ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅদ্ভুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ছাতকে স্মরণ সভা Logo বালি মহালে ইজারা পদ্বতি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন Logo ছাতকে আওয়ামিলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার Logo পিলখানা হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। Logo শান্তিগঞ্জের জয়সিদ্ধি-বসিউয়াখাউরী গ্রামে বিএনপির কর্মী সভা Logo জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর উপজেলার ৬ নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কমিটি গঠন Logo পরিবেশ নষ্ট করে কোন বাঁধ নির্মাণ হবেনা – পরিবেশ উপদেষ্টা Logo হাওরের জন্য সরকারের মাস্টার প্লান আছে- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ১৫.৪৩% বাড়ানোর সুপারিশ

খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। এ সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে গ্রাহক পর্যায়ে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ১ টাকা ১০ পয়সা বাড়বে।

গতকাল রাজধানীর বিয়াম অডিটোরিয়ামে বিতরণ কোম্পানিগুলোর দেয়া মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে এ প্রস্তাব করে কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি বা টিইসি। ৬০ দিনের মধ্যে বিদ্যুতের মূল্যসংক্রান্ত এ প্রস্তাবের ওপর আদেশ ঘোষণা করবে বিইআরসি।

বিইআরসির টিইসির সুপারিশের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, খুচরা পর্যায়ে বিতরণ কোম্পানিগুলোর ইউনিটপ্রতি গড় দাম এখন ৭ টাকা ১৩ পয়সা। সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম পড়বে ৮ টাকা ২৩ পয়সা।

এদিকে টিইসির সুপারিশ অনুযায়ী বিদ্যুতের দাম বাড়লেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারেনি কোনো বিতরণ সংস্থা। শুনানিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পক্ষ থেকে বলা হয়, জ্বালানি নিশ্চয়তা ছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন হবে কিনা সে বিষয়টি তারা নিশ্চিত নন।

সংস্থাটির ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতি টন কয়লার দাম ২৩০ ডলার এবং ফার্নেস অয়েলের দাম লিটারপ্রতি ৭০ টাকা ধরলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়ার ক্ষেত্রে ৪০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু বিইআরসি পাইকারি মূল্যবৃদ্ধিতে ১৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি হিসাব করেছে। এ হিসাবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া সম্ভব নয় বলে গণশুনানিতে বিপিডিবির প্রতিনিধি জানান।

বিইআরসিতে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি প্রায় ২৪ শতাংশ পর্যন্ত খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু বিইআরসির টিইসি পর্যবেক্ষণ করে ১৪ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির সুপারিশ করেছে।

বিতরণ কোম্পানিভেদে মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে কারিগরি কমিটি বিপিডিবির জন্য ইউনিটপ্রতি ৭ টাকা ৫৬ থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ৭৪ পয়সা (১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ), বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) জন্য ৬ টাকা ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ৬৪ (১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) জন্য ৮ টাকা ৮ থেকে ৯ টাকা ৪৩ (১৬ দশমিক ৭১ শতাংশ), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) জন্য ৮ টাকা ১০ থেকে ৯ টাকা ৪১ (১৬ দশমিক ১৭ শতাংশ), ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) জন্য ৭ টাকা ৩৫ থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ৫৪ (১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ), নর্দার্ন ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) জন্য ৭ টাকা ৬ থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ১৬ পয়সা (১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ) সুপারিশ করেছে টিইসি।

গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ায় বিইআরসি। এরপর বিদ্যুতের খুচরা দাম বাড়ানোর আবেদন করে বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলো। সবক’টি প্রতিষ্ঠান বলছে, পাইকারি দাম বাড়ানোর পর খুচরা দাম না বাড়ালে তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।

গণশুনানিতে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের আওতাধীন হাই-টেক পার্কগুলোর জন্য পৃথক ট্যারিফ নির্ধারণ এবং সদ্য চালু হওয়া মেট্রোরেলকে বিশেষ খুচরা গ্রাহকশ্রেণীর আওতাভুক্ত করার জন্য সুপারিশ করেছে টিইসি।

গণশুনানিতে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে বরং এ খাতের দুর্নীতি, চুরি ও অপচয় রোধ করার দাবি জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলো। গণশুনানিতে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) জানায়, বিদ্যুতের সিস্টেম লস, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করলে বিতরণ কোম্পানিগুলোর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে সরকারকে এ খাতে পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতার আহ্বান জানায় সংগঠনটি।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের মার্চে এক গণশুনানির মাধ্যমে সর্বশেষ খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিল বিইআরসি। খুচরা পর্যায়ে সে সময় গড়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়েছিল বিদ্যুতের দাম। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খুচরা বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৭৭ থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা করা হয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅদ্ভুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ছাতকে স্মরণ সভা

বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ১৫.৪৩% বাড়ানোর সুপারিশ

আপডেট সময় ১১:৫৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩

খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। এ সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে গ্রাহক পর্যায়ে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ১ টাকা ১০ পয়সা বাড়বে।

গতকাল রাজধানীর বিয়াম অডিটোরিয়ামে বিতরণ কোম্পানিগুলোর দেয়া মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে এ প্রস্তাব করে কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি বা টিইসি। ৬০ দিনের মধ্যে বিদ্যুতের মূল্যসংক্রান্ত এ প্রস্তাবের ওপর আদেশ ঘোষণা করবে বিইআরসি।

বিইআরসির টিইসির সুপারিশের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, খুচরা পর্যায়ে বিতরণ কোম্পানিগুলোর ইউনিটপ্রতি গড় দাম এখন ৭ টাকা ১৩ পয়সা। সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম পড়বে ৮ টাকা ২৩ পয়সা।

এদিকে টিইসির সুপারিশ অনুযায়ী বিদ্যুতের দাম বাড়লেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারেনি কোনো বিতরণ সংস্থা। শুনানিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পক্ষ থেকে বলা হয়, জ্বালানি নিশ্চয়তা ছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন হবে কিনা সে বিষয়টি তারা নিশ্চিত নন।

সংস্থাটির ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতি টন কয়লার দাম ২৩০ ডলার এবং ফার্নেস অয়েলের দাম লিটারপ্রতি ৭০ টাকা ধরলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়ার ক্ষেত্রে ৪০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু বিইআরসি পাইকারি মূল্যবৃদ্ধিতে ১৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি হিসাব করেছে। এ হিসাবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া সম্ভব নয় বলে গণশুনানিতে বিপিডিবির প্রতিনিধি জানান।

বিইআরসিতে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি প্রায় ২৪ শতাংশ পর্যন্ত খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু বিইআরসির টিইসি পর্যবেক্ষণ করে ১৪ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির সুপারিশ করেছে।

বিতরণ কোম্পানিভেদে মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে কারিগরি কমিটি বিপিডিবির জন্য ইউনিটপ্রতি ৭ টাকা ৫৬ থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ৭৪ পয়সা (১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ), বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) জন্য ৬ টাকা ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ৬৪ (১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) জন্য ৮ টাকা ৮ থেকে ৯ টাকা ৪৩ (১৬ দশমিক ৭১ শতাংশ), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) জন্য ৮ টাকা ১০ থেকে ৯ টাকা ৪১ (১৬ দশমিক ১৭ শতাংশ), ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) জন্য ৭ টাকা ৩৫ থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ৫৪ (১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ), নর্দার্ন ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) জন্য ৭ টাকা ৬ থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ১৬ পয়সা (১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ) সুপারিশ করেছে টিইসি।

গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ায় বিইআরসি। এরপর বিদ্যুতের খুচরা দাম বাড়ানোর আবেদন করে বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলো। সবক’টি প্রতিষ্ঠান বলছে, পাইকারি দাম বাড়ানোর পর খুচরা দাম না বাড়ালে তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।

গণশুনানিতে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের আওতাধীন হাই-টেক পার্কগুলোর জন্য পৃথক ট্যারিফ নির্ধারণ এবং সদ্য চালু হওয়া মেট্রোরেলকে বিশেষ খুচরা গ্রাহকশ্রেণীর আওতাভুক্ত করার জন্য সুপারিশ করেছে টিইসি।

গণশুনানিতে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে বরং এ খাতের দুর্নীতি, চুরি ও অপচয় রোধ করার দাবি জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলো। গণশুনানিতে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) জানায়, বিদ্যুতের সিস্টেম লস, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করলে বিতরণ কোম্পানিগুলোর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে সরকারকে এ খাতে পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতার আহ্বান জানায় সংগঠনটি।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের মার্চে এক গণশুনানির মাধ্যমে সর্বশেষ খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিল বিইআরসি। খুচরা পর্যায়ে সে সময় গড়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়েছিল বিদ্যুতের দাম। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খুচরা বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৭৭ থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা করা হয়।