ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo শান্তিগঞ্জে এসইডিপি প্রকল্পের উদ্যােগে কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ Logo শান্তিগঞ্জে আসন্ন ঝুলন যাত্রা সফল করতে প্রশাসন ও সব মহলের ঐক্যবদ্ধ প্রতিশ্রুতি Logo পশ্চিম বীরগাঁও বিএনপি কমিটিতে তোফায়েল ও জসীম, ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ Logo বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে শান্তিগঞ্জে তৃণমূলের জাগরণ Logo পাথারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন মোঃ আক্কাস মিয়া Logo সেনাসদরে ‘ক্যাপস্টোন ২০২৫/০২’ কোর্সের অংশগ্রহণকারীদের পরিদর্শন Logo দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র উদ্যোগে জুলাই পুনর্জাগরণ উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী পালিত Logo পাথারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে “জুলাই পুনর্জাগরণ” অনুষ্ঠান মালা সম্পন্ন Logo সাতগাঁও জীবদারা উচ্চ বিদ্যালয়ে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত Logo সুরমা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে একাদশ শ্রেণিতে মানবিক শাখায় ভর্তি চলছে

দুই ভাইকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও দালাল

আলমগীর ও ফারুক সরদার জীবিকার তাগিদে জীবনের অর্ধেকটা সময় কাটিয়েছেন মালয়েশিয়ায়। সেখানে যা উপার্জন করেছেন তা দিয়ে সংসারের খরচ মিটিয়ে ৩০ লাখ টাকা জমা করেন। এরই মধ্যে দেশে ফিরে ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন দুই ভাই। তারা নীরব কুমার সরকার নিবিড় নামে এক দালালের মাধ্যমে বৈধপথে ইতালি যাওয়ার জন্য ৩০ লাখ টাকায় চুক্তি করেন। কিন্তু দালাল ওই টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই দুই ভাইয়ের অভিযোগ, তাদের টাকায় দালাল নিজেই বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।আলমগীর ও ফারুক ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিকুর রহমান সরদারের ছেলে। অভিযুক্ত দালাল একই মাঝারদিয়া ইউনিয়নের হরিনা গ্রামের মৃত ননী গোপাল সরকারের ছেলে। এদিকে দালালের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব দুই ভাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।ফারুক সরদারের (৫৩) দাবি, পেটের দায়ে ২৭ বছর মালয়েশিয়ায় থেকেছি। আমার ভাই আলমগীরও (৪১) ১৬ বছর সেখানে ছিল। দুই ভাই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জন করে সংসার চালিয়েছি। কষ্ট করে দুই ভাই মিলে ৩০ লাখ টাকা সঞ্চয় করি। বছর খানেক আগে দেশে ফিরি। বাড়ি আসার পর থেকে পার্শ্ববর্তী হরিনা গ্রামের নীরব আমাদের ইতালি যাওয়ার পরামর্শ দিতে থাকে।তিনি দাবি করেন, তার মাধ্যমে এলাকার একাধিক যুবক বিভিন্ন দেশে গেছে। যে কারণে একপর্যায় তার ফাঁদে পা দেই। পরে দুই ভাইকে ইতালি নেওয়ার জন্য সে সর্বমোট ৩০ লাখ টাকা চায়। ওই টাকায় আমাদের ইতালি নিয়ে যাবে বলে জানায়। সেখানে নিয়ে ৯০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি দেওয়ার চুক্তি হয়। কয়েক দফায় দুই ভাই ৩০ লাখ টাকা দেই। এর মধ্যে ২০ লাখ টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দিয়েছি। তার জমা রশিদের কাগজ আমাদের কাছে আছে। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর থেকে সে টালবাহানা শুরু করে। একপর্যায়ে অভিযুক্ত নিজেই বিদেশে চলে যায়। পরে বাধ্য হয়ে ওই দালাল ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা করি। আদালত মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।তাদের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকুর রহমান সরদার বলেন, ইতালি যাওয়ার জন্য আমার দুই ছেলে নীরবকে ৩০ লাখ টাকা দেয়। টাকা নেওয়ার পর থেকে তার খোঁজ নেই। আমার ছেলে দুটি নিঃস্ব হয়ে গেছে। ছেলেরা মামলা করার পর থেকে সে বিদেশে বসে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে প্রোপাগন্ডা ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ ঘটনায় সালথা থানায় অভিযোগ দিয়েছি।তিনি আরও বলেন, এখন আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। আমি যে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি আজ সেই দেশে আমিসহ আমার পরিবার হুমকিতে আছি। এমন অবস্থায় দালালের কাছ থাকা টাকা ফেরত পেতে প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই দালালের মাধ্যমে যারা বিদেশে গেছেন, সেখানে গিয়ে তারা কেউই কাজ পাননি। সবার সঙ্গেই প্রতারণা করেছে।অভিযুক্ত নীরব কুমার সরকার তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে সৌদি থেকে মোবাইল ফোনে দাবি করেন, আলমগীর আর ফারুকের কাছ থেকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে আমি কোনও টাকা-পয়সা নেইনি। আমার সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক। ব্যবসার জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আমার অনেক টাকা লেনদেন হয়েছে। সেই লেনদেনের জমা রশিদ দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আদালত আমাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে। আমরা আদালতে গিয়ে আইনের মাধ্যমে মোকাবিলা করবো।তিনি আরও দাবি করেন, মূলত আলমগীর ও ফারুকের আত্মীয় নয়নের সঙ্গে আমার ঝামেলা চলছে। ওই ঝামেলার কারণে নয়নের বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলার পরও ওরা ব্যাংকের লেনদেনের ওই জমা রশিদের কাগজ দিয়ে মামলা করেছে। এ ছাড়া আমি ওদের কাছে ১২ লাখ টাকা পাবো। ওই টাকা যাতে না দেওয়া লাগে, এ জন্য ষড়যন্ত্র করছে। ভুয়া আইডি খুলে ফেসবুকে কারও বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি বা গালমন্দ করিনি। এটা বানানো গল্প।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন

শান্তিগঞ্জে এসইডিপি প্রকল্পের উদ্যােগে কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ

দুই ভাইকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও দালাল

আপডেট সময় ০৫:৪২:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩

আলমগীর ও ফারুক সরদার জীবিকার তাগিদে জীবনের অর্ধেকটা সময় কাটিয়েছেন মালয়েশিয়ায়। সেখানে যা উপার্জন করেছেন তা দিয়ে সংসারের খরচ মিটিয়ে ৩০ লাখ টাকা জমা করেন। এরই মধ্যে দেশে ফিরে ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন দুই ভাই। তারা নীরব কুমার সরকার নিবিড় নামে এক দালালের মাধ্যমে বৈধপথে ইতালি যাওয়ার জন্য ৩০ লাখ টাকায় চুক্তি করেন। কিন্তু দালাল ওই টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই দুই ভাইয়ের অভিযোগ, তাদের টাকায় দালাল নিজেই বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।আলমগীর ও ফারুক ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিকুর রহমান সরদারের ছেলে। অভিযুক্ত দালাল একই মাঝারদিয়া ইউনিয়নের হরিনা গ্রামের মৃত ননী গোপাল সরকারের ছেলে। এদিকে দালালের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব দুই ভাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।ফারুক সরদারের (৫৩) দাবি, পেটের দায়ে ২৭ বছর মালয়েশিয়ায় থেকেছি। আমার ভাই আলমগীরও (৪১) ১৬ বছর সেখানে ছিল। দুই ভাই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জন করে সংসার চালিয়েছি। কষ্ট করে দুই ভাই মিলে ৩০ লাখ টাকা সঞ্চয় করি। বছর খানেক আগে দেশে ফিরি। বাড়ি আসার পর থেকে পার্শ্ববর্তী হরিনা গ্রামের নীরব আমাদের ইতালি যাওয়ার পরামর্শ দিতে থাকে।তিনি দাবি করেন, তার মাধ্যমে এলাকার একাধিক যুবক বিভিন্ন দেশে গেছে। যে কারণে একপর্যায় তার ফাঁদে পা দেই। পরে দুই ভাইকে ইতালি নেওয়ার জন্য সে সর্বমোট ৩০ লাখ টাকা চায়। ওই টাকায় আমাদের ইতালি নিয়ে যাবে বলে জানায়। সেখানে নিয়ে ৯০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি দেওয়ার চুক্তি হয়। কয়েক দফায় দুই ভাই ৩০ লাখ টাকা দেই। এর মধ্যে ২০ লাখ টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দিয়েছি। তার জমা রশিদের কাগজ আমাদের কাছে আছে। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর থেকে সে টালবাহানা শুরু করে। একপর্যায়ে অভিযুক্ত নিজেই বিদেশে চলে যায়। পরে বাধ্য হয়ে ওই দালাল ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা করি। আদালত মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।তাদের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকুর রহমান সরদার বলেন, ইতালি যাওয়ার জন্য আমার দুই ছেলে নীরবকে ৩০ লাখ টাকা দেয়। টাকা নেওয়ার পর থেকে তার খোঁজ নেই। আমার ছেলে দুটি নিঃস্ব হয়ে গেছে। ছেলেরা মামলা করার পর থেকে সে বিদেশে বসে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে প্রোপাগন্ডা ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ ঘটনায় সালথা থানায় অভিযোগ দিয়েছি।তিনি আরও বলেন, এখন আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। আমি যে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি আজ সেই দেশে আমিসহ আমার পরিবার হুমকিতে আছি। এমন অবস্থায় দালালের কাছ থাকা টাকা ফেরত পেতে প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই দালালের মাধ্যমে যারা বিদেশে গেছেন, সেখানে গিয়ে তারা কেউই কাজ পাননি। সবার সঙ্গেই প্রতারণা করেছে।অভিযুক্ত নীরব কুমার সরকার তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে সৌদি থেকে মোবাইল ফোনে দাবি করেন, আলমগীর আর ফারুকের কাছ থেকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে আমি কোনও টাকা-পয়সা নেইনি। আমার সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক। ব্যবসার জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আমার অনেক টাকা লেনদেন হয়েছে। সেই লেনদেনের জমা রশিদ দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আদালত আমাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে। আমরা আদালতে গিয়ে আইনের মাধ্যমে মোকাবিলা করবো।তিনি আরও দাবি করেন, মূলত আলমগীর ও ফারুকের আত্মীয় নয়নের সঙ্গে আমার ঝামেলা চলছে। ওই ঝামেলার কারণে নয়নের বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলার পরও ওরা ব্যাংকের লেনদেনের ওই জমা রশিদের কাগজ দিয়ে মামলা করেছে। এ ছাড়া আমি ওদের কাছে ১২ লাখ টাকা পাবো। ওই টাকা যাতে না দেওয়া লাগে, এ জন্য ষড়যন্ত্র করছে। ভুয়া আইডি খুলে ফেসবুকে কারও বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি বা গালমন্দ করিনি। এটা বানানো গল্প।