জিনের বাদশা সেজে প্রতারণার মাধ্যমে ভাগ্য ফেরাতে চেয়েছিলেন ভোলার বোরহানউদ্দিনের ফুলগাছিয়া গ্রামের ফখরুল ইসলাম। ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নতুন ব্যবসাও খুলে বসেছিলেন। কিন্তু প্রতারণার শিকার ব্যক্তির মামলার কারণে শেষ রক্ষা হলো না তার। স্ত্রী ও সহযোগীসহ সিআইডির জালে ধরা পড়ে কারাগারে ঠাঁই হচ্ছে তার।
বুধবার (২ আগস্ট) বিকালে ঢাকার আশুলিয়া থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সিআইডি যশোরের পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ।
গ্রেফতার প্রতারকরা হলেন- চক্রের হোতা ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ফুলগাছিয়া গ্রামের আঙ্গুর শিকদারের ছেলে ফখরুল ইসলাম (৩৫), তার স্ত্রী সুমি (৩০) ও সহযোগী রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ভূতবানা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে আলিফ মিয়া (২০)।
ভুক্তভোগী যশোর শহরের কাঠ ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, তিনি পাবনার কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে ব্যবসা করতেন। এতে তার চার লাখ টাকা আটকা পড়ে। ওই টাকা উঠাতে ব্যর্থ হয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এরপর একটি বেসরকারি টেলিভিশনে টাকা উদ্ধারের সহায়তার বিজ্ঞাপন দেখে তাদের নম্বরে ফোন দেন। নির্দেশনা মতে দুই হাজার টাকাও দেন। এরপর ওই মোবাইল থেকে ফোন করে আবুল হোসেনকে পাওনা চার লাখ টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি জিনের মাধ্যমে আরও ১৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা অর্জনের প্রলোভন দেখানো হয়।
তিনি জানান, ওই প্রলোভনে পড়ায় জিনের বাদশা প্রতারক চক্র তার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে তিনি আইনের আশ্রয় নেন। সর্বশেষ সিআইডি পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতারক চক্রের হোতা ফখরুল ইসলাম, তার স্ত্রীসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।
চক্রের হোতা ফখরুল ইসলাম জানান, কাজকর্ম হারিয়ে বেকার জীবনযাপন করছিলেন। গ্রামে তার চাচাতো ভাইয়েরা জিনের বাদশার নামে প্রতারণার ব্যবসা করে। তাদের সাহায্য নিয়ে একইভাবে প্রতারণার মাধ্যমে ভাগ্য ফেরাতে চেয়েছিলেন। এরপর সে টাকা দিয়ে নিজে ব্যবসাও খুলে বসেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না, তাদের আটক হতে হয়েছে।
সিআইডি যশোরের পুলিশ সুপার জানান, তারা সোনার কলসিতে ১৩ কোটি টাকা পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দিয়েছিল। মামলাটি হাতে আসার পর তারা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে প্রতারক চক্রকে আটক করতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।