান কেনার জন্য দিয়েছিলাম। পরে লাভসহ ২৯লাখ টাকা পাওনা বাবদ মামলা দায়ের করি। কমলগঞ্জ থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, শনিবার রাতে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কের ফুলবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। লাশ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

সৌম্য চৌধুরী তার ফেইসবুক পেইজে আরো লিখেছেন যাদের কাছে এই লিখা পাঠাচ্ছি, আপনাদের কাছে আমার মিনতি, আপনারা জুলুমদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন। সৌম্য চৌধুরী শেষ কথাটি লিখেছেন, আমি হয়তো দেখবো না কিন্তু সমাজ আপনাদের কৃতিত্ব দেখবে। বিদায়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন

নারী শিক্ষার উন্নয়ন সরকার কাজ করে যাচ্ছে –পরিচালক মহিলা অধিদপ্তর

সুদখোরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ সাবেক চেয়ারম্যানের আত্মহত্যা

আপডেট সময় ১১:৩৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩

২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে বিজয় লাভ করে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৩নং রাজানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আরোহন করেছিলেন তিনি। এলাকার লোকমুখে তখন নতুন করে সৌম্য চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। এলাকার জনসাধারণের নিকট তিনি ছিলেন একজন সহজ সরল সাদা মনের মানুষ। সৌম্য চৌধুরীর পূর্ব পুরুষগণ ছিলেন জমিদার। সেই জমিদারি রেওয়াজ, চিহ্ন আজও তাদের আচরন, তাদের বাড়ি ঘর সাক্ষী বহন করে।

গত শনিবার দিবাগত রাত  ২টার দিকে রাজানগর ইউনিয়নবাসীর প্রিয় সাবেক চেয়ারম্যান সৌম্য চৌধুরীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তিনি তখন মৌলভীবাজার অবস্থান করছিলেন। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকি’সাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জানা যায়, শনিবার রাত ১০ টার দিকে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কের ফুলবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। এদিকে মৃত্যুর একদিন আগে সৌম্য চৌধুরী তার ফেসবুক আইডি থেকে স্থানীয় কয়েক দাদন ব্যবসায়ীর টাকা ও মামলার চাপের বিষয়ে একটি পোস্ট দেন। স্ট্যাটাসে এ পরিণতির জন্য ওই দাদন ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন তিনি।সৌম্য চৌধুরীর মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা দাদন ব্যবসায়ীদের শাস্তি দাবীতে সরব হয়ে ওঠেন।

সৌম্য চৌধুরীর স্ত্রী ইলা চৌধুরী বলেন, স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ী হবিবুর রহমান হবু, জসিম উদ্দিন , চিনুঠাকুর, সজল দাস, অসীত দেবনাথ, পুতুল আমাদের সাজানো-গোছানো সংসার তছনছ করে দিয়েছে। সুদের টাকার জন্য তারা আমার স্বামীর জীবন বিষিয়ে তুলেছিল। হবু, জসিম তাদের গুন্ডাবাহিনী নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি-ধমকি দিয়ে আমার স্বামীর কাছ থেকে ব্যংকের চেক নিয়ে যায়। বাড়ির জায়গা বিক্রি করে দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার মাধ্যমে তাদের টাকা পরিশোধ করেন আমার স্বামী।

তারা আদালতে চেকের মামলা দেয়। মামলায় আমার স্বামীর সাজা হয়। ১০/১২ দিন আগে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। স্বামীর মৃত্যুর জন্য হবিবুর রহমান হবু, জসিম উদ্দিনকে দায়ী করে ইলা চৌধুরী বলেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় তারা আমাদের হুমকি দিচ্ছিল। দিরাই গার্লস স্কুল রোডের বাসিন্দা হবিবুর রহমান হবু বলেন, আমার বিষয়টি বসে আলোচনার মাধ্যমে নিস্পত্তি হয়েছে। আমার ১৯ লাখ টাকা মধ্যে ১ লাখ টাকা পাওনা ছিল। দিরাই দোওজ গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, আমার অরিজিনাল ১৯ লাখ টাকা পাওনা ছিল। আমি ধান কেনার জন্য দিয়েছিলাম। পরে লাভসহ ২৯লাখ টাকা পাওনা বাবদ মামলা দায়ের করি। কমলগঞ্জ থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, শনিবার রাতে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কের ফুলবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। লাশ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

সৌম্য চৌধুরী তার ফেইসবুক পেইজে আরো লিখেছেন যাদের কাছে এই লিখা পাঠাচ্ছি, আপনাদের কাছে আমার মিনতি, আপনারা জুলুমদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন। সৌম্য চৌধুরী শেষ কথাটি লিখেছেন, আমি হয়তো দেখবো না কিন্তু সমাজ আপনাদের কৃতিত্ব দেখবে। বিদায়।