ঢাকা , বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo শান্তিগঞ্জে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হাফেজ শেখ মুশতাক আহমদের সমর্থনে নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত Logo মুশতাক গাজিনগরীর হত্যার প্রতিবাদে গণআন্দোলনের হুঁশিয়ারি Logo ঢাকায় ১৫ সেপ্টেম্বরের বিশাল শিক্ষক সমাবেশ সফল করতে সিলেটে মতবিনিময় সভা Logo জগন্নাথপুরে আলোচনায় প্রবাসী তাহের মিয়ার নতুন ষাড় সাদা ডলপিং Logo গণতন্ত্রের লড়াইয়ে সংস্কৃতির জাগরণ প্রয়োজন’— শান্তিগঞ্জে ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন Logo সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের সহ-সভাপতি নিখোঁজ মাওলানা মোশতাক আহমদের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন Logo সুনামগঞ্জে জমিয়ত নেতা মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরী নিখোঁজ Logo বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জগন্নাথপুরে আলোচনা সভা ও দলীয় কার্যালয় উদ্ভোধন Logo মধ্যনগরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদের ফরম ক্রয়কে ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে Logo বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সুনামগঞ্জে বর্ণ্যাঢ্য র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস

আজ শনিবার ভয়াল ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে বাঙালি জাতির জীবনে এক বিভীষিকাময় রাত নেমে আসে। মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানানদার বাহিনী অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কাপুরুষের মত তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চলাইটের নীলনকশা অনুযায়ী আন্দোলনরত বাঙালিদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।২৫ মার্চের গণহত্যা শুধু এক রাতের হত্যাকাণ্ডই ছিলনা, এটা ছিল মূলত বিশ্ব সভ্যতার জন্য এক কলঙ্কজনক জঘন্যতম গণহত্যার সূচনা মাত্র। এদিন মধ্যরাতে পিলখানা, রাজারবাগ, নীলক্ষেত আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। হানাদার বাহিনী ট্যাঙ্ক ও মর্টারের মাধ্যমে নীলক্ষেতসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দখল নেয়। সেনাবাহিনীর মেশিনগানের গুলিতে, ট্যাঙ্ক-মর্টারের গোলায় ও আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে উঠে বিভীষিকাময়।এদিন পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ঢাবির জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন সার্চ লাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল পদক্ষেপ চূড়ান্ত করে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করে করাচি চলে যান।সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং শেষ শত্রু বিদায় না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবার আহ্বান জানান।বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।দিনটির স্মরণে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত ১ মিনিটের জন্য জরুরি স্থাপনা ও চলমান যানবাহন ব্যতীত সারাদেশে প্রতিকী ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কন্ঠে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।এছাড়াও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর দেশের সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য উপাসনালয়গুলোতে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে এবং সকল জেলা ও উপজেলায় ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।জাতীয় সংসদে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হওয়ার পর থেকেই দিনটি জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

শান্তিগঞ্জে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হাফেজ শেখ মুশতাক আহমদের সমর্থনে নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস

আপডেট সময় ১১:০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩

আজ শনিবার ভয়াল ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে বাঙালি জাতির জীবনে এক বিভীষিকাময় রাত নেমে আসে। মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানানদার বাহিনী অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কাপুরুষের মত তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চলাইটের নীলনকশা অনুযায়ী আন্দোলনরত বাঙালিদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।২৫ মার্চের গণহত্যা শুধু এক রাতের হত্যাকাণ্ডই ছিলনা, এটা ছিল মূলত বিশ্ব সভ্যতার জন্য এক কলঙ্কজনক জঘন্যতম গণহত্যার সূচনা মাত্র। এদিন মধ্যরাতে পিলখানা, রাজারবাগ, নীলক্ষেত আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। হানাদার বাহিনী ট্যাঙ্ক ও মর্টারের মাধ্যমে নীলক্ষেতসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দখল নেয়। সেনাবাহিনীর মেশিনগানের গুলিতে, ট্যাঙ্ক-মর্টারের গোলায় ও আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে উঠে বিভীষিকাময়।এদিন পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ঢাবির জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন সার্চ লাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল পদক্ষেপ চূড়ান্ত করে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করে করাচি চলে যান।সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং শেষ শত্রু বিদায় না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবার আহ্বান জানান।বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।দিনটির স্মরণে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত ১ মিনিটের জন্য জরুরি স্থাপনা ও চলমান যানবাহন ব্যতীত সারাদেশে প্রতিকী ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কন্ঠে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।এছাড়াও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর দেশের সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য উপাসনালয়গুলোতে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে এবং সকল জেলা ও উপজেলায় ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।জাতীয় সংসদে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হওয়ার পর থেকেই দিনটি জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।