যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের সুপার শপগুলোতে ৬টি ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪ পাউন্ডে, যা বাংলাদেশি প্রায় সাড়ে পাঁচশ টাকা। কিন্তু সংকট এত বেড়েছে যে ওই চড়া দামেও চাহিদা মতো মিলছে না ডিম। একই সঙ্গে কয়েকটি নির্দিষ্ট সবজিও প্রয়োজন মতো কেনা যাচ্ছে না। অন্তত চারটি সুপার মার্কেটে এমন রেশনিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে। মে মাস পর্যন্ত এমন রেশনিং ব্যবস্থা চলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।ব্রিটেনের চারটি সুপার মার্কেট চেইনশপ কোম্পানি টমেটো, শসা ও মরিচ বিক্রিতে রেশনিং চালু করেছে। এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে টেসকো, আলডি, আসদা ও মরিসন্স। এসব সুপার শপে একজন ক্রেতা তিনটির বেশি টমেটো, মরিচ ও শসা কিনতে পারছেন না।গত বছর নভেম্বরে একাধিক সুপার শপে ডিম বিক্রির ক্ষেত্রে রেশনিং চালু করা হয়েছিল। এখন রেশনিং না থাকলেও ডিমের দাম চড়া। সাউথ ইস্ট লন্ডনের ক্রয়োডন এলাকার অন্যতম বৃহত্তম টেসকো স্টোর ব্রিকস্টক রোডে টেসকোর আউটলেট। সোমবার এ প্রতিবেদক সরেজমিন দেখতে পান, দোকানের ডিম, ভোজ্যতেলের তাকগুলো প্রায় খালি। ক্রেতারা উদ্বিগ্ন। ক্লারেন্স কোর্ট ব্র্যান্ডের ছয়টি ডিম বিক্রি হচ্ছে চার পাউন্ডে। অথচ টেসকোতে সবচেয়ে কম দামি ব্র্যান্ডের ১৬টি ডিম বিক্রি হতো দুই পাউন্ডেরও কম দামে। সেই ডিমের তাকগুলো এখন খালি পড়ে আছে।তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর দেশটি থেকে ব্রিটেনে শাকসবজি ও ফল আসা কমে গেছে একেবারে।যুক্তরাজ্যের শাকসবজি ও ফল উৎপাদকদের সংগঠন লিয়া ভ্যালি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন দেশটির মোট উৎপাদনের চার ভাগের একভাগ শসা, মরিচ ও পাঁচ ভাগের একভাগ বেগুন উৎপাদন করে। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টমেটো, মরিচ, বেগুন চাষ এ বছর ব্রিটেনের চাষিরা সেভাবে করতে পারেননি। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এর একটি বড় কারণ।ব্রিটেনের নিত্যপণ্য আমদানিকারকরা বলছেন, ব্রিটেনে সবজি, ফলসহ নিত্যপণ্যের সংকটের নানামুখী কারণ রয়েছে। প্রধান রফতানিকারক দেশ মরক্কো ও স্পেনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, জ্বালানির উচ্চমূল্য, কার্গো বিমানের ভাড়া বৃদ্ধি ও ব্রেক্সিটের বিভিন্ন শর্তের কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে গত দেড় বছরে কয়েক দফায়। কিন্তু এখন দোকানে টাকা দিয়েও খাবার মিলছে না।টেসকোতে ক্লারেন্স কোর্ট ব্র্যান্ডের ছয়টি ডিম বিক্রি হচ্ছে চার পাউন্ডে। চৌধুরীটেসকোতে ক্লারেন্স কোর্ট ব্র্যান্ডের ছয়টি ডিম বিক্রি হচ্ছে চার পাউন্ডে। ছবি: মুনজের আহমদ চৌধুরীসুপার মার্কেটগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী দ্য ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়াম বলেছে, এই ঘাটতি ‘কয়েক সপ্তাহ’ থাকতে পারে। তারা বলছে, যুক্তরাজ্যে উৎপাদন মৌসুম শুরু হওয়া এবং বিকল্প আমদানির উৎস খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত এই ঘাটতি থাকতে পারে।ব্রিটেনে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিসহ প্রায় দশ লাখ বাংলাদেশির বসবাস। রোজার মাসকে সামনে রেখে বাজার করতে গিয়ে সুপার শপে খাদ্য পণ্য কিনতে না পারায় দুর্ভোগ বাড়ছে বাংলাদেশি কমিউনিটির।প্রবাসী বাংলাদেশি শাহিন আহমদ জানান, বড় সুপার শপগুলোতে ডিম, সবজি মিলছে না। খাবারের তাকগুলো খালি।ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি সাইদুর রহমান রেনু সোমবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ পরিস্থিতির মূল কারণ ব্রেক্সিটের ফলাফল, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি, মহামারির ক্ষয়ক্ষতি ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি। ব্রিটেনের বেশিরভাগ খাদ্যসামগ্রী আসে বিভিন্ন দেশ থেকে। খাসি, মোরগ আসে নিউ জিল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস থেকে। সবকিছু আমদানি নির্ভর।এক প্রশ্নের জবাবে রেনু জানান, বাংলাদেশের বেশিরভাগ শাকসবজি বিলেতে এখনও আমদানি নিষিদ্ধ। এর মূল কারণ রফতানিকারকদের কিছু ভুল ও অবহেলা। যদি বাংলাদেশ সরকার বিমানের কার্গো শাখা ও ব্রিটেনের হাইকমিশনের মাধ্যমে নীতিমালা মেনে সবজি ও ফল রফতানির উদ্যোগ নিতো তাহলে বছরে হাজার কোটি পাউন্ড বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হতো।
ঢাকা
,
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::










লন্ডনে ছয়টি ডিম ৫৫০ টাকা
-
জনস্বার্থে নিউজ ২৪ ডেস্ক :
- আপডেট সময় ০৯:০২:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- ৬৩০ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ