ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo মধ্যনগরে আওয়ামী লীগ নেতার দখল থেকে সরকারী ভুমি পুনরুদ্ধার Logo সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের রফিনগর গ্রামের সাজ্জাতুলের বাড়িঘরে হামলা,ভাংচুর লুটপাঠসহ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ভাংচুরের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত -নিহতদের স্মরণে দোয়ারাবাজারে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত Logo অন্তবর্তীকালীন সরকার পতনের ষড়যন্ত্র গোপন বৈঠকে থাকা ছাত্রলীগের ৩৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি Logo শান্তিগঞ্জে বিনামূল্যে গরু বিতরণের লক্ষ্যে অবহিতকরণ সভা ও প্রশিক্ষণ Logo দোয়ারাবাজারে সরকারি গাছ কর্তন।। জব্দ করলো প্রশাসন Logo শান্তিগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা  Logo ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে তাহিরপুরে’স্মরণ সভা’ Logo ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে শান্তিগঞ্জে ‘স্মরণ সভা’ Logo চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ বাম্পার ফলনে শান্তিগঞ্জের কৃষকের মুখে হাসি

কোথা থেকে আসে কোথায় হারায়, সে হিসাব নেই যে শিশুদের

পথশিশু রেশমা গত তিন বছর ধরে পথে থাকছে। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন— কোথাও পুড়ে গেছে, কোথাও মারধরের দাগ এখনও। শিশুটি বলছে, সে জানে না তার বাড়ি কোথায়? বাবা-মাকে খুঁজে পায়নি। শিশু রেশমা একটি বাড়িতে কাজ করতো। খুব ছোট থাকতে সেই বাসার শিশুর খেলার সাথী হিসেবে তাকে আনা হয়েছিল। কিন্তু হেনো কোনও কাজ ছিল না— যা তাকে করতে হতো। গোসলের পানি প্রস্তুত করা, গৃহকর্ত্রী যখন তার শিশু সন্তানকে খাবার খাওয়াতেন, তখন খাবারের প্লেট নিয়ে পাশে  দাঁড়িয়ে থাকা, শিশুটির প্রশ্রাব-পায়খানা পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে নানা ধরনের কাজ করতে হতো তাকে। ওই বাসার শিশুটি কোনও কারণে ব্যথা পেলে দ্বিগুণ ব্যথা দেওয়া হতো রেশমাকে। কখনও মাথায় আঘাত করা, চড়-থাপ্পড় থেকে শুরু করে অল্পবিস্তর গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, সবই চলতো তার ওপরে। একবার ওই বাসার ড্রাইভারের সহায়তায় সে বাসা থেকে পালিয়ে যায় ঠিকই, কিন্তু কোথায় যাবে? ঢাকার রাস্তায় থাকতে থাকতে এখন রাস্তাই হয়েছে তার ঠিকানা। মাঝে বাবা- মায়ের খোঁজ পেয়েছিল, তবু আর ফিরতে পারেনি গ্রামে।

রাজধানীতে ঘরে ঘরে শিশু শ্রমিকের খোঁজ মেলে। কেউ একা থাকতে পারে না বলে, কেউবা কাজে সহায়তা পাওয়া যাবে ভেবে, আবার কেউ নিজের শিশুর খেলার সঙ্গী হিসেবে গ্রাম থেকে শিশুদের নিয়ে আসেন। এদের সংখ্যা কত, কেউ জানে না। এই শিশুদের হারিয়ে যাওয়ার খবরও কেউ রাখে না। শিশু শ্রমিক ও গৃহকর্মীদের নিয়ে যারা কাজ করেন, তারা বলছেন, রাজধানীর বাসাবাড়িতে স্থায়ী গৃহকর্মীদের বেশিরভাগই শিশু। বরাবরই তাদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সঠিক নিবন্ধন ব্যবস্থাই পারে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। কাজ করতে গিয়ে তারা হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের শিকার হলেও বিচার পায় না। এমনকি সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করলেও তারা নিয়মিত মজুরি পায় না। তাদের ঘুমানোর জায়গাও নেই। গৃহকর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করতে গৃহকর্মী ও নিয়োগকারী উভয়ের প্রশিক্ষণ দরকার।

তাদের কোনও পরিচয় নেই

গৃহকর্মীদের নাম কোথাও রেজিস্ট্রেশন করা হয় না এবং গৃহশ্রমিক হিসেবে কোনও পরিচয়পত্র বা নিয়োগপত্র থাকে না। ফলে তাদের সম্পর্কে কোথাও কোনও তথ্য থাকে না। যেসব শিশুকে বাসায় কাজের জন্য আনা হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের বিষয়ে কোনও তথ্যই নেই। এদিকে ২০১৫ সালে ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা নীতিমালা’ প্রণয়ন করা হলেও সেটাকে আইনে পরিণত করা সম্ভব হয়নি। রাজধানীতে কোন বাসায় কে থাকছে, তার কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকার কারণে এসব শিশুর প্রতি হওয়া অনাচারের বিচার করা সম্ভব হচ্ছে না, বলছেন অধিকারকর্মীরা। বাসায় যে শিশুরা কাজ করে, তাদের কাজটাকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকাভুক্ত করা দরকার উল্লেখ করে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের সমন্বয়কারী সাফিয়া সামি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের যে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছিল ২০১৫ সালে, সেটা আইনে পরিণত করা এবং শিশুদের বিষয়টি আলাদা করে উল্লেখ রাখা জরুরি। উন্নয়নকর্মীদের ঘোষণা দিতে হয় যে, তারা বাসায় কোনও শিশু শ্রমিক রাখতে পারবে না। সরকারি চাকুরেদের ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম করলে অর্ধেক অনাচার-নির্যাতন কমে আসবে। অনেকেই বলেন, এই শিশুরা ঘরে নিরাপদে থাকার সুযোগ পায়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের গবেষণা ভিন্ন কথা বলে। এই শিশুরা বাসায় যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের নিপীড়নের শিকার হয়।’

বৈষম্য শিখছে শিশুকালেই

বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত রিফাত হোসেনের বাসায় এক শিশু গৃহকর্মী থাকে। তার কাজ হচ্ছে, রিফাতের ৫ বছরের সন্তানের সঙ্গে সঙ্গে থাকা, ছোটখাটো হুকুম তামিল করা, স্কুলের ব্যাগটা সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া। সঙ্গে সঙ্গে থাকলেও রিফাত হোসেনের সন্তান যা খায়, সেই শিশু গৃহকর্মীকে সেই খাবার দেওয়া হয় না। তিন বেলা সঠিক পরিমাণে খাবার দেওয়া হয় বলে রিফাত কখনও মনেই করেননি যে, এতে করে শিশুকর্মীটির মনে বৈষম্যের অনুভূতি জন্ম হচ্ছে। এক সময় রিফাত টের পান, তার শিশুকে খাবার খাওয়ানোর সময় গৃহকর্মী শিশুটি তা মেঝেতে ফেলে খাওয়াচ্ছে। প্রথমে বকাঝকা ও ‘ছোটখাটো শাস্তি’ দিলেও রিফাতের এক মানসিক চিকিৎসক বন্ধুর মাধ্যমে ‍বুঝতে পারেন যে, গৃহকর্মী শিশুটির প্রতি তাদের অবহেলা— তাকে এই মানসিকতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

মানসিক চিকিৎসক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মালিকের সন্তানের সঙ্গে অন্তরঙ্গভাবে থাকলেও অধিকার যে ভিন্ন, তা বুঝতে বুঝতে বড় হওয়ার পর এই শিশুদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা তৈরি হয়।’

বাংলাদেশে বাসাবাড়িতে যে শিশুদের আনা হয়, তারা নিজেরা কিছু বলতে পারে না। তারা এ শহরের পথঘাট কিছুই চেনে না উল্লেখ করে যোগাযোগকর্মী শাহানা হুদা বলেন, ‘এই না চেনা-জানার কারণে তাদের অনেকে নির্যাতনের হাত থেকে পালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। কেউ কেউ পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে, আবার অনেকে যৌনদাসীও হয়ে যায়। নিয়োগকারী পরিবারের তরফে হয়তো সামান্য কিছু টাকা দিয়ে পালিয়ে যাওয়া মেয়ের খোঁজ নেওয়া থেকে বাবা-মাকে বিরত রাখা যায়।’ তিনি বলেন, ‘এই শিশুদের জন্য নিরাপত্তামূলক কোনও ব্যবস্থা নেই, নেই অভিযোগ জানানোর জায়গা। তাই গৃহশ্রমিক নিয়ে কর্মরত সংগঠনগুলো মনে করে, গৃহশ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার না দিলে এর সমাধান হবে না। একইসঙ্গে সংগঠনকে মামলার বাদী হওয়ার ক্ষমতা দিয়ে আইন করতে হবে।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

মধ্যনগরে আওয়ামী লীগ নেতার দখল থেকে সরকারী ভুমি পুনরুদ্ধার

কোথা থেকে আসে কোথায় হারায়, সে হিসাব নেই যে শিশুদের

আপডেট সময় ১২:১৪:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুন ২০২৩

পথশিশু রেশমা গত তিন বছর ধরে পথে থাকছে। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন— কোথাও পুড়ে গেছে, কোথাও মারধরের দাগ এখনও। শিশুটি বলছে, সে জানে না তার বাড়ি কোথায়? বাবা-মাকে খুঁজে পায়নি। শিশু রেশমা একটি বাড়িতে কাজ করতো। খুব ছোট থাকতে সেই বাসার শিশুর খেলার সাথী হিসেবে তাকে আনা হয়েছিল। কিন্তু হেনো কোনও কাজ ছিল না— যা তাকে করতে হতো। গোসলের পানি প্রস্তুত করা, গৃহকর্ত্রী যখন তার শিশু সন্তানকে খাবার খাওয়াতেন, তখন খাবারের প্লেট নিয়ে পাশে  দাঁড়িয়ে থাকা, শিশুটির প্রশ্রাব-পায়খানা পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে নানা ধরনের কাজ করতে হতো তাকে। ওই বাসার শিশুটি কোনও কারণে ব্যথা পেলে দ্বিগুণ ব্যথা দেওয়া হতো রেশমাকে। কখনও মাথায় আঘাত করা, চড়-থাপ্পড় থেকে শুরু করে অল্পবিস্তর গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, সবই চলতো তার ওপরে। একবার ওই বাসার ড্রাইভারের সহায়তায় সে বাসা থেকে পালিয়ে যায় ঠিকই, কিন্তু কোথায় যাবে? ঢাকার রাস্তায় থাকতে থাকতে এখন রাস্তাই হয়েছে তার ঠিকানা। মাঝে বাবা- মায়ের খোঁজ পেয়েছিল, তবু আর ফিরতে পারেনি গ্রামে।

রাজধানীতে ঘরে ঘরে শিশু শ্রমিকের খোঁজ মেলে। কেউ একা থাকতে পারে না বলে, কেউবা কাজে সহায়তা পাওয়া যাবে ভেবে, আবার কেউ নিজের শিশুর খেলার সঙ্গী হিসেবে গ্রাম থেকে শিশুদের নিয়ে আসেন। এদের সংখ্যা কত, কেউ জানে না। এই শিশুদের হারিয়ে যাওয়ার খবরও কেউ রাখে না। শিশু শ্রমিক ও গৃহকর্মীদের নিয়ে যারা কাজ করেন, তারা বলছেন, রাজধানীর বাসাবাড়িতে স্থায়ী গৃহকর্মীদের বেশিরভাগই শিশু। বরাবরই তাদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সঠিক নিবন্ধন ব্যবস্থাই পারে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। কাজ করতে গিয়ে তারা হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের শিকার হলেও বিচার পায় না। এমনকি সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করলেও তারা নিয়মিত মজুরি পায় না। তাদের ঘুমানোর জায়গাও নেই। গৃহকর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করতে গৃহকর্মী ও নিয়োগকারী উভয়ের প্রশিক্ষণ দরকার।

তাদের কোনও পরিচয় নেই

গৃহকর্মীদের নাম কোথাও রেজিস্ট্রেশন করা হয় না এবং গৃহশ্রমিক হিসেবে কোনও পরিচয়পত্র বা নিয়োগপত্র থাকে না। ফলে তাদের সম্পর্কে কোথাও কোনও তথ্য থাকে না। যেসব শিশুকে বাসায় কাজের জন্য আনা হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের বিষয়ে কোনও তথ্যই নেই। এদিকে ২০১৫ সালে ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা নীতিমালা’ প্রণয়ন করা হলেও সেটাকে আইনে পরিণত করা সম্ভব হয়নি। রাজধানীতে কোন বাসায় কে থাকছে, তার কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকার কারণে এসব শিশুর প্রতি হওয়া অনাচারের বিচার করা সম্ভব হচ্ছে না, বলছেন অধিকারকর্মীরা। বাসায় যে শিশুরা কাজ করে, তাদের কাজটাকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকাভুক্ত করা দরকার উল্লেখ করে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের সমন্বয়কারী সাফিয়া সামি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের যে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছিল ২০১৫ সালে, সেটা আইনে পরিণত করা এবং শিশুদের বিষয়টি আলাদা করে উল্লেখ রাখা জরুরি। উন্নয়নকর্মীদের ঘোষণা দিতে হয় যে, তারা বাসায় কোনও শিশু শ্রমিক রাখতে পারবে না। সরকারি চাকুরেদের ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম করলে অর্ধেক অনাচার-নির্যাতন কমে আসবে। অনেকেই বলেন, এই শিশুরা ঘরে নিরাপদে থাকার সুযোগ পায়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের গবেষণা ভিন্ন কথা বলে। এই শিশুরা বাসায় যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের নিপীড়নের শিকার হয়।’

বৈষম্য শিখছে শিশুকালেই

বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত রিফাত হোসেনের বাসায় এক শিশু গৃহকর্মী থাকে। তার কাজ হচ্ছে, রিফাতের ৫ বছরের সন্তানের সঙ্গে সঙ্গে থাকা, ছোটখাটো হুকুম তামিল করা, স্কুলের ব্যাগটা সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া। সঙ্গে সঙ্গে থাকলেও রিফাত হোসেনের সন্তান যা খায়, সেই শিশু গৃহকর্মীকে সেই খাবার দেওয়া হয় না। তিন বেলা সঠিক পরিমাণে খাবার দেওয়া হয় বলে রিফাত কখনও মনেই করেননি যে, এতে করে শিশুকর্মীটির মনে বৈষম্যের অনুভূতি জন্ম হচ্ছে। এক সময় রিফাত টের পান, তার শিশুকে খাবার খাওয়ানোর সময় গৃহকর্মী শিশুটি তা মেঝেতে ফেলে খাওয়াচ্ছে। প্রথমে বকাঝকা ও ‘ছোটখাটো শাস্তি’ দিলেও রিফাতের এক মানসিক চিকিৎসক বন্ধুর মাধ্যমে ‍বুঝতে পারেন যে, গৃহকর্মী শিশুটির প্রতি তাদের অবহেলা— তাকে এই মানসিকতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

মানসিক চিকিৎসক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মালিকের সন্তানের সঙ্গে অন্তরঙ্গভাবে থাকলেও অধিকার যে ভিন্ন, তা বুঝতে বুঝতে বড় হওয়ার পর এই শিশুদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা তৈরি হয়।’

বাংলাদেশে বাসাবাড়িতে যে শিশুদের আনা হয়, তারা নিজেরা কিছু বলতে পারে না। তারা এ শহরের পথঘাট কিছুই চেনে না উল্লেখ করে যোগাযোগকর্মী শাহানা হুদা বলেন, ‘এই না চেনা-জানার কারণে তাদের অনেকে নির্যাতনের হাত থেকে পালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। কেউ কেউ পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে, আবার অনেকে যৌনদাসীও হয়ে যায়। নিয়োগকারী পরিবারের তরফে হয়তো সামান্য কিছু টাকা দিয়ে পালিয়ে যাওয়া মেয়ের খোঁজ নেওয়া থেকে বাবা-মাকে বিরত রাখা যায়।’ তিনি বলেন, ‘এই শিশুদের জন্য নিরাপত্তামূলক কোনও ব্যবস্থা নেই, নেই অভিযোগ জানানোর জায়গা। তাই গৃহশ্রমিক নিয়ে কর্মরত সংগঠনগুলো মনে করে, গৃহশ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার না দিলে এর সমাধান হবে না। একইসঙ্গে সংগঠনকে মামলার বাদী হওয়ার ক্ষমতা দিয়ে আইন করতে হবে।’