কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্রীদের ধূমপান করার দৃশ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়ায় এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও এক ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নে।
সুলতানপুর মাহতাবুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সুলতানপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরে জিনিয়া খাতুন নামের ওই শিক্ষার্থী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করে।
নিহত স্কুল ছাত্রী গ্রামের জিল্লুর রহমানের মেয়ে ও ওই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত চলছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহতের মামা জাহিদ হোসেন বলেন, পাঁচজন ছাত্রী বেলা সাড়ে তিনটার দিকে স্কুলের ছাদে ধূমপান করছিল। সেখানে আমার ভাগ্নি জিনিয়াও ছিল। সিগারেট খাওয়ার দৃশ্য বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লাল্টু ও ওয়ালিউর রহমান তাদের মুঠোফোনে ভিডিও করে। পরে ছাত্রীদের অফিস কক্ষে ডেকে মারধর করে ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। সেই সঙ্গে টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়াসহ অভিভাবকদের জানানোর ভয় দেখান। বিদ্যালয় ছুটির পর আমার ভাগ্নি বাড়িতে এসে নিজের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনায় অন্য এক ছাত্রীও নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তাকে উদ্ধার করে প্রাণ রক্ষা করা গেছে। তিনি আরও বলেন, ;শিক্ষার্থীরা ভুল করতেই পারে, তাই বলে কি শিক্ষকরা এভাবে ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখাবেন? আমি দুই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করছি। কঠোর বিচার দাবি করছি’।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক লাল্টুর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ধূমপানের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করার প্রশ্নই আসে না। এমনটি শুনে তাদের ডেকে বিষয়টি অভিভাবকদের জানাবো বলেছিলাম। পরে বিকেলে শুনছি ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। তবে এ ঘটনায় আমি দুঃখ প্রকাশ করছি’।
সুলতানপুর মাহতাবুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ের বাইরে ছিলাম। একজনের মাধ্যমে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাটি জেনেছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি’।