ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo শান্তিগঞ্জ পাথারিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি আজমল হুসেন , সেক্রেটারি মোঃশেকুল ইসলাম। Logo উপাচার্যকে নিয়ে মানহানিকর বিবৃতি প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন Logo সুনামগঞ্জে ছাত্র—জনতার আন্দোলনে হামলা বিশ্বম্ভরপুর আ’লীগ সভাপতিসহ ৫ নেতা কারাগারে Logo শান্তিগঞ্জে ব্রাক শিক্ষা কর্মসূচির উদ্যোগে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত Logo ছাতকে ভারতীয় চিনি সহ এক চোরাকারবারি গ্রেফতার Logo জগন্নাথপুরে ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার Logo দোয়ারাবাজারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী কামরুল ইসলাম গ্রেফতার Logo সুনামগঞ্জে আইন সহায়তা দিবস পালিত Logo সুনামগঞ্জে নার্সিং শিক্ষার্থীদের সড়কে বিক্ষোভ Logo মধ্যনগরে যুবলীগ নেতা অমল গ্রেফতার।

পরিবেশের বিরুদ্ধে মানুষের অবস্থান বিপদে ফেলছে মানুষকেই

প্রকৃতির বিরুদ্ধে গেলে প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নেয়। কথাটি যতটা না দার্শনিক তার চেয়ে বেশি বৈজ্ঞানিক, বলছেন পরিবেশবাদীরা। গাছ কেটে সাবার করলে, ক্ষতিকর প্লাস্টিকে পুরো বিশ্ব ভরিয়ে দিলে, তার জন্য মানুষকেই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হতে হয়— এর প্রমাণও মিলেছে। বৃষ্টিহীনতা, দীর্ঘ খরা, অস্বাভাবিক তুষারপাত থেকে শুরু করে মানুষের সৃষ্ট দুর্যোগ এখন ‘নতুন টার্ম’ আকারে সামনে এসেছে। মানুষ প্রকৃতিকে হেলা করেছে বলেই প্রকৃতি তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

নিয়মিত প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার প্লাস্টিক-দূষণের মাত্রাকে ভয়াবহ করে তুলছে। পলিথিন ব্যাগ, কসমেটিক প্লাস্টিক, গৃহস্থালি প্লাস্টিক ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের বেশিরভাগই পুনঃচক্রায়ন হয় না। পরিবেশবাদীরা বলছেন, সাবান, মুখের ক্রিম, টুথপেস্ট, ডিটারজেন্ট এবং অন্যান্য প্রসাধন সামগ্রীর মাধ্যমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্লাস্টিক পরিবেশের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে। প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে। পৃথিবীতে প্রতি মুহূর্তে কোনও না কোনও স্থানে ফেলে দেওয়া চিপসের প্যাকেট, কিংবা প্লাস্টিকের বোতল— তার গন্তব্য হিসেবে খুঁজে নিচ্ছে সমুদ্রকে। যার ফলে ভয়ানকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে সমুদ্রের তলদেশে থাকা জীবেরা।

মিনিপ্যাকের সুবিধা ধ্বংস করছে পরিবেশ

যেকোনও পণ্য কম লাগবে বা সামর্থ্য অনুযায়ী কিনতে গিয়ে হরহামেশা মিনিপ্যাক কিনছেন বটে। কিন্তু সেটা ব্যবহারের পর প্যাকেটটি কী হচ্ছে? ফেলে দিচ্ছেন? মাটিতে কি মিশছে? এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো)করা ‘প্লাস্টিক স্যাশে: স্মল প্যাকেট উইথ হিউজ এনভায়রনমেন্ট ডেস্ট্রাকশন’ শীর্ষক গবেষণায় বলা হচ্ছে— ‘দেশে যে পরিমাণ মিনিপ্যাক বর্জ্য তৈরি হয়, তার মধ্যে খাবারের স্যাশে ৪০, প্রসাধনী ২৪, ওষুধ ৮, গৃহসামগ্রী পরিষ্কারের পণ্য ৭, রান্নার মসলা ৭, পানীয় ৭ এবং অন্যান্য বর্জ্য ৭ শতাংশ। খাবারের স্যাশের মধ্যে রয়েছে— চিপস, টমেটো সস, জুস, গুঁড়োদুধ, কফি ইত্যাদি। ওষুধের স্যাশের মধ্যে রয়েছে— স্যালাইনের প্যাকেট ওমেডিসিন স্ট্রিপ। কসমেটিক স্যাশের মধ্যে আছে— শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, টুথ পেস্ট ও মাউথ ফ্রেশনার। রান্নার উপাদানকে মসলা প্যাকের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো পরিবেশে মিশে ভয়াবহ ক্ষতির সৃষ্টি করছে, যার প্রভাব সরাসরি মানুষের ওপর পড়ছে।’

image3বেশিরভাগ প্রসাধন সামগ্রীর মিনিপ্যাক আসে প্লাস্টিক প্যাকেটে

বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০ সালে দেশে ৯ লাখ ৭৭ হাজার টন পলিথিনের ব্যবহার করা হয়েছে, যার মাত্র ৩১ শতাংশ পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করা হয়েছে। যদিও সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রণীত টেকসই প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত জাতীয় পরিকল্পনা অনুযায়ী— একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার ২০২৬ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। ২০২১ সালের শেষার্ধে প্রকাশিত ওই ডকুমেন্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্লাস্টিক-দূষণের হটস্পট হচ্ছে ঢাকা শহর, ঢাকা শহরের চার পাশের চারটি নদী, চট্টগ্রাম শহর এবং কক্সবাজার। ঢাকার বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, টঙ্গী খাল ও শীতলক্ষ্যা নদী, এমনকি মেঘনা, কর্ণফুলী নদী, চাকতাই খাল এবং পতেঙ্গা সৈকত, কক্সবাজার শহর ও সৈকত এলাকা প্লাস্টিক বর্জ্যের হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত।

বিকল্প দেখালেও নেই উদ্যোগ

বিভিন্ন সময় পরিবেশ অধিকার সংগঠনগুলো নানা বিকল্প মেলার উদ্যোগ নিলেও তাদের অভিযোগ— এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কর্ণপাত করা হয়নি। এসডো’র নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, ‘আমরা মেলাও করেছি, বিকল্প কী হতে পারে সেসব নিয়ে। কিন্তু আমরা তো সেসব উৎপাদনে যাবো না। এসবে পৃষ্ঠপোষকতা লাগবে। কার্যকর ক্যাম্পেইন লাগবে। স্ট্র, কটনবাগ, ওয়ানটাইম ইউজ গ্লাস-প্লেটের বিকল্প যেগুলো বলছি, সেগুলোই কিন্তু একসময় মেইন স্ট্রিম ছিল। প্লাস্টিক এসে বাজার দখল করায় এখন সেগুলোকে বিকল্প বলছি।’

image4

অনেক রেডি খাবারও বিক্রি হয় প্লাস্টিক প্যাকেটে

তিনি বলেন, ‘আমরা বিএসটিআইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি— তারা বলেন, দায়িত্ব পরিবেশ অধিদফতরের। গত কয়েকবছরের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় আমার মনে হয়েছে, বড় ধরনের কোঅর্ডিনেশনের অভাব রয়েছে। তবে বিএসটিআই জানিয়েছে, তারা পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। কোনটা কেমন ক্ষতিকর, সেটা পরীক্ষা করে দেওয়ায় কাজটি তারা করবেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।’

পরিবেশ অধিদফতর কী করলো?

২০২০ সালে দেশের উপকূলীয় এলাকাসহ স্থানীয় হোটেল, মোটেল ও রেস্তোরাঁয় পলিথিন এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক (ওয়ান টাইম) পণ্যের ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে এক বছর সময় বেঁধে দেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে দেশের উপকূলীয় এলাকায় পলিথিন বা প্লাস্টিক ব্যাগ এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার, বহন, বিক্রি ও বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে হবে।

পাশাপাশি আইন অনুসারে, নিষিদ্ধ পলিথিন বা প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার বন্ধের বিষয়টিও কঠোরভাবে কার্যকর করতে বাজার তদারকি, উৎপাদন, কারখানা বন্ধ ও যন্ত্রপাতি জব্দ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে পরিবেশ অধিদফতর থেকে একটি গেজেট করে ২০২৩ সালের মধ্যে কয়েক ধরনের প্লাস্টিক বন্ধের ধাপে ধাপে কর্মপরিকল্পনার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনও কাজ শুরু হয়েছে বলে দৃশ্যমান হয়নি উল্লেখ করে আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিকারী ‘বেলা’র প্রধান নির্বাহী আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার কিছুই আমরা দেখতে পাইনি। ২০২৩ এর মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা। সেই সময় শেষ হলেও তারা কিছু বলবেন কিনা শঙ্কা আছে।’

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে কারোর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

শান্তিগঞ্জ পাথারিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি আজমল হুসেন , সেক্রেটারি মোঃশেকুল ইসলাম।

পরিবেশের বিরুদ্ধে মানুষের অবস্থান বিপদে ফেলছে মানুষকেই

আপডেট সময় ০৪:৫২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩

প্রকৃতির বিরুদ্ধে গেলে প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নেয়। কথাটি যতটা না দার্শনিক তার চেয়ে বেশি বৈজ্ঞানিক, বলছেন পরিবেশবাদীরা। গাছ কেটে সাবার করলে, ক্ষতিকর প্লাস্টিকে পুরো বিশ্ব ভরিয়ে দিলে, তার জন্য মানুষকেই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হতে হয়— এর প্রমাণও মিলেছে। বৃষ্টিহীনতা, দীর্ঘ খরা, অস্বাভাবিক তুষারপাত থেকে শুরু করে মানুষের সৃষ্ট দুর্যোগ এখন ‘নতুন টার্ম’ আকারে সামনে এসেছে। মানুষ প্রকৃতিকে হেলা করেছে বলেই প্রকৃতি তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

নিয়মিত প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার প্লাস্টিক-দূষণের মাত্রাকে ভয়াবহ করে তুলছে। পলিথিন ব্যাগ, কসমেটিক প্লাস্টিক, গৃহস্থালি প্লাস্টিক ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের বেশিরভাগই পুনঃচক্রায়ন হয় না। পরিবেশবাদীরা বলছেন, সাবান, মুখের ক্রিম, টুথপেস্ট, ডিটারজেন্ট এবং অন্যান্য প্রসাধন সামগ্রীর মাধ্যমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্লাস্টিক পরিবেশের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে। প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে। পৃথিবীতে প্রতি মুহূর্তে কোনও না কোনও স্থানে ফেলে দেওয়া চিপসের প্যাকেট, কিংবা প্লাস্টিকের বোতল— তার গন্তব্য হিসেবে খুঁজে নিচ্ছে সমুদ্রকে। যার ফলে ভয়ানকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে সমুদ্রের তলদেশে থাকা জীবেরা।

মিনিপ্যাকের সুবিধা ধ্বংস করছে পরিবেশ

যেকোনও পণ্য কম লাগবে বা সামর্থ্য অনুযায়ী কিনতে গিয়ে হরহামেশা মিনিপ্যাক কিনছেন বটে। কিন্তু সেটা ব্যবহারের পর প্যাকেটটি কী হচ্ছে? ফেলে দিচ্ছেন? মাটিতে কি মিশছে? এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো)করা ‘প্লাস্টিক স্যাশে: স্মল প্যাকেট উইথ হিউজ এনভায়রনমেন্ট ডেস্ট্রাকশন’ শীর্ষক গবেষণায় বলা হচ্ছে— ‘দেশে যে পরিমাণ মিনিপ্যাক বর্জ্য তৈরি হয়, তার মধ্যে খাবারের স্যাশে ৪০, প্রসাধনী ২৪, ওষুধ ৮, গৃহসামগ্রী পরিষ্কারের পণ্য ৭, রান্নার মসলা ৭, পানীয় ৭ এবং অন্যান্য বর্জ্য ৭ শতাংশ। খাবারের স্যাশের মধ্যে রয়েছে— চিপস, টমেটো সস, জুস, গুঁড়োদুধ, কফি ইত্যাদি। ওষুধের স্যাশের মধ্যে রয়েছে— স্যালাইনের প্যাকেট ওমেডিসিন স্ট্রিপ। কসমেটিক স্যাশের মধ্যে আছে— শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, টুথ পেস্ট ও মাউথ ফ্রেশনার। রান্নার উপাদানকে মসলা প্যাকের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো পরিবেশে মিশে ভয়াবহ ক্ষতির সৃষ্টি করছে, যার প্রভাব সরাসরি মানুষের ওপর পড়ছে।’

image3বেশিরভাগ প্রসাধন সামগ্রীর মিনিপ্যাক আসে প্লাস্টিক প্যাকেটে

বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০ সালে দেশে ৯ লাখ ৭৭ হাজার টন পলিথিনের ব্যবহার করা হয়েছে, যার মাত্র ৩১ শতাংশ পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করা হয়েছে। যদিও সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রণীত টেকসই প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত জাতীয় পরিকল্পনা অনুযায়ী— একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার ২০২৬ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। ২০২১ সালের শেষার্ধে প্রকাশিত ওই ডকুমেন্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্লাস্টিক-দূষণের হটস্পট হচ্ছে ঢাকা শহর, ঢাকা শহরের চার পাশের চারটি নদী, চট্টগ্রাম শহর এবং কক্সবাজার। ঢাকার বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, টঙ্গী খাল ও শীতলক্ষ্যা নদী, এমনকি মেঘনা, কর্ণফুলী নদী, চাকতাই খাল এবং পতেঙ্গা সৈকত, কক্সবাজার শহর ও সৈকত এলাকা প্লাস্টিক বর্জ্যের হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত।

বিকল্প দেখালেও নেই উদ্যোগ

বিভিন্ন সময় পরিবেশ অধিকার সংগঠনগুলো নানা বিকল্প মেলার উদ্যোগ নিলেও তাদের অভিযোগ— এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কর্ণপাত করা হয়নি। এসডো’র নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, ‘আমরা মেলাও করেছি, বিকল্প কী হতে পারে সেসব নিয়ে। কিন্তু আমরা তো সেসব উৎপাদনে যাবো না। এসবে পৃষ্ঠপোষকতা লাগবে। কার্যকর ক্যাম্পেইন লাগবে। স্ট্র, কটনবাগ, ওয়ানটাইম ইউজ গ্লাস-প্লেটের বিকল্প যেগুলো বলছি, সেগুলোই কিন্তু একসময় মেইন স্ট্রিম ছিল। প্লাস্টিক এসে বাজার দখল করায় এখন সেগুলোকে বিকল্প বলছি।’

image4

অনেক রেডি খাবারও বিক্রি হয় প্লাস্টিক প্যাকেটে

তিনি বলেন, ‘আমরা বিএসটিআইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি— তারা বলেন, দায়িত্ব পরিবেশ অধিদফতরের। গত কয়েকবছরের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় আমার মনে হয়েছে, বড় ধরনের কোঅর্ডিনেশনের অভাব রয়েছে। তবে বিএসটিআই জানিয়েছে, তারা পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। কোনটা কেমন ক্ষতিকর, সেটা পরীক্ষা করে দেওয়ায় কাজটি তারা করবেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।’

পরিবেশ অধিদফতর কী করলো?

২০২০ সালে দেশের উপকূলীয় এলাকাসহ স্থানীয় হোটেল, মোটেল ও রেস্তোরাঁয় পলিথিন এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক (ওয়ান টাইম) পণ্যের ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে এক বছর সময় বেঁধে দেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে দেশের উপকূলীয় এলাকায় পলিথিন বা প্লাস্টিক ব্যাগ এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার, বহন, বিক্রি ও বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে হবে।

পাশাপাশি আইন অনুসারে, নিষিদ্ধ পলিথিন বা প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার বন্ধের বিষয়টিও কঠোরভাবে কার্যকর করতে বাজার তদারকি, উৎপাদন, কারখানা বন্ধ ও যন্ত্রপাতি জব্দ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে পরিবেশ অধিদফতর থেকে একটি গেজেট করে ২০২৩ সালের মধ্যে কয়েক ধরনের প্লাস্টিক বন্ধের ধাপে ধাপে কর্মপরিকল্পনার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনও কাজ শুরু হয়েছে বলে দৃশ্যমান হয়নি উল্লেখ করে আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিকারী ‘বেলা’র প্রধান নির্বাহী আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার কিছুই আমরা দেখতে পাইনি। ২০২৩ এর মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা। সেই সময় শেষ হলেও তারা কিছু বলবেন কিনা শঙ্কা আছে।’

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে কারোর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।