গতকালের নয়াপল্টনের ঘটনায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা পরিকল্পিত, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অসৎ উদ্দেশ্যে বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিএনপি পরিকল্পিতভাবে জমায়েত শুরু করেছিল। এ দায় বিএনপির নিতে হবে।
আজ সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য তারা (বিএনপি) গতকাল থেকেই জমায়েত শুরু করে। সে ধারাবাহিকতায় পুলিশের ওপর আক্রমণও করে। তাই পুলিশ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়। এ সময় বিএনপি সমাবেশ নয় বিশৃঙ্খল করতে চায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, তারা মহাসমাবেশ ডেকেছে ১০ ডিসেম্বর। কাল (বুধবার) ছিল ৭ ডিসেম্বর। তারা কাল থেকেই রাস্তায় জমায়েত শুরু করে। রাস্তা ছাড়তে তাদের বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও উপেক্ষা করা হয়। পরে রাস্তার একটি লেন ছেড়ে দিতে তাদের বারবার অনুরোধ করা হয়।
ডিসি হায়াত তাদের সাথে কথা বলতে গেলে তাকে আঘাত করা হয়। তার বডিগার্ডকে দা দিয়ে কোপ দেওয়া হয়। এখান থেকেই শুরু। পুলিশের ৩৫ সদস্য কাল আহত হয়েছেন। ৮ জন পুলিশ সদস্য হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এরপর পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। তখন পুলিশ বাধ্য হয়ে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশ ঢুকলে ১৫টি ককটেল পায়। তাদের বারবার বলা হয়েছে, জনসমাবেশ করতে মাঠ ব্যবহার করতে। সারাদেশে মাঠ ব্যবহার করে তারা সমাবেশ করেছে, যাতে সরকার সার্বিক সহায়তা করেছে। পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিয়েছে। নিজেরা নিজেরা মারামারি করা ছাড়া সেখানে অন্য কিছু ঘটেনি। কিন্তু সেই অনুরোধ রাখেনি।
তারা সবসময় বলে আসছে ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটাবে। বড় সমাবেশ করতেই তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যখন সেখানে তারা যেতে অনীহা প্রকাশ করে, তখন মিরপুর পল্লবীর মাঠ, কালসি মাঠ, ইজতেমা ও বাণিজ্যমেলার মেলার মাঠ ব্যবহার করতে বলা হয়। কিন্তু তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অসৎ উদ্দেশ্যে নয়া পল্টনে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়।
তারা সত্যিকার অর্থে দেশে গণ্ডগোল পাকাতে চেয়েছে। নয়াপল্টনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি নাটক করেছেন। এতদিন তিনি হুঙ্কার দিচ্ছিলেন, কিন্তু তিনি যখন নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে বসেছিলেন, তখন আশেপাশে কেউ ছিল না। তাদের নেতাকর্মী কেউ ছিল না, সাংবাদিকরা ছাড়া।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি সেখানে অনেকগুলো ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এতে একজন সাধারণ নাগরিক মারা গেছেন। সেটির পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আজ পাওয়া যাবে। পুলিশ ধারণা করেছে, ওই ব্যক্তি ককটেল বিস্ফোরণে মারা গেছেন। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়া গেলেই এ বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া যাবে। এভাবে দেশে বিশৃঙ্খলা ও আগুন সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চায় বিএনপি।