স্টাফ রিপোর্টার:
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের সহ-সভাপতি মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরী (৫২) তিন দিন নিখোঁজের পর নিহত হওয়ার ঘটনায় খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসী।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত শান্তিগঞ্জ উপজেলার বড়মোহা দারুল উলুম ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার শত শত মানুষ অংশ নেন। এসময় আন্দোলনকারীরা রাস্তার দু’পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
দুই ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির কারণে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অবরোধ চলাকালে আন্দোলনকারীরা “মুশতাক গাজিনগরী কবরে, খুনি কেন বাইরে?”, “এক দফা এক দাবি—খুনিদের ফাঁসি চাই” স্লোগানে সড়ক মুখরিত করে তোলে।
সুনামগঞ্জ-৩ আসনের জমিয়ত প্রার্থী মাওলানা হাম্মাদ আহমেদ গাজিনগরী বলেন, “মুশতাক গাজিনগরী একজন সুপরিচিত আলেম। তাকে গুম করে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমেছে। পুলিশ বারবার আশ্বাস দিলেও খুনিদের গ্রেফতার করছে না। আগামীকাল সূর্যোদয়ের আগে খুনিদের গ্রেফতার না করা হলে দেশব্যাপী গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তৈয়বুর রহমান চৌধুরী বলেন, “মুশতাক গাজিনগরীকে গুমের পর হত্যা করে নদীতে ফেলা হয়েছে। প্রশাসন খুনিদের ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। আসলে পুলিশ গড়িমসি করছে। খুনিরা প্রশাসনের নজরেই আছে, কিন্তু তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।”
পাথারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা খুনিদের ধরতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, কিন্তু পুলিশ তা করতে পারেনি। এ দেশে একজন আলেমও নিরাপদ নয়।”
লন্ডন জমিয়তের প্রচার সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের জমিয়ত প্রার্থী মাওলানা মোখলেছুর রহমান চৌধুরী বলেন, “আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। একজন নিরপরাধ আলেমকে খুন করা হলো অথচ পুলিশ খুনিদের গ্রেফতার করছে না। খুনিদের বিচার না হলে আইনশৃঙ্খলা অবনতির দিকে যাবে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান নিরপরাধ মানুষ হত্যার জন্য হয়নি। খুনিদের সনাক্ত করা না হলে ছাড় দেওয়া হবে না।”