শাল্লা প্রতিনিধি::-
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত সেনসহ আরো তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজি ও মানহানীর মামলা দায়ের করেছে হাওর রক্ষা বাঁধের (পিআইসি) সদস্য সচিব। গত মঙ্গলবার সকাল ১১টায় আমলগ্রহনকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেন ভান্ডারবিল হাওর উপ-প্রকল্পের ১৯নং পিআইসির সদস্য সচিব পাবেল আহমেদ। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, উপজেলার চাকুয়া গ্রামের গৌরাঙ্গ দাসের ছেলে প্রীতম দাস, তন্ময় দেব, নারকিলা গ্রামের জান্টু দাসের ছেলে রাজু চন্দ্র দাস।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৭ এপ্রিল শুক্রবার ভান্ডারবিল হাওরের উপ-প্রকল্প ১৯ নং পিআইসিতে কাজ হয়নি বলে বাঁধে কর্মরত শ্রমিকদের শাসান এমনকি হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্দোলন করার হুমকি দেয়া হয়। পরবর্তীতে এই প্রকল্পের সদস্য সচিব বাঁধে আসলে তার কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন অন্য তার দলবল নিয়ে কাজ বন্ধ রাখার হুমকি দেন,কিছুদিন কাজ বন্ধও ছিল এবং টাকা দিলে এই সংগঠন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ করা হবে না বলে পাবেল আহমেদকে আশ্বস্থ করেন। পরে তিনি টাকা না দেওয়ায় ১৯ নং প্রকল্পের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অপপ্রচার চালায়। মামলায় আরো উল্লেখ করা হয় একই হাওরের ২৭ নং প্রকল্পে সভাপতির কাছেও চাঁদা চেয়েছেন হাওর আন্দোলনের এই নেতা। যা শাল্লা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে প্রকল্পের সভাপতি। বর্তমানে অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে।
মামলার বাদী পাবেল আহমেদ বলেন, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্তসেন সহ আরো বেশ কয়েকজন লোক আমার বাঁধে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। আমি এই বিষয়ে সুবিচার পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
মামলার পক্ষের আইনজীবি এড. প্রবীর রায় বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের শাল্লা শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত সেনসহ আরো তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা তদন্ত করার জন্য শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নাম বিক্রি করে দীর্ঘদিন যাবত চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন ধরনের অন্যায় ও অনিয়ম করে আসছে কথিত এই জয়ন্ত সেন সহ তার সহযোগীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইতোমধ্যেই এই জয়ন্ত সেনের চাঁদাবাজি একটি অডিও রেকর্ড ভাইরালও হয়েছে তাতে উপজেলা জোড়ে দেখা দিয়েছে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড়। জানা যায় দীর্ঘদিন ধরে অনিবন্ধিত সংগঠন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের প্রভাব কাটিয়ে বিভিন্ন অফিসে ও বিভিন্ন প্রকল্পের সদস্যদের কাছে চাঁদাবাজি সহ অসদাচরণ করাই হল তার কাজ। তবে কয়েকজন প্রকল্পের সদস্য জানিয়েছেন এই জয়ন্ত সেনের মত লোকদের দৌরাত্ম না থামালে এই জয়ন্ত সেন ভবিষ্যতে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটাতে পারে মনে করছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাওর বাঁচা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা বলেন ১৩ মাস ধরে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং করা হচ্ছে না। তিনি বলেন সুনামধন্য এই সংগঠনটি কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিদের নিজ স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে ও সংগঠনের সুনাম ক্ষুন্নে লিপ্তে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন এই সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কয়েকজন নেতা।