কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৫ বছরে দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। চরম দারিদ্র্যের হার ছয় ভাগেরও নিচে নেমে এসেছে, যা সারা বিশ্বেই প্রশংসিত হচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ বিশ্বে উদাহরণ হয়ে উঠেছে।বুধবার (২৪ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) মিলনায়তনে অতিদরিদ্রদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে পিকেএসএফের প্রকল্পের উদ্বোধনী ওয়ার্কশপে তিনি এসব কথা বলেন।কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সরকার দেশের কৃষক ও কৃষির উন্নয়নে কিছুই করেনি। তারা কৃষক ও সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে কাজ করেনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষক ও সাধারণ মানুষের উন্নয়নে কোনও আপস করেননি। তিনি বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে কৃষি খাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও গত বছর সারে ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছেন, যা পৃথিবীতে বিরল।তিনি বলেন, ‘কৃষি খাতে বিশাল ভর্তুকি ও সহযোগিতার ফলেই ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য দেশে উৎপাদন করা যাচ্ছে। তা না হলে প্রতিবছর চাল আমদানি করেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সিংহভাগ খরচ হয়ে যেতো।’ইউরোপীয় ইউনিউয়নকে (ইইউ) সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে ড. রাজ্জাক আরও বলেন, ‘উপকূল, হাওর, চরাঞ্চলসহ প্রতিকূল এলাকায় এখনও জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি দারিদ্র্য রয়েছে। এসব প্রতিকূল এলাকায় ফসল ফলানো কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ। সেজন্য এসব এলাকায় ফসল উৎপাদনে আমরা খুবই গুরুত্ব দিচ্ছি। ইইউ-পিকেএসএফের প্রকল্প এ ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’ইইউকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোরও আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের এনজিওর সঙ্গে কাজ করার প্রবণতা বেশি। দেশের সব এনজিওতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আছে– বিষয়টি এমন নয়। এজন্য এনজিওর কাজ কঠোরভাবে মনিটর করতে হবে।’পিকেএসএফের চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জামান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নমিতা হালদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মো. সলিম উল্লাহ, রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন চার্লস হুইটলি, প্রকল্পের পরিচালক শরীফ আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।
উপস্থাপনায় প্রকল্প পরিচালক জানান, ‘পাথওয়েজ টু প্রসপারিটি ফর এক্সট্রিমলি পুওর পিপল-ইউরোপীয় ইউনিয়ন’ শিরোনামে তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের মোট বাজেট ২০৫ কোটি টাকা, যার পুরোটাই অর্থায়ন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এর মাধ্যমে দেশের চরাঞ্চল, হাওর ও উপকূলের ১২ জেলার ৩৪টি উপজেলার ২ লাখ ১৫ হাজার অতিদরিদ্র পরিবারের দারিদ্র্য বিমোচনে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।