সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় ঘর বাধাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের ভয়াবহ সংঘর্ষে দুজন নিহত ও পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার খবর এসেছে। মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার ৪নং শাল্লা ইউনিয়নের সাতপাড়া বাজারে পুলিশের উপস্থিতিতেই এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কার্তিকপুর গ্রামের মুজিবুর রহমান ও ইউসুফ মিয়ার গ্রুপের মধ্যে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় থানা পুলিশের একটি টিম সাতপাড়া বাজারে গিয়ে ৯ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ সংঘর্ষে মুজিবুর রহমান গ্রুপের টেঁটাবিদ্ধ হয়ে ওই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমান চিকিৎসার জন্য হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তার। অন্যদিকে ইউসুফ মিয়া গ্রুপের হেলাল মিয়া নাম (২৫) অপরজন মময়মনসিংহে চিকিৎসার জন্যে যাওয়ার পথে তারও মৃত্যু হয়। হেলাল মিয়া কার্তিকপুর গ্রামের কুদ্দস মিয়ার ছেলে।
ইউসুফ মিয়া মুঠোফোনে বলেন আামাদের পক্ষের বেলাল মিয়া নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের পক্ষের চারজন আহত হয়েছে। তবে পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে জানান তিনি। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে শাল্লা থানার এসআই আলীম উদ্দিন আহত হয়ে শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। সরেজমিনে দেখা যায় এসআই আলীম উদ্দিনের নাক ফেটে গেছে। তার মুখেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শাল্লা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুস ছাত্তার মিয়া বলেন সংঘর্ষে কার্তিকপুর গ্রামের ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমান নিহত হয়েছে। তবে কতজন আহত হয়েছে তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি। ওই ওয়ার্ডের বর্তামান মেম্বার আমির হামজা বলেন সাতপাড়া বাজার সংলগ্ন রাস্তার পাশে একটি জায়গায় ঘর বাধে কার্তিকপুর গ্রামের নিক্সন মিয়া। তার দাবি জায়গাটি খাস জায়গা। অন্যদিকে একই গ্রামের মুজিবুর রহমান তার রেকর্ডের জায়গা বলে বাঁধা দেয় নিক্সন মিয়াকে। এতেই উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমানের মৃত্যু হয়। পুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) আহত হন।
তিনি আরো বলেন, শুনেছি হেলাল মিয়া নামের আরেকজন মারা গেছে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে বলে জানান তিনি।
শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন সংঘর্ষে হাবিবুর রহমান নামে একজন মারা গেছেন। আামাদের একজন এসআই আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৯ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করতে হয়েছে। অন্যতায় আরো কয়েকটি মার্ডার (খুন) হয়ে যেতো। আমি এখনো ঘটনাস্থলে রয়েছি। তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।