ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅদ্ভুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ছাতকে স্মরণ সভা Logo বালি মহালে ইজারা পদ্বতি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন Logo ছাতকে আওয়ামিলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার Logo পিলখানা হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুরের ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দকে শিবির কর্মী বলে প্রচারণা চালানোয় জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। Logo শান্তিগঞ্জের জয়সিদ্ধি-বসিউয়াখাউরী গ্রামে বিএনপির কর্মী সভা Logo জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo জগন্নাথপুর উপজেলার ৬ নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কমিটি গঠন Logo পরিবেশ নষ্ট করে কোন বাঁধ নির্মাণ হবেনা – পরিবেশ উপদেষ্টা Logo হাওরের জন্য সরকারের মাস্টার প্লান আছে- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

ঘোড়ার গাড়ি যেখানে জীবিকা নির্বাহের অন্যতম উৎস

ঘোড়া কিংবা ঘোড়ার গাড়ি প্রাচীন কালের অন্যতম বাহন হিসেবে পরিচিত। বর্তমান সময়ে সবাই আধুনিক নতুন নতুন ডিজাইনের গাড়ী নিয়ে ব্যস্ত। তবে আপনি যদি কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে যান তাহলে দেখতে পাবেন প্রাচীন সেই ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহারের চিত্র।  এখানে  শহর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ সব ধরনের মালামাল কেনার পর ঘোড়ার গাড়িতে করেই যাচ্ছে চরের প্রত্যন্ত এলাকায়। এতে জীবিকা নির্বাহ হয় কয়েক হাজার পরিবারের।

যেখানে জীবন ও জীবিকার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঘোড়ার গাড়ি | প্রথম আলো

স্থানীয়রা জানান, জেলায় প্রায় দুই হাজার ঘোড়ার গাড়ি রয়েছে। এসব গাড়ি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মালামাল পৌঁছানো ছাড়াও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে যাত্রীবহন করা হয়। সাধারণত মাইক্রোবাসের পুরোনো চাকা, কাঠ আর লোহার কাঠামো দিয়ে তৈরি হয় ঘোড়ার গাড়ি। প্রতিটি গাড়ি তৈরিতে খরচ হয় ১২-১৪ হাজার টাকা। একটি ঘোড়া কিনতে লাগে ২৫-৩০ হাজার টাকা। এ গাড়ি দিয়ে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয়।

শহর থেকে চরাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের মালামাল কিনে ঘোড়ার গাড়িতে করে নিয়ে যান। দূরত্ব ভেদে মণপ্রতি বিভিন্ন ধাপে ভাড়া নেন চালকরা।

কথা হয় ঘোড়ার গাড়িতে করে মালামাল নিয়ে আসা মো. আব্দুল মালেক মনুর সঙ্গে। তিনি বলেন, চরাঞ্চলে বসবাস করি। বর্ষার সময় নৌকা আর খরার সময় ঘোড়ার গাড়ি ছাড়া আমাদের চলে না। মালামাল আনা নেওয়া, যাত্রীবহনসহ বিভিন্ন পণ্য সরবরাহে এখনকার মানুষের একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি।

একরামুল হক নামের এক চালক বলেন, চরে অন্য কোনো গাড়ি চলে না। ঘোড়ার গাড়িযোগে বিভিন্ন মালামাল আনা নেওয়া করি। সারাদিনে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসারে ব্যয় বহন করে আসছি। গাড়ির চাকা ঘুরলেই আয় হয়। ঘোড়ার খাবারের জন্য দিনে ১০০-১৫০ টাকা খরচ করে ৪০০-৬০০ টাকা আয় করছি। এ টাকা দিয়ে কোনো রকম সংসার চলে।

মো. ইয়াকুব আলী নামের আরেক চালক বলেন, এ অঞ্চলে ঘোড়ার গাড়ি ছাড়া কোনো উপায় নেই। বর্ষার সময় নৌকা ও খরার সময় ঘোড়ার গাড়ি আমাদের একমাত্র ভরসা।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর মিঞা বলেন, চরাঞ্চলের মালামাল পরিবহনের জন্য অন্যতম বাহন ঘোড়ার গাড়ি। যার কারণে ঘোড়ার গাড়ি দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। শুকনো মৌসুমে তারা ভালোই আয় করছেন।

তিনি আরও বলেন, অনেকে দিনমজুরর কাজ ছেড়ে ঘোড়ার গাড়ি চালাচ্ছেন। ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকা যাত্রাপুর ঘাট থেকে মালামাল নিয়ে যাত্রাপুর হাটসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান। এতে যেমন মানুষজন পরিবহন সেবা পাচ্ছেন অপর দিকে গাড়ি চালকদের ভালো আয় হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক বলেন, ১৬ নদনদী বেষ্টিত জেলা কুড়িগ্রাম। এ জেলায় রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪০০ চরাঞ্চল। এসব চরাঞ্চলে পরিবহন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ঘোড়ার গাড়ি করেই চরের মানুষ হাট-বাজার করাসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করছেন। এতে একদিকে যেমন চরের মানুষ ঘোড়ার গাড়ির ওপর নির্ভর হচ্ছেন, অন্যদিকে এ গাড়ি চালিয়ে অনেকে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন।

 

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅদ্ভুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ছাতকে স্মরণ সভা

ঘোড়ার গাড়ি যেখানে জীবিকা নির্বাহের অন্যতম উৎস

আপডেট সময় ১২:২৬:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩

ঘোড়া কিংবা ঘোড়ার গাড়ি প্রাচীন কালের অন্যতম বাহন হিসেবে পরিচিত। বর্তমান সময়ে সবাই আধুনিক নতুন নতুন ডিজাইনের গাড়ী নিয়ে ব্যস্ত। তবে আপনি যদি কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে যান তাহলে দেখতে পাবেন প্রাচীন সেই ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহারের চিত্র।  এখানে  শহর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ সব ধরনের মালামাল কেনার পর ঘোড়ার গাড়িতে করেই যাচ্ছে চরের প্রত্যন্ত এলাকায়। এতে জীবিকা নির্বাহ হয় কয়েক হাজার পরিবারের।

যেখানে জীবন ও জীবিকার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঘোড়ার গাড়ি | প্রথম আলো

স্থানীয়রা জানান, জেলায় প্রায় দুই হাজার ঘোড়ার গাড়ি রয়েছে। এসব গাড়ি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মালামাল পৌঁছানো ছাড়াও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে যাত্রীবহন করা হয়। সাধারণত মাইক্রোবাসের পুরোনো চাকা, কাঠ আর লোহার কাঠামো দিয়ে তৈরি হয় ঘোড়ার গাড়ি। প্রতিটি গাড়ি তৈরিতে খরচ হয় ১২-১৪ হাজার টাকা। একটি ঘোড়া কিনতে লাগে ২৫-৩০ হাজার টাকা। এ গাড়ি দিয়ে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয়।

শহর থেকে চরাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের মালামাল কিনে ঘোড়ার গাড়িতে করে নিয়ে যান। দূরত্ব ভেদে মণপ্রতি বিভিন্ন ধাপে ভাড়া নেন চালকরা।

কথা হয় ঘোড়ার গাড়িতে করে মালামাল নিয়ে আসা মো. আব্দুল মালেক মনুর সঙ্গে। তিনি বলেন, চরাঞ্চলে বসবাস করি। বর্ষার সময় নৌকা আর খরার সময় ঘোড়ার গাড়ি ছাড়া আমাদের চলে না। মালামাল আনা নেওয়া, যাত্রীবহনসহ বিভিন্ন পণ্য সরবরাহে এখনকার মানুষের একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি।

একরামুল হক নামের এক চালক বলেন, চরে অন্য কোনো গাড়ি চলে না। ঘোড়ার গাড়িযোগে বিভিন্ন মালামাল আনা নেওয়া করি। সারাদিনে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসারে ব্যয় বহন করে আসছি। গাড়ির চাকা ঘুরলেই আয় হয়। ঘোড়ার খাবারের জন্য দিনে ১০০-১৫০ টাকা খরচ করে ৪০০-৬০০ টাকা আয় করছি। এ টাকা দিয়ে কোনো রকম সংসার চলে।

মো. ইয়াকুব আলী নামের আরেক চালক বলেন, এ অঞ্চলে ঘোড়ার গাড়ি ছাড়া কোনো উপায় নেই। বর্ষার সময় নৌকা ও খরার সময় ঘোড়ার গাড়ি আমাদের একমাত্র ভরসা।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর মিঞা বলেন, চরাঞ্চলের মালামাল পরিবহনের জন্য অন্যতম বাহন ঘোড়ার গাড়ি। যার কারণে ঘোড়ার গাড়ি দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। শুকনো মৌসুমে তারা ভালোই আয় করছেন।

তিনি আরও বলেন, অনেকে দিনমজুরর কাজ ছেড়ে ঘোড়ার গাড়ি চালাচ্ছেন। ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকা যাত্রাপুর ঘাট থেকে মালামাল নিয়ে যাত্রাপুর হাটসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান। এতে যেমন মানুষজন পরিবহন সেবা পাচ্ছেন অপর দিকে গাড়ি চালকদের ভালো আয় হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক বলেন, ১৬ নদনদী বেষ্টিত জেলা কুড়িগ্রাম। এ জেলায় রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪০০ চরাঞ্চল। এসব চরাঞ্চলে পরিবহন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ঘোড়ার গাড়ি করেই চরের মানুষ হাট-বাজার করাসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করছেন। এতে একদিকে যেমন চরের মানুষ ঘোড়ার গাড়ির ওপর নির্ভর হচ্ছেন, অন্যদিকে এ গাড়ি চালিয়ে অনেকে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন।