ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সার্টিফিকেট আগুনে পুড়িয়েছেন নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের যুবক আব্দুস সালাম (৩২)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের সনদ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নেত্রকোনা মোহনগঞ্জ পৌরশহরের দেওথান এলাকার শামসুর রহমানের ছেলে সালাম ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে সালাম বলেন, ‘এর আগে সরকারি ইডেন কলেজের এক ছাত্রী সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলার পর সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগে চাকরির সুযোগ মেলে তার। আমার দাবি, একজনকে জন্য চাকরি না দিয়ে সবার জন্য সরকারি চাকরির বয়সসীমা বাড়ান। তাহলে সবাই চাকরির সুযোগটা পাবে।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালে মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০০৮ সালে ময়মনসিংহের আলমগীর মনসুর (মিন্টু) মেমোরিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করি। পরে ঢাকা কলেজ থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স ও মাস্টার্স করে সরকারি বিভিন্ন দফতরে চাকরির জন্য দীর্ঘদিন চেষ্টা করি। চাকরি না হওয়ায় অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট পারিবারিক ও সামাজিকভাবে আমার কোনও কাজে আসছে না।
‘স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছি। রেজাল্টও ভালো। কিন্তু অনেক আবেদন করেও চাকরি হয়নি। অথচ অপেক্ষাকৃত কম মেধারিরাও লবিং-তদবির ও ঘুষের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন। তাই সার্টিফিকেটের বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ায় আমি এই কাজ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাকরি না পেয়ে বর্তমানে শহরের স্টেশন রোডে “কুটুমবাড়ি” নামে একটি রেস্টুরেন্ট দিয়েছি। মোহনগঞ্জ পৌরশহরে রেস্টুরেন্টের ভেতরে গত মঙ্গলবার রাতে আমি সব সার্টিফিকেট আগুনে পুড়িয়ে ছবি ও ভিডিও নিজের ফেসবুকে পোস্ট করি।’
এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, ‘এভাবে সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলা ঠিক নয়। পড়াশোনা আসলে চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, জ্ঞান অর্জনের জন্য। এ জ্ঞান জীবনের সব ক্ষেত্রেই কাজে লাগবে। সবার তো চাকরি হয় না। তাই চাকরির চেষ্টার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে এই হতাশাগুলো আর থাকবে না।’
সচেতনতা বাড়াতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।