মাদারীপুরে যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় শান্তা আক্তার (১৯) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাতে মাদারীপুর পৌর শহরের মাছ বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শান্তা আক্তার মধ্যে পাঁচখোলা এলাকার ইলিয়াস হাওলাদারের মেয়ে ও নাঈম সরদারের স্ত্রী। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদরের মধ্য পাঁচখোলা এলাকার ইলিয়াস হাওলাদারের মেয়ে শান্তা আক্তার ও পার্শ্ববর্তী জাজিলা এলাকার রিপন সরদারের ছেলে নাঈম সরদারের মধ্যে দীর্ঘ দুই বছর প্রেমের সম্পর্ক থাকায় উভয় পরিবারের লোকজন মিলে পারিবারিকভাবে চার মাস আগে দুই লাখ টাকা যৌতুকে তাদের বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবি করে আসছে নাঈম। কয়েকবার মোটা অঙ্কের টাকাও দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু তিনি প্রায়ই শান্তাকে মারধর করতেন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে শান্তার শ্বশুর রিপন সরদারকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে নাঈম আরও তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। পরে পালানোর সময় পুলিশ হাসপাতাল থেকে নাঈমকে আটক করে।
নিহতের নানি মায়া বেগম বলেন, আমরা বিয়ের সময় তাদেরকে দুই লাখ টাকা দিয়েছি। পরে আমার নাতি জামাই তার বাবা বিদেশি যাবে বলে নাতনির কাছে আরও তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। নাতনি শান্তা বলেছে তার স্বামী নাঈম বিদেশি গেলে টাকা এনে দেবে। কিন্তু তার শ্বশুর বিদেশে গেলে টাকা এনে দিতে পারবে না। এ কথা বলায় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার নাতনিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের বিচার চাই।
নিহতের বাবা ইলিয়াস হাওলাদার বলেন, যারা মানুষ মারে তারা মানুষ না, তারা পশু। যারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালে কর্তব্যরর্ত চিকিৎসক মো. শিহাব আহমেদ বলেন, এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া যাচ্ছে।
মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন,
নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।