ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণায় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম। তিনি বলেন, ‘এটি একটি রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এখানে কমিশনের কোনও বক্তব্য নেই। কমিশন সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত আছে।’
মঙ্গলবার (১৩ জুন) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ইসি সচিবালয়ের সচিব।
একটি দলের নির্বাচন বর্জনের ফলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হওয়ার বিষয়টি তো আমি বুঝতে পারছি না। কোনও দল নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, সেটা তাদের রাজনৈতিক এখতিয়ার। রাজনৈতিকভাবে রাজনৈতিক দল তা ফয়সালা করবে। নির্বাচন কমিশনের কাজ হচ্ছে সবার জন্য একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের প্রস্তুতি রাখা। আমরা সেটা অব্যাহত রাখবো।’
জাহাংগীর আলম বলেন, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। প্রতীক পেয়েছেন। প্রতীক পাওয়ার পর নির্বাচন বর্জন করে সে ক্ষেত্রে কমিশন কী করবে? ব্যালটে তার প্রতীক থাকবে।
নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘এখানে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার কিছু নেই। একটি রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধর কিছু নেই। প্রতিটি জায়গায় চার থেকে পাঁচ জন করে প্রার্থী আছেন। সিলেটে একটা ওয়ার্ডে ১৯ জন প্রার্থী আছেন। সেটা কি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না?’
এনআইডি স্থানান্তরে বক্তব্য নেই
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন কার্যক্রম ইসি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, সাংবিধানিকভাবে ইসিকে কিছু দায়িত্ব দেওয়া আছে। সেখানে এনআইডির বিষয়টি নেই। আইনে বলা আছে, নির্বাচন কমিশনের ওপর অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করবে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে যখন ছবি-সমৃদ্ধ ভোটার তালিকা হয়েছে, তার উপজাত হিসেবে প্রায় ৮ কোটি ৩ লাখ ভোটারের তথ্যসমৃদ্ধ ভোটার তালিকা থেকে আইন করে সেখান থেকে এনআইডি দেওয়া শুরু হয়। তার দায়িত্ব দেওয়া হয় নির্বাচন কমিশনকে। রাষ্ট্র আবার সেই আইন সংশোধন করে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিচ্ছে। এতে নির্বাচন কমিশনের কোনও বক্তব্য নেই। নির্বাচন কমিশন সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে চলছে, চলবে।
বরিশালে তদন্তের নির্দেশ
ইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিছু অনিয়মের কথা প্রচার হয়েছে। মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মো. ফয়জুল করিমের ওপর হামলা, বরিশালে হাতপাখার মেয়র প্রার্থী আহত, লাঠি নিয়ে বিক্ষোভ, বরিশাল নগরীর কাউনিয়া ব্রাঞ্চ হাফিজিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে বুথে ঢুকে ভোটারকে নির্দেশনা দিয়েছেন নৌকার এজেন্ট। এ সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, এমন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সে বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বরিশালের জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে আগামী ১৪ জুনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।