মাছির ভনভন শুনে ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি করা হয়। কুকুরগুলো মাছির কাছেই দাঁড়িয়ে থাকলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ধারণা হয়, সেখানে ‘নিশ্চয় কিছু আছে’,
ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত সিদ্দিক বাজারের ক্যাফে কুইন ভবনের বেজমেন্টে নেমে তল্লাশি চালানোর সুযোগ না থাকলেও প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর দুজনের মৃতদেহের খোঁজ পাওয়া যায় মাছির আনাগোনা দেখে।বুধবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে লাশ দুটি উদ্ধারের পর এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে।মঙ্গলবার বিকালে নর্থ সাউথ রোডের ১৮০/১ হোল্ডিংয়ের সাত তলা ওই ভবনে বিকট বিস্ফোরণ ঘটলে চারপাশ ধোঁয়া আর ধুলায় ঢেকে যায়। ভবনে থাকা বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীদের পাশাপাশি সামনে রাস্তায় থাকা যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীরাও হতাহত হন।বিস্ফোরণে ওই ভবনের নিচের দুটি ফ্লোরের ছাদের একাংশ ধসে বেজমেন্টে পড়ে। ভবনটির কলাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নিচে নেমে তল্লাশি চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সেখানে উদ্ধারকাজ স্থগিত করে ফায়ার সার্ভিস।বুধবার সকাল থেকে ভবনের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইট-কংক্রিট সরানো হলেও নিচে নেমে উদ্ধার কাজ চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। সে কারণে ডগ স্কোয়াড এনে মৃতদেহ খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু হয়।এদিকে ওই ভবনের দুই দোকানকর্মীসহ তিনজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন স্বজনরা। সকাল থেকেই তারা ভবনের সামনে অপেক্ষা করছিলেন, যদি কোনো খোঁজ পাওয়া যায় এই আশায়।ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “উদ্ধার কাজে কোনো ভারী যন্ত্র আরা ব্যবহার করতে পারছি না। লক কাটার যন্ত্র ব্যবহার করে যতটা পারা যায় সেই চেষ্টা করছি। এদিকে বেজমেন্টে পানি জমে আছে। মেশিনের মাধ্যমে সেচে পানি কমানোর চেষ্টা হচ্ছে। এভাবে যতটা পারা যায় আমরা তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছিলাম।এর মধ্যে একটু ভেতরের দিকে বেজমেন্টে অনেক মাছির ভনভন শুনতে পান আমাদের কর্মীরা। ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি করলে কুকুরগুলো ওই মাছিগুলোর কাছেই দাঁড়িয়ে থাকে। তখন আমাদের ধারণা হয়, ভেতরে নিশ্চয় কিছু আছে।”আখতারুজ্জামান জানান, প্রথমে কোনো মৃতদেহ দেখা যাচ্ছিল না। আস্তে আস্তে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ভাঙা কংক্রিট সরানো হয়। প্রায় চার ফুট গভীর কংক্রিট সরানোর পর দুটি মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়।পরে ভবনের বেজমেন্ট থেকে ওই দুই পুরুষের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় একে একে। অ্যাম্বুলেন্সে করে সেগুলো পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “আমাদের উদ্ধার অভিযান বন্ধ হয়নি। তবে ভবনের কাঠামো ভাঙা যাচ্ছে না ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে। লক কাটার যন্ত্র ব্যবহার করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে যতটুকু পারা যায় উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। ভেতরে আর কারও মৃতদেহ আছে কি না, তা আমরা জানার চেষ্টা করছি আমরা।”