ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ বাম্পার ফলনে শান্তিগঞ্জের কৃষকের মুখে হাসি Logo জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅদ্ভুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ছাতকে স্মরণ সভা Logo বালি মহালে ইজারা পদ্বতি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন Logo ছাতকে আওয়ামিলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার Logo পিলখানা হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। Logo শান্তিগঞ্জের জয়সিদ্ধি-বসিউয়াখাউরী গ্রামে বিএনপির কর্মী সভা Logo জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর উপজেলার ৬ নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কমিটি গঠন Logo পরিবেশ নষ্ট করে কোন বাঁধ নির্মাণ হবেনা – পরিবেশ উপদেষ্টা

তিস্তায় পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বেড়েছে। তিস্তার দোয়ানী ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এতে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। বন্যার আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। প্রবল পানির চাপে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকেল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার তিস্তা চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। চরের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানিতে তলিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে দুপুর ১২টায় পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। পরে বিকেল ৩টায় ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এর আগে ভোর ৬টায় তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি।

নদীর পানি বেড়ে পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখসুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্নার পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ।

তিস্তায় আবারো পানি বৃদ্ধি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত বন্যার আশঙ্কা

পানি ঘরবাড়িতে প্রবেশ করায় অনেকেই উঁচু স্থান ও বাঁধের রাস্তায় অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। চরগুলোতে নলকূপ ও টয়লেটে পানি উঠে পড়ায় বিশুদ্ধ পানি সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারি ইউনিয়নের ছয়ানী গ্রামের আয়নাল হক বলেন, ‘সকাল থেকে নদীর পানি বেড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। আমরা অনেক কষ্টে চলাচল করছি। রাতে যদি পানি বাড়ে তাহলে আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই পানি হাঁটুসমান। নদীর পানি বাড়ছে আর বাড়ছে। রাতে কী হবে জানি না।’

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় দুই পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। নদীপাড়ের মানুষ গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে আছেন।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। ফলে আরও বাড়বে পানি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক বন্যার খোঁজ রাখছি। দুর্যোগ মোকাবিলায় ৪৫০ মেট্রিক টন চাল ও সাত লাখ টাকা বরাদ্দ আছে। সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং পিআইওর মাধ্যমে ১১০ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। আবারও তালিকা করে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ বাম্পার ফলনে শান্তিগঞ্জের কৃষকের মুখে হাসি

তিস্তায় পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

আপডেট সময় ০৭:১৮:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বেড়েছে। তিস্তার দোয়ানী ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এতে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। বন্যার আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। প্রবল পানির চাপে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকেল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার তিস্তা চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। চরের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানিতে তলিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে দুপুর ১২টায় পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। পরে বিকেল ৩টায় ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এর আগে ভোর ৬টায় তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি।

নদীর পানি বেড়ে পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখসুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্নার পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ।

তিস্তায় আবারো পানি বৃদ্ধি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত বন্যার আশঙ্কা

পানি ঘরবাড়িতে প্রবেশ করায় অনেকেই উঁচু স্থান ও বাঁধের রাস্তায় অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। চরগুলোতে নলকূপ ও টয়লেটে পানি উঠে পড়ায় বিশুদ্ধ পানি সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারি ইউনিয়নের ছয়ানী গ্রামের আয়নাল হক বলেন, ‘সকাল থেকে নদীর পানি বেড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। আমরা অনেক কষ্টে চলাচল করছি। রাতে যদি পানি বাড়ে তাহলে আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই পানি হাঁটুসমান। নদীর পানি বাড়ছে আর বাড়ছে। রাতে কী হবে জানি না।’

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় দুই পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। নদীপাড়ের মানুষ গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে আছেন।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। ফলে আরও বাড়বে পানি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক বন্যার খোঁজ রাখছি। দুর্যোগ মোকাবিলায় ৪৫০ মেট্রিক টন চাল ও সাত লাখ টাকা বরাদ্দ আছে। সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং পিআইওর মাধ্যমে ১১০ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। আবারও তালিকা করে বরাদ্দ দেওয়া হবে।