পাবেল আহমেদ,শাল্লা প্রতিনিধি::-
দৈব-দূর্বিপাক, হতাশা আর শত সমস্যার মধ্যেও কেউ কেউ আশার আলো দেখান। সম্ভাবনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অর্থ-বিত্তে ধনাঢ্য পরিবারে বসবাস আর ক্ষমতার উচ্চাসনে অবস্থান করেও নিজেকে দেশের উন্নয়ন আর জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে বিলিয়ে দিচ্ছেন, তাদের অন্যতম একজন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। অনেকে দারিদ্র বিমোচন বা বেকারত্ব ঘুচিয়ে স্বাবলম্বি হতে স্বল্প পূঁজির কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। কিন্তু নিতান্তই শখের বসে গড়া খামার যখন লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, তখন তা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় উৎসাহের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।
তেমনই সম্ভবনাময় উৎসাহ ও অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শাল্লা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। নিজ বাসভবনের নির্ধারিত স্থানে বিশাল আকারে গড়ে তুলেছেন চৌধুরী এগ্রো ফার্ম নামের বহুমুখী বাণিজ্যিক আকারের একটি প্রতিষ্ঠান। যা দেখে উৎসাহ পেয়ে উপজেলার আরো ১৫-২০ টি খামার গড়ে তুলেছে এলাকার অনেক যুবক। যা বেকারত্ব দূর করা সহ স্বাবলম্বী হওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এলাকার অনেক যুবকেরা। এই এগ্রো ফার্মে বড় পরিসরে প্রতিষ্ঠান হল গরুর খামার। জানা যায় এই খামারটির সফলতায় অনুপ্রাণীত হয়ে উপজেলায় ছোট-বড় ২০টিরও বেশী গরুর খামার বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে।
খামারটির পরিবেশ, অবকাঠামোসহ সবকিছুই নতুন ও ব্যতিক্রমধর্মী। বর্তমানে এটিই শাল্লা উপজেলার সবচেয়ে বড় গরুর খামার। খামারে কর্মরতরা জানান, খড়, খৈল, ঘাস,ভুট্টা,ভুসিসহ সব ধরণের দেশীয় ও প্রকৃতিক উৎস্য থেকে প্রাপ্ত খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। চৌধুরী এগ্রো ফার্মে দেশি ও বিদেশি জাতের ছোট বড় গরুর সংখ্যা রয়েছে ৯৫টি সাথে রয়েছে ছাগল,ভেড়া ও মহিষের খামার। মহিষ রয়েছে ৫২টি ছাগলও ভেড়া রয়েছে ৭০টি।এছাড়াও এই ফার্মে স্থানীয় বেশ কয়েকজন বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। খামার পরিচালনায় রয়েছেন ৪-৫ জন যুবক। ঘাসের উৎপাদনের জন্য নিজের জমিতে বিশাল আয়তনের রয়েছে ঘাস চাষ। ধীরে ধীরে সেই খামারটির পরিসর বড় হচ্ছে। এই ফার্মের স্বর্তাধিকারী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ হয়ে উঠেছেন উপজেলার গরু খামারি ও যুবকদের আইডল।
চৌধুরী এগ্রো ফার্মের মালিক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন,আমার নিজের গরুগুলো আমি নিজেই ধুয়ে দেই,আগের গরুগুলো বিক্রি করে এই গরুগুলো কিনেছি তিনি বলেন আমি আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈশিষ্টগুলো আমি অনুসরণ করি। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তার নিজের বাসভবনে গেরস্থ করে আসছেন হাঁসমুরগি,মাছচাষ ও গরুছাগল পালন করে আসছেন সেসব অনুসরণ করে আমিও এই খামারটি গড়ে তুলেছি। তিনি আরো বলেন আমার পরিবারের মাছমাংস যোগান দিতে গিয়ে বাজার থেকে কিনতে হয় না। আমার খামারের গরুর মাংস ও পিশারী থেকে মাছ দিয়ে পরিবারের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মিটিয়ে থাকি। আমার কাজ দেখে এলাকার আরো মানুষ খামারের প্রতি উৎসাহিত হউক এটাই আমার সফলতা ও সেটাই আমি চাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় খামারের এককোনায় তিনি সবজির বাগানও লাগিয়েছে যা থেকে তার নিজ পরিবারের সবজির চাহিদা মেটাতে পারছেন। খামার সূত্রে জানা যায় চৌধুরী এগ্রো ফার্মের এই খামারটিতে ২-৩ লক্ষ টাকা মূল্যের গরুও রয়েছে এবং বর্তমান বাজার মূল্যে প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার শুধু গরুই রয়েছে তার ফার্মে এবং সেই গরুর দুধ শাল্লা সদরস্থ ঘুঙ্গিয়ার গাঁও বাজার সহ দেশের আরো বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ধরনের একটা অবদান রাখছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। এদিকে খামারের পশুদের সবুজ ঘাসের চাহিদা মেটাতে প্রায় ৯ বিঘা তার নিজ জমিতে সবুজ ঘাস ফলানো হয়েছে। যে ঘাসগুলো খামারের গাভীদের অধিক দুধ দহনে বিরাট ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতে আরো বড় আকারের এগ্রো ফার্ম করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান চৌধুরী এগ্রো ফার্মের মালিক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
ছাত্রলীগ নেতা মো: শামীম মিয়া বলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ একজন সফল খামারি। শামীম বলেন আমি নিজে দেখেছি একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও খামারের প্রতি তিনি কতটুকু যত্নশীল তিনি নিজে তার খামারে অনেক শ্রম দেন তিনি আমাদের মত হাজারো যুবকের আদর্শ ও অনুপ্রেরণা। প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: সজীব হাওলাদার বলেন শাল্লায় অনেক খামারিরা কৃমিনাশক দেয় না যদি দিত তাহলে অনেক ভাল হত। তিনি বলেন প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনীতে প্রথম হয়েছিল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের খামারের একটা গরু। তার খামারের ব্যবস্হাপনা অনেক সুন্দর তার খামারে আমি নিয়মিত যাই যেকোনো ধরনের সমস্যা হলে ঔষধ দিয়ে থাকি।