ঢাকা , সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo দিরাইয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে কোন অনিয়ম দালালির সাথে জড়িতদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে Logo ল্যাব সংস্কারের টাকা আত্মসা শাল্লায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তুলে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোব! Logo শান্তিগঞ্জে জামায়াতের উদ্যোগে সিরাত মাহফিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান Logo অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি নয়, বিধবা কার্ড বাতিলের অভিযোগ Logo বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় সীমান্তিকের উদ্যাগে বিশ্ব গর্ভনিরোধ দিবস উদযাপন Logo সিলেটে পাথরবাহী ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে ঔষধ কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজার নিহত Logo পাথারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃআলী নেওয়াজের ইন্তেকাল Logo শান্তিগঞ্জে শিক্ষার মানোন্নয়নে একত্রে তিনটি বিদ্যালয়ের অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী আর নেই Logo দুর্যোগ ব্যবস্থা কমিটির সভা

তিস্তায় পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বেড়েছে। তিস্তার দোয়ানী ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এতে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। বন্যার আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। প্রবল পানির চাপে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকেল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার তিস্তা চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। চরের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানিতে তলিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে দুপুর ১২টায় পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। পরে বিকেল ৩টায় ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এর আগে ভোর ৬টায় তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি।

নদীর পানি বেড়ে পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখসুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্নার পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ।

তিস্তায় আবারো পানি বৃদ্ধি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত বন্যার আশঙ্কা

পানি ঘরবাড়িতে প্রবেশ করায় অনেকেই উঁচু স্থান ও বাঁধের রাস্তায় অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। চরগুলোতে নলকূপ ও টয়লেটে পানি উঠে পড়ায় বিশুদ্ধ পানি সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারি ইউনিয়নের ছয়ানী গ্রামের আয়নাল হক বলেন, ‘সকাল থেকে নদীর পানি বেড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। আমরা অনেক কষ্টে চলাচল করছি। রাতে যদি পানি বাড়ে তাহলে আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই পানি হাঁটুসমান। নদীর পানি বাড়ছে আর বাড়ছে। রাতে কী হবে জানি না।’

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় দুই পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। নদীপাড়ের মানুষ গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে আছেন।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। ফলে আরও বাড়বে পানি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক বন্যার খোঁজ রাখছি। দুর্যোগ মোকাবিলায় ৪৫০ মেট্রিক টন চাল ও সাত লাখ টাকা বরাদ্দ আছে। সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং পিআইওর মাধ্যমে ১১০ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। আবারও তালিকা করে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

দিরাইয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে কোন অনিয়ম দালালির সাথে জড়িতদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে

তিস্তায় পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

আপডেট সময় ০৭:১৮:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বেড়েছে। তিস্তার দোয়ানী ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এতে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। বন্যার আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। প্রবল পানির চাপে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকেল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার তিস্তা চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। চরের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানিতে তলিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে দুপুর ১২টায় পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। পরে বিকেল ৩টায় ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এর আগে ভোর ৬টায় তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি।

নদীর পানি বেড়ে পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখসুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্নার পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ।

তিস্তায় আবারো পানি বৃদ্ধি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত বন্যার আশঙ্কা

পানি ঘরবাড়িতে প্রবেশ করায় অনেকেই উঁচু স্থান ও বাঁধের রাস্তায় অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। চরগুলোতে নলকূপ ও টয়লেটে পানি উঠে পড়ায় বিশুদ্ধ পানি সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারি ইউনিয়নের ছয়ানী গ্রামের আয়নাল হক বলেন, ‘সকাল থেকে নদীর পানি বেড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। আমরা অনেক কষ্টে চলাচল করছি। রাতে যদি পানি বাড়ে তাহলে আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই পানি হাঁটুসমান। নদীর পানি বাড়ছে আর বাড়ছে। রাতে কী হবে জানি না।’

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় দুই পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। নদীপাড়ের মানুষ গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে আছেন।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। ফলে আরও বাড়বে পানি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক বন্যার খোঁজ রাখছি। দুর্যোগ মোকাবিলায় ৪৫০ মেট্রিক টন চাল ও সাত লাখ টাকা বরাদ্দ আছে। সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং পিআইওর মাধ্যমে ১১০ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। আবারও তালিকা করে বরাদ্দ দেওয়া হবে।