সম্প্রতি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় জনস্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থা আইসিডিডিআর,বি’র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণের কারণে ঢাকা শহরে অপরিণত শিশু প্রসব এবং কম ওজন নিয়ে শিশু জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে।যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের বায়ুমান যাচাই বিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘এয়ার ভিজ্যুয়াল’-এর বায়ুমান সূচক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী, ঢাকা সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম তিনটির মধ্যে ওঠানামা করে।বায়ু দূষণের পাশাপাশি পরিবেশে এমন আরও নানা ধরণের দূষণ গর্ভাবস্থাকে আরও জটিলতায় ফেলে দিয়েছে।টেক্সাস এএন্ডএম ইউনিভার্সিটির করা এক গবেষণা বলছে, গর্ভাবস্থায় পরিবেশ দূষণের সংস্পর্শে আসার ফলে গর্ভকালীন শিশুর ওপর অনেক বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে যা একটি শিশুর প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা থাকে।বাংলাদেশের পরিবেশে যেসব দূষণ প্রকট রূপ নিয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি ব্যাখ্যা করা হল।
সিসা ও অন্যান্য ভারী ধাতু
গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সিসা বা লেড, ক্যাডমিয়াম, নিকেল, মার্কারি ইত্যাদির মতো ভারী ধাতু অনেকটা নীরব ঘাতকের মতো।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সিসাকে জনস্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করেছে।গর্ভাবস্থায় কেউ এ ধরণের ভারী ধাতুর সংস্পর্শে এলে শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং তার দৃষ্টি, শ্রবণ, এবং মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা থেকে শুরু করে আচরণগত সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।অথচ দৈনন্দিন নানা কাজে সিসাসহ অন্যান্য ভারী ধাতুর সংস্পর্শে আসতে হয়। বিশেষ করে খাদ্য চক্রে ঢুকে পড়েছে ক্ষতিকর এসব ধাতু।বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি রসায়ন বিভাগের স্থানীয় পর্যায়ের এক গবেষণায়, বেগুনের মধ্যে সহনীয় মাত্রার দ্বিগুণের বেশি সিসা পাওয়া গিয়েছে।এছাড়া ১০ শতাংশ বেগুনে ক্যাডমিয়াম সহনীয় মাত্রার চেয়ে চার গুণ বেশি পাওয়া গেছে।ওই বেগুন যেখানে উৎপাদিত হয়েছে, সেখানকার মাটিতে সিসা, ক্যাডমিয়াম, তামা ও দস্তার মতো ভারী ধাতু স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় ছিল বলে গবেষণায় উঠে আসে।