ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo শান্তিগঞ্জে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হাফেজ শেখ মুশতাক আহমদের সমর্থনে নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত Logo মুশতাক গাজিনগরীর হত্যার প্রতিবাদে গণআন্দোলনের হুঁশিয়ারি Logo ঢাকায় ১৫ সেপ্টেম্বরের বিশাল শিক্ষক সমাবেশ সফল করতে সিলেটে মতবিনিময় সভা Logo জগন্নাথপুরে আলোচনায় প্রবাসী তাহের মিয়ার নতুন ষাড় সাদা ডলপিং Logo গণতন্ত্রের লড়াইয়ে সংস্কৃতির জাগরণ প্রয়োজন’— শান্তিগঞ্জে ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন Logo সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের সহ-সভাপতি নিখোঁজ মাওলানা মোশতাক আহমদের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন Logo সুনামগঞ্জে জমিয়ত নেতা মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরী নিখোঁজ Logo বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জগন্নাথপুরে আলোচনা সভা ও দলীয় কার্যালয় উদ্ভোধন Logo মধ্যনগরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদের ফরম ক্রয়কে ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে Logo বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সুনামগঞ্জে বর্ণ্যাঢ্য র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ইউপি সদস্য প্রেমিকের হাত ধরে উদাও আরেক ইউপি সদস্য দুই সন্তানের মা

স্বামী ও দুই সন্তানকে ফেলে রেখে বিবাহিত ইউপি সদস্য প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গেছেন নারী ইউপি সদস্য। গত তিনদিন ধরে তারা নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের মোবাইল নম্বরও বন্ধ রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায়। তারা দুজনেই উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইশাখাবাদ গ্রামের মরহুম খোরশেদ মোল্লার ছেলে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সাদ্দাম মোল্লার (৩০) সঙ্গে একই ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাজমা আক্তারের (৩০) দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি নিয়ে নাজমা আক্তারের সঙ্গে তার স্বামী মো. ইছাক মিয়ার মনোমালিন্য চলছিল। গত শনিবার বিষয়টি নিয়ে নাজমা আক্তারের সঙ্গে তার স্বামীর কথাকাটাকাটি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাজমা বেগম স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। পরদিন রোববার থানা থেকে তাদের ডেকে পাঠায়। ওইদিন সকালে মো. ইছাক মিয়া তার পরিবারের লোকজনসহ তার শ্বশুর বাড়ির লোকদের সাথে থানায় যান। তবে তাদের সাথে নাজমা বেগম থানায় যাননি। তারা নাজমা বেগমকে ডাকলে তিনি বলেন, ‘আমি থানা চিনি। আমাকে থানা চেনাতে হবে না।’ পরবর্তীকালে মো. ইছাক মিয়াসহ সবাই থানা থেকে বাড়ি ফিরে এসে দেখেন নাজমা আক্তার বাড়িতে নেই।
পরিবারের লোক সবাই ভেবেছিলেন তিনি হয়তো থানায় গেছেন, চলে আসবেন। কিন্তু সন্ধ্যা পার হলেও তিনি ফিরে না আসায় তার মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর থেকে ৩ নম্বর ইউপি সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেনও এলাকায় নেই। তার মোবাইল নম্বরও বন্ধ। পরে এ ঘটনায় নাজমার স্বামী হরিরামপুর থানায় নাজমার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মো. সাদ্দাম মোল্লা এ পর্যন্ত দুটি বিয়ে করেছেন। দুজনের সাথেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তাদের বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীকে সন্তানসহ তিনি তালাক দিয়েছেন। সাদ্দামের বর্তমান (দ্বিতীয়) স্ত্রী বিদেশে থাকেন।
নাজমার স্বামী মো. ইছাক মিয়া বলেন, ‘সাদ্দামের সঙ্গে আমার স্ত্রীকে চলাফেরা করতে নিষেধ করলেও সে তা মানেনি। আমাদের ১৪ বছরের সংসার। আমাদের দুইটি ছেলে সন্তান রয়েছে। একজন ষষ্ঠ শ্রেণিতে, আরেকজন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। নাজমা বেগম আমার বাড়ি থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং দেড় ভরি স্বর্ণের গহনা নিয়ে গেছে। তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
ইছাক মিয়ার বড় ভাই মো. ইসমাইল বলেন, ‘নাজমা বেগম সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে পালিয়েছেন কী না আমরা জানি না। তবে ঘটনার পর থেকে সাদ্দামও নিখোঁজ বলে শুনেছি। সাদ্দামের মোবাইল নম্বরও বন্ধ। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার সাথেই তিনি পালিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে সাদ্দাম মোল্লা ও নাজমা আক্তারের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। গতকাল সোমবার সাদ্দামের বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। সাদ্দামের মা জানান, ‘সাদ্দাম বাড়িতে নেই।’
বিষয়টি লজ্জাজনক জানিয়ে রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের জনপ্রতিনিধিদের কাছে জনগণ ভালো কিছু পাবে না। আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। আমার ইউনিয়নের মেম্বাররা যদি এ ধরনের কাজ করে সেটা তো আমার মাথা ব্যথা হওয়া উচিত। যেহেতু আমি দুইদিন তাদের খোঁজাখুঁজি করলাম পেলাম না। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে গতকাল জানিয়েছি। আমি আজকে তার সাথে দেখা করবো পরামর্শ করবো। এক-দুজনকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া যায় কী না। কারণ এভাবে কলঙ্ক নিয়ে তো আমি ইউনিয়ন পরিষদ চালাতে পারব না। আমার কোনো মেম্বাররাও কাজ করবেনা এই কলঙ্ক নিয়ে।’
এ ব্যাপারে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার আদিত্য জানান, একটি অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি নিয়ে আমরা অনুসন্ধান করছি। হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহরিয়ার রহমান জানান, ‘বিষয়টি অবগত আছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজ অফিসিয়াল রিপোর্ট দিলে জেলা প্রশাসক স্যারকে চিঠি দিয়ে জানাবো।’
এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে আইন অনুযায়ী দুই ইউপি সদস্যকে শোকজ করা হবে। শোকজের শুদ্ধ জবাব না দিলে পরবর্তীকালে তাদের বহিষ্কার করা হতে পারে।

 

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

শান্তিগঞ্জে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হাফেজ শেখ মুশতাক আহমদের সমর্থনে নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত

ইউপি সদস্য প্রেমিকের হাত ধরে উদাও আরেক ইউপি সদস্য দুই সন্তানের মা

আপডেট সময় ০৮:১২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুলাই ২০২৩
স্বামী ও দুই সন্তানকে ফেলে রেখে বিবাহিত ইউপি সদস্য প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গেছেন নারী ইউপি সদস্য। গত তিনদিন ধরে তারা নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের মোবাইল নম্বরও বন্ধ রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায়। তারা দুজনেই উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইশাখাবাদ গ্রামের মরহুম খোরশেদ মোল্লার ছেলে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সাদ্দাম মোল্লার (৩০) সঙ্গে একই ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাজমা আক্তারের (৩০) দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি নিয়ে নাজমা আক্তারের সঙ্গে তার স্বামী মো. ইছাক মিয়ার মনোমালিন্য চলছিল। গত শনিবার বিষয়টি নিয়ে নাজমা আক্তারের সঙ্গে তার স্বামীর কথাকাটাকাটি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাজমা বেগম স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। পরদিন রোববার থানা থেকে তাদের ডেকে পাঠায়। ওইদিন সকালে মো. ইছাক মিয়া তার পরিবারের লোকজনসহ তার শ্বশুর বাড়ির লোকদের সাথে থানায় যান। তবে তাদের সাথে নাজমা বেগম থানায় যাননি। তারা নাজমা বেগমকে ডাকলে তিনি বলেন, ‘আমি থানা চিনি। আমাকে থানা চেনাতে হবে না।’ পরবর্তীকালে মো. ইছাক মিয়াসহ সবাই থানা থেকে বাড়ি ফিরে এসে দেখেন নাজমা আক্তার বাড়িতে নেই।
পরিবারের লোক সবাই ভেবেছিলেন তিনি হয়তো থানায় গেছেন, চলে আসবেন। কিন্তু সন্ধ্যা পার হলেও তিনি ফিরে না আসায় তার মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর থেকে ৩ নম্বর ইউপি সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেনও এলাকায় নেই। তার মোবাইল নম্বরও বন্ধ। পরে এ ঘটনায় নাজমার স্বামী হরিরামপুর থানায় নাজমার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মো. সাদ্দাম মোল্লা এ পর্যন্ত দুটি বিয়ে করেছেন। দুজনের সাথেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তাদের বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীকে সন্তানসহ তিনি তালাক দিয়েছেন। সাদ্দামের বর্তমান (দ্বিতীয়) স্ত্রী বিদেশে থাকেন।
নাজমার স্বামী মো. ইছাক মিয়া বলেন, ‘সাদ্দামের সঙ্গে আমার স্ত্রীকে চলাফেরা করতে নিষেধ করলেও সে তা মানেনি। আমাদের ১৪ বছরের সংসার। আমাদের দুইটি ছেলে সন্তান রয়েছে। একজন ষষ্ঠ শ্রেণিতে, আরেকজন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। নাজমা বেগম আমার বাড়ি থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং দেড় ভরি স্বর্ণের গহনা নিয়ে গেছে। তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
ইছাক মিয়ার বড় ভাই মো. ইসমাইল বলেন, ‘নাজমা বেগম সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে পালিয়েছেন কী না আমরা জানি না। তবে ঘটনার পর থেকে সাদ্দামও নিখোঁজ বলে শুনেছি। সাদ্দামের মোবাইল নম্বরও বন্ধ। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার সাথেই তিনি পালিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে সাদ্দাম মোল্লা ও নাজমা আক্তারের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। গতকাল সোমবার সাদ্দামের বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। সাদ্দামের মা জানান, ‘সাদ্দাম বাড়িতে নেই।’
বিষয়টি লজ্জাজনক জানিয়ে রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের জনপ্রতিনিধিদের কাছে জনগণ ভালো কিছু পাবে না। আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। আমার ইউনিয়নের মেম্বাররা যদি এ ধরনের কাজ করে সেটা তো আমার মাথা ব্যথা হওয়া উচিত। যেহেতু আমি দুইদিন তাদের খোঁজাখুঁজি করলাম পেলাম না। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে গতকাল জানিয়েছি। আমি আজকে তার সাথে দেখা করবো পরামর্শ করবো। এক-দুজনকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া যায় কী না। কারণ এভাবে কলঙ্ক নিয়ে তো আমি ইউনিয়ন পরিষদ চালাতে পারব না। আমার কোনো মেম্বাররাও কাজ করবেনা এই কলঙ্ক নিয়ে।’
এ ব্যাপারে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার আদিত্য জানান, একটি অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি নিয়ে আমরা অনুসন্ধান করছি। হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহরিয়ার রহমান জানান, ‘বিষয়টি অবগত আছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজ অফিসিয়াল রিপোর্ট দিলে জেলা প্রশাসক স্যারকে চিঠি দিয়ে জানাবো।’
এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে আইন অনুযায়ী দুই ইউপি সদস্যকে শোকজ করা হবে। শোকজের শুদ্ধ জবাব না দিলে পরবর্তীকালে তাদের বহিষ্কার করা হতে পারে।