মিয়ানমারের একটি জান্তা আদালত শুক্রবার দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সুচির বিরুদ্ধে ১৮ মাসব্যাপী চলা বিচারের চূড়ান্ত রায় দিয়েছে। শুক্রবারের রায়ের পর মোট ৩৩ বছরের সাজা হল এই নোবেল বিজয়ীর। সুচিকে দুর্নীতির পাঁচটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং তাকে সম্মিলিত সাত বছরের জন্য কারাদণ্ড দিয়েছে। একটি আইনি সূত্রের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী তার সরকারকে পতনের পর থেকে সূচি বন্দী জীবন যাপন করছেন। দুর্নীতি থেকে শুরু করে অবৈধভাবে ওয়াকি-টকি রাখা এবং কোভিড বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করা জন্য তাকে ১৪টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। যার সবকটিই তিনি অযৌক্তিক বলে বর্ণনা করেছেন।
মামলা সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ১২ মাসে অন্তত ২৬ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।
বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে সূত্রটি পরিচয় প্রকাশ না করতে বলা হয়েছে। ক্ষমতাসীন জান্তার একজন মুখপাত্রের সাথে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে পৌঁছানো যায়নি।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, জুন মাসে তাকে গৃহবন্দী থেকে সেনা-নির্মিত নেপিদোর একটি কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়। যেখানে একটি বিশেষ আদালতে তার বিচার চলতে থাকে। ৭৭ বছর বয়সী সুচি সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ব্যতিত সাংবাদিকদের আদালতের শুনানিতে উপস্থিত হতে নিষেধ করা হয় এবং সুচির আইনজীবীদেরও মিডিয়ার সাথে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।
২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের সময় ব্যাপক ভোট জালিয়াতির অভিযোগে ২০২১ সালে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টি ব্যাপকভাবে জয়লাভ করেছে, যদিও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলেছেন যে, ভোট মূলত অবাধ এবং সুষ্ঠু ছিল।
উল্লেখ্য, অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার অশান্তির মধ্যে রয়েছে। সামরিক বাহিনী তার শাসনের সমস্ত বিরোধিতার বিরুদ্ধে দমন করেছে, কিন্তু উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে। স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠীর মতে, ভিন্নমতের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে ২ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে। এছাড়াও সাড়ে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে।