মদ বিক্রির নতুন রেকর্ড গড়েছে দেশি মদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোং কোম্পানি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৭ লাখ ৭৩ হাজার প্রুফ লিটার মদ বিক্রি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যার মূল্য ৪৩৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এতে কোম্পানির আয় হয়েছে ১৫২ কোটি টাকা। এটি কোম্পানির ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিক্রির রেকর্ড। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৯ লাখ ৬৭ হাজার লিটার মদ বিক্রি করেছিল কেরুর ডিস্টিলারি ইউনিট।
বৃহস্পতিবার (০৩ আগস্ট) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেরু অ্যান্ড কোংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন। দেশের একমাত্র লাইসেন্সধারী অ্যালকোহল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোং। চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় প্রতিষ্ঠানটির কারখানা।
মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৭ লাখ ৭৩ হাজার প্রুফ লিটার মদ বিক্রি হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে প্রায় আট লাখ প্রুফ লিটার বেশি। এবার রাজস্ব জমা দিয়েছি ১৪৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গত বছর ৪৯ লাখ ৬৭ হাজার লিটার বিক্রি হয়েছিল। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৪২ হাজার ৬১৯ লিটার বিলেতি ও ৩২ লাখ ৮০ হাজার ২২০ লিটার বাংলা মদ।’
কোম্পানির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কেরুর মোট চারটি ইউনিট রয়েছে। সেগুলো হলো চিনিকল, ডিস্টিলারি, বাণিজ্যিক খামার ও জৈব সার।
ডিস্টিলারি ও বাণিজ্যিক খামার ছাড়া বাকি দুই ইউনিটে প্রতি বছর লোকসান গুনতে হয় জানিয়ে এমডি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি লাভ দেখিয়েছে ডিস্টিলারি ও খামার ইউনিট। দুই ইউনিটের লোকসান ডিস্টিলারি ইউনিট থেকে পূরণ করা হয়। ফলে লোকসান পুষিয়ে কেরুর আয় থাকবে ৮০ কোটি টাকার মতো।’
চিনিকলে উৎপাদন বাড়াতে আখ উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আখ উৎপাদন বাড়াতে আমরা নিয়মিত কাজ করছি। কৃষকদের আখ চাষে আগ্রহী করে তুলতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আখের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে ডিস্টিলারি ও চিনিকল ইউনিট আধুনিকায়নের কাজ চলছে।’
কোম্পানির দেওয়া তথ্যমতে, কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ডিস্টিলারি ইউনিট ৯টি ব্র্যান্ডের মদ তৈরি করে। প্রতি মাসে প্রায় ২১ হাজার কেসের বেশি মদ বিক্রি করছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৭৫ মিলিলিটার, ৩৭৫ মিলিলিটার ও ৭৫০ মিলিলিটারের বোতলে বিভিন্ন ধরনের মদ বাজারজাত করছে। একটি কেসে ৭৫০ মিলিলিটারের ১২টি, ৩৭৫ মিলিলিটারের ২৪টি এবং ১৭৫ মিলিলিটারের ৪৮টি বোতল থাকে।
মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘আমাদের কারখানা আরও বেশি উৎপাদনে সক্ষম। তাই ১০২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মদ উৎপাদন কাজ চলমান। এখানে অ্যালকোহলের পাশাপাশি ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সার, চিনি ও গুড়ের মতো অন্যান্য পণ্য উৎপাদন করা হয়।’