শাল্লা প্রতিনিধি::-সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় হবিবপুর ইউনিয়নের শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় নিয়োগ কমিটির সদস্য ও আছানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইন্দুভূষণ দাসের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে ১৪ আগস্ট সোমবার শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগটি দায়ের করেন আছানপুর গ্রামের বাসিন্দা পাবেল মিয়া।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় ইন্দুভূষণ দাস আছানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় নিয়মবহির্ভূত ভাবে নির্বাচন করে একই ইউনিয়নের শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
এরই সুবাদে তিনি শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ কমিটির সদস্যও তিনি। নিয়োগ কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ লেনদেনে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ করেন তিনিই বিভিন্ন পদে বহাল থেকে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দূর্নীতি করে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেন। এমনকি স্কুল ফাঁকি দিয়ে এলাকায় বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন ও অধিকাংশ সময়ে স্কুলে না গিয়ে তার নিজ বাড়িতে ফিশারিতে মাছ চাষের কাজে ব্যস্ত থাকেন। শুধু তাই নয় তার চাকরিস্থলে উপস্থিত না হয়ে প্রায় দিনই সরকারিভাবে ছুটি না নিয়ে শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ে মিটিং করে।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায় শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরিক্ষার দিনেও নিয়মতান্ত্রিক ছুটি না নিয়ে নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে সারাদিন নিয়োগ কাজে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
তিনি দীর্ঘদিন যাবত নিয়মবহির্ভূত ভাবে এসব করে আসায় এতে করে তার চাকরিস্থল আছানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায় বিগ্ন ঘটছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হতে পারবে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস সালাম বলেন এটা সে হতে পারে না। তিনি বলেন নিয়োগ কমিটির সদস্য হওয়ার প্রশ্নই আসে এটা হওয়ার কোন সুযোগই নেই। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তাকে সর্তক করে দেব যদি সে না মানে তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা শুরু হয়ে যাবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে এই প্রতিবেদক ইন্দুভূষণ দাসের কর্মস্থলে একাধিকবার যান।সেখানে গিয়ে তাকে অনুপস্থিত পাওয়া যায়। এবং মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত নিয়মবহির্ভূতভাবে অন্য একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দুভূষণ দাসকে শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত করা হয়। তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে সবধরনের আর্থিক লেনদেন করেছেন। যার বেশ কয়েকটি রেকর্ড এই প্রতিবেদকের হাতে সংরক্ষিত রয়েছে।
এটা নিয়মবহির্ভূত কাজ উল্লেখ করে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস রায়ও ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অন্য কোন বিষয়ে জড়িত থাকার বিধান নেই। এবং শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়ম,দূর্নীতি ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনে নিয়োগ বাতিল করা হবে।
জানা যায় শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগের বিষয়ে ইতোমধ্যেই তদন্তভার পেয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু তালেব।