পাবেল আহমেদ,শাল্লা::-চলতি মাসের ২ তারিখে চারটি পদে লোকবল নিয়োগ দেন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। তবে নিয়োগের শুরু থেকেই নিয়োগ নিয়ে অভিযোগের কোন শেষ ছিল না। নানা দিদাদন্ধের পর নিয়োগের ২০ দিনের মাথায় আজ ২০ আগস্ট রবিবার নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং ও নিয়োগ কমিটি।
জানা যায় এলাকাবাসীকে নিয়ে আজকে মিটিংয়ে বসেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি এবং সেই মিটিংয়ে সবার সর্বসম্মতিক্রমে নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নিয়োগ বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে নিয়োগ কমিটির সভাপতি পলাশ রঞ্জন দাস বলেন পূর্ব থেকেই এই নিয়োগে দূর্নীতির আবাস পেয়েছিলাম তাই আমাদের স্বচ্ছতা থেকে নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এদিকে শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবৈধ নিয়োগ নিয়ে বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয় । এরপরই নিয়োগ কমিটি নরেচরে বসে।পরিশেষে অবৈধ নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে এই নিয়োগে অনিয়ম,দূর্নীতি ও অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেনের মূলহোতা ইন্দুভূষণ দাসকে আজকের মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি!
এরআগে গত রবিবার (৬ আগস্ট) শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ে চারটি পদে নিয়োগে মোটা অঙ্কের ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন এলাকাবাসী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।
জানা যায়, শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও আয়া চারটি পদেই মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ দিয়েছিল কমিটি। এবং চারটি পদেই মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন এলাকাবাসী ও নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অধিকাংশ পরীক্ষার্থী।
একাধিক সূত্রে জানা যায় আয়া পদে সরসপুর গ্রামের জয়তারা রানী দাশকেও ৪ লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জয়তারা রানী দাসের স্বামী রাসেন্দ্র চন্দ্র দাস পাশ্ববর্তী ফয়েজুল্লাহপুর গ্রামের নাছিমা আক্তারের কাছে জমি বিক্রি করে ৪ লক্ষ টাকা যোগাড় করে দিয়েছেন নিয়োগ কমিটির সদস্য ইন্দুভূষণ দাসকে।
এছাড়াও এই অবৈধ অর্থ লেনদেনে নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন চৌধুরী ও সদস্য ইন্দুভূষণ দাস সরাসরি জড়িত থাকার একাধিক প্রমাণাদি পাওয়া গেছে। এবং এসব অনিয়ম,দূর্নীতি ও অবৈধ ঘুষ বাণিজ্যের মূলহোতা আছানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও নিয়োগ কমিটির সদস্য ইন্দুভূষণ দাস।
ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে স্থানীয় ইউপি সদস্য সুধীর চন্দ্র দাসের ছেলেকে পরিছন্নতাকর্মী পদে ও সাবেক ইউপি সদস্য রথীকান্ত দাসের ছেলেকে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে নিয়োগ দেওয়ায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় উটে এবং এই অবৈধ নিয়োগের শুরু থেকেই অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন নিয়োগ কমিটির সভাপতি স্বয়ং পলাশ রঞ্জন দাস নিজেই।
এদিকে নিয়মবহির্ভূতভাবে অন্য একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দুভূষণ দাসকে শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত করায় এনিয়েও সমালোচনার ঝড় বইছে উপজেলা জুড়ে। এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে সবধরনের আর্থিক লেনদেন করেছেন তিনি।