ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo সুনামগঞ্জে জমিয়ত নেতা মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরী নিখোঁজ Logo বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জগন্নাথপুরে আলোচনা সভা ও দলীয় কার্যালয় উদ্ভোধন Logo মধ্যনগরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদের ফরম ক্রয়কে ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে Logo বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সুনামগঞ্জে বর্ণ্যাঢ্য র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo শান্তিগঞ্জে মানসিক রোগীর লাশ উদ্ধার Logo শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী বৈঠক অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর জমিয়তের সভাপতি মাসরুর কাসেমীর সাথে হাম্মাদ গাজিনগরীর বৈঠক Logo শান্তিগঞ্জে ব্যতিক্রমধর্মী গণসংযোগে মাওলানা হাম্মাদ আহমদ গাজীনগরী Logo সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারে ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল-২০২৫ Logo শান্তিগঞ্জে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে পোনামাছ অবমুক্ত

বিশ্ব ইজতিমায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম

  • আনোয়ার হোসেনঃ বিশ্ব ইজতেমা বা বিশ্ব ইজতিমা, প্রতিবছর সাধারণত বৈশ্বিক যেকোন বড় সমাবেশ, কিন্তু বিশেষভাবে তাবলিগ জামাতের বার্ষিক বৈশ্বিক সমাবেশ, যা বাংলাদেশের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তাবলিগ জামাতের এই সমাবেশটি বিশ্বে সর্ববৃহৎ, এবং এতে অংশগ্রহণ করেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সাধারণত প্রতিবছর শীতকালে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়ে থাকে, এজন্য ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মাসকে বেছে নেওয়া হয়।
    টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা মাঠের প্রস্তুতি শেষ, দেশ বিদেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা আসতে শুরু করেছেন  শুক্রবার আম বয়ানের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে।
    ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতি বছর এই সমাবেশ নিয়মিত আয়োজিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার রমনা পার্কসংলগ্ন কাকরাইল মসজিদে তাবলিগ জামাতের বার্ষিক সম্মেলন বা ইজতেমা প্রথম অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামে তৎকালীন হাজি ক্যাম্পে ইজতেমা হয়, ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। তখন এটা কেবল ইজতেমা হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রতিবছর ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষায় পাকিস্তানের সাথে অনেক আলেমদের একাত্মতা থাকায় ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে রমনা ‍উদ্যানের স্থলে টঙ্গীর পাগার গ্রামের খোলা মাঠে ইজতেমার আয়োজন করা হয়। ওই বছর স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশ নেওয়ায় ‘বিশ্ব ইজতেমা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বর্তমান অবধি ‘বিশ্ব ইজতেমা’ টঙ্গীর কহর দরিয়াখ্যাত তুরাগ নদীর উত্তর-পূর্ব তীরসংলগ্ন ডোবা-নালা, উঁচু-নিচু মিলিয়ে রাজউকের হুকুমদখলকৃত ১৬০ একর জায়গার বিশাল খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম-শহর-বন্দর থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং বিশ্বের প্রায় ৫০ থেকে ৫৫টি দেশের তাবলিগি দ্বীনদার মুসলমান জামাতসহ ২৫ থেকে ৩০ লক্ষাধিক মুসল্লি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক ইসলামি মহাসম্মেলন বা বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেন।
    ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহরানপুর এলাকায় ইসলামী দাওয়াত তথা তাবলিগের প্রবর্তন করেন এবং একই সঙ্গে এলাকাভিত্তিক সম্মেলন বা ইজতেমারও আয়োজন করেন। বাংলাদেশে ১৯৫০-এর দশকে তাবলিগ জামাতের প্রচলন করেন মাওলানা আবদুল আজিজ। বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় মারকাজ বা প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ থেকে এই সমাবেশ কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করা হয়।
    স্থান সংকট এবং জনদুর্ভোগ বিবেচনা করে ২০১১ সাল থেকে দুই পর্বে ইজতেমার আয়োজন করা হয় এবং বিগত ২০১৭ সাল থেকে মুসল্লির সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্রতি বছর কেবল মাত্র ৩২টি জেলা থেকে মুসল্লিগণ বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পান।
    বিশ্ব ইজতেমার শেষ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আখেরি মোনাজাত। প্রবল ধর্মচেতনার উদ্দীপনা নিয়ে মুসল্লিগণ আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন আর আমিন আমিন বলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আখেরি মোনাজাতের সময় টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীর যেন পরিণত হয় মুসল্লিদের জোয়ারে, আর এই আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার মূল কার্যক্রম শেষ হয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন

সুনামগঞ্জে জমিয়ত নেতা মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরী নিখোঁজ

বিশ্ব ইজতিমায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম

আপডেট সময় ১০:০৮:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩
  • আনোয়ার হোসেনঃ বিশ্ব ইজতেমা বা বিশ্ব ইজতিমা, প্রতিবছর সাধারণত বৈশ্বিক যেকোন বড় সমাবেশ, কিন্তু বিশেষভাবে তাবলিগ জামাতের বার্ষিক বৈশ্বিক সমাবেশ, যা বাংলাদেশের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তাবলিগ জামাতের এই সমাবেশটি বিশ্বে সর্ববৃহৎ, এবং এতে অংশগ্রহণ করেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সাধারণত প্রতিবছর শীতকালে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়ে থাকে, এজন্য ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মাসকে বেছে নেওয়া হয়।
    টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা মাঠের প্রস্তুতি শেষ, দেশ বিদেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা আসতে শুরু করেছেন  শুক্রবার আম বয়ানের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে।
    ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতি বছর এই সমাবেশ নিয়মিত আয়োজিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার রমনা পার্কসংলগ্ন কাকরাইল মসজিদে তাবলিগ জামাতের বার্ষিক সম্মেলন বা ইজতেমা প্রথম অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামে তৎকালীন হাজি ক্যাম্পে ইজতেমা হয়, ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। তখন এটা কেবল ইজতেমা হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রতিবছর ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষায় পাকিস্তানের সাথে অনেক আলেমদের একাত্মতা থাকায় ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে রমনা ‍উদ্যানের স্থলে টঙ্গীর পাগার গ্রামের খোলা মাঠে ইজতেমার আয়োজন করা হয়। ওই বছর স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশ নেওয়ায় ‘বিশ্ব ইজতেমা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বর্তমান অবধি ‘বিশ্ব ইজতেমা’ টঙ্গীর কহর দরিয়াখ্যাত তুরাগ নদীর উত্তর-পূর্ব তীরসংলগ্ন ডোবা-নালা, উঁচু-নিচু মিলিয়ে রাজউকের হুকুমদখলকৃত ১৬০ একর জায়গার বিশাল খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম-শহর-বন্দর থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং বিশ্বের প্রায় ৫০ থেকে ৫৫টি দেশের তাবলিগি দ্বীনদার মুসলমান জামাতসহ ২৫ থেকে ৩০ লক্ষাধিক মুসল্লি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক ইসলামি মহাসম্মেলন বা বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেন।
    ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহরানপুর এলাকায় ইসলামী দাওয়াত তথা তাবলিগের প্রবর্তন করেন এবং একই সঙ্গে এলাকাভিত্তিক সম্মেলন বা ইজতেমারও আয়োজন করেন। বাংলাদেশে ১৯৫০-এর দশকে তাবলিগ জামাতের প্রচলন করেন মাওলানা আবদুল আজিজ। বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় মারকাজ বা প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ থেকে এই সমাবেশ কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করা হয়।
    স্থান সংকট এবং জনদুর্ভোগ বিবেচনা করে ২০১১ সাল থেকে দুই পর্বে ইজতেমার আয়োজন করা হয় এবং বিগত ২০১৭ সাল থেকে মুসল্লির সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্রতি বছর কেবল মাত্র ৩২টি জেলা থেকে মুসল্লিগণ বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পান।
    বিশ্ব ইজতেমার শেষ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আখেরি মোনাজাত। প্রবল ধর্মচেতনার উদ্দীপনা নিয়ে মুসল্লিগণ আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন আর আমিন আমিন বলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আখেরি মোনাজাতের সময় টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীর যেন পরিণত হয় মুসল্লিদের জোয়ারে, আর এই আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার মূল কার্যক্রম শেষ হয়।