ঢাকা , শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
Logo শান্তিগঞ্জে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হাফেজ শেখ মুশতাক আহমদের সমর্থনে নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত Logo মুশতাক গাজিনগরীর হত্যার প্রতিবাদে গণআন্দোলনের হুঁশিয়ারি Logo ঢাকায় ১৫ সেপ্টেম্বরের বিশাল শিক্ষক সমাবেশ সফল করতে সিলেটে মতবিনিময় সভা Logo জগন্নাথপুরে আলোচনায় প্রবাসী তাহের মিয়ার নতুন ষাড় সাদা ডলপিং Logo গণতন্ত্রের লড়াইয়ে সংস্কৃতির জাগরণ প্রয়োজন’— শান্তিগঞ্জে ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন Logo সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের সহ-সভাপতি নিখোঁজ মাওলানা মোশতাক আহমদের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন Logo সুনামগঞ্জে জমিয়ত নেতা মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরী নিখোঁজ Logo বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জগন্নাথপুরে আলোচনা সভা ও দলীয় কার্যালয় উদ্ভোধন Logo মধ্যনগরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদের ফরম ক্রয়কে ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে Logo বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সুনামগঞ্জে বর্ণ্যাঢ্য র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রবাস ফেরত যুবকের তাক লাগানো খেজুর বাগান,

ধান-লিচুর জেলা হিসেবে সুখ্যাতি আছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের। এই জেলার কাটারিভোগ চালের সুনাম বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। আবার রসালো লিচু ও মুগডালের পাঁপড়ও বেশ বিখ্যাত। এখন এই ধান-লিচুর দেশে চাষ হচ্ছে সৌদি আরবের বিখ্যাত সব খেজুর।

সরেজমিনে দেখা যায়, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সৈয়দপুর মহাসড়কের পাশে পরিত্যক্ত ২০ শতক জমিতে সারিবদ্ধভাবে লাগানো রয়েছে ১৯টি খেজুর গাছ। সারি সারি সব গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে হলুদ, লাল ও সবুজ রঙের খেজুর। এলাকায় মরুর এই ফল চাষের অসাধ্যকে সাধন করে স্থানীয়দের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ফুলবাড়ী উপজেলার স্বজন পুকুর গ্রামের প্রবাস ফেরত জাকির হোসেন। এখন তার বাগানের গাছে ফল এসেছে। পাশাপাশি তৈরি করছেন নতুন চারা। আগামীতে বাগানের পরিধি বৃদ্ধি করবেন এবং খেজুর ও চারা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করবেন বলে আশা করছেন।

খেজুর বাগান দেখেতে আসা এক দর্শনার্থী জহিরুল ইনলাম  বলেন, আমরা তো সৌদির খেজুর খাই। সৌদির খেজুর দেখছি বাংলাদেশে এমন খেজুর হয় তা দেখি নাই। আজ প্রথম দেখলাম আমাদের দেশেও সৌদির খেজুর আবাদ হচ্ছে। আবার খাইতে পারছি এটায় আমাদের গর্ব।

dhakapost

বাগান পরিচর্যা কারি জামিল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি বাগানের প্রথম চারা রোপন শুরু করার পর থেকে এ বাগানে কাজ করছি। দীর্ঘদিন বাগান পরিচর্যা করার পরে গত বছর থেকে ফল আসা শুরু হয়েছে। এখন মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে বাগান দেখতে আসছে ফল খাচ্ছে আবার কেউ খেজুর গাছের চারা নিয়ে যাচ্ছে।

জাকির হোসেন বলেন, ১৯৯৯ সালে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কুয়েতে যাই সেখানে প্রথমে একটি মোটর মেকানিকের দোকানের কাজ শুরু করি। দীর্ঘ ২০ বছর কুয়েতের সুয়েব শহরে ছিলাম। সেখানে থাকা অবস্থায় দেখেছি বড় বড় খেজুরের বাগান। আবার প্রতিটি অফিসের ও বাড়ির সামনে ছোট ছোট খেজুর গাছ। তখন চিন্তা করি এদের দেশে হলে আমাদের দেশে কেন হবে না। সেই চিন্তা থেকে ২০১৭ দেশে আসার সময় ১২ কেজি গাছ পাকা খেজুর কিনে এনে দেশে চারা করার চেষ্টা করি। চারা তৈরিতে সফল হলে পরিত্যক্ত ২০ শতক জমিতে সারিবদ্ধভাবে ১৯টি গাছ রোপণ করার পরে পরিচর্যা শুরু করি। দীর্ঘ চার বছর গাছগুলোকে ভালোভাবে পরিচর্যা করার পরে তিটি গাছে ফল আসে আবার কিছু কিছু গাছে ৫ বছর পর ফল আসে। এককেটি গাছে ফল আসে আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ কেজি করে। দ্বিতীয় বার ৯টি গাছে ফল এসেছে। এবারের ফলন গত বছরের তুলানায় দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। গতবছর যে গাছে ফল এসেছিল ২০ থেকে ২৫ কেজি সে গাছে এবার ফল এসছে ৭০ থেকে ৮০ কেজি। আবার কোনো গাছে ফল ১০০ কেজির বেশি ধরেছে। আমার বাগানে ছয় জাতের খেজুরের চাষ হচ্ছে যেমন মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেডজুল, বাহির ও আম্বার। আমি এ বছর ফল বিক্রি করছি না প্রথম দিকে ফল বিক্রি করার চিন্তা ছিল কিন্তু দর্শনার্থীদের চাপে আর এ বছর ফল বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। যারাই আসতেছে তাদের প্রত্যেকের হাতে দুটি-চারটি করে খেজুর দিচ্ছি খাবার জন্য। এভাবে দিতে দিতে প্রায় ৫ থেকে ৬ মণ ফল বিলিয়ে দিয়েছি দর্শনার্থীদের। এখন আর অল্প পরিমাণ আছে। আমি নিজেও কখনো ভাবিনি যে দিনাজপুরের মাটিতে এত সুন্দর ফলন আসবে। এখন আমার এখানে দিনে শত শত দর্শনার্থীরা এখানে এসে খেজুর গাছের চারা কিনছে আমি তাদের কাছে এক একটি চারা এক হাজার টাকা দরে বিক্রি করছি এবং পরামর্শ দিচ্ছি কিভাবে পরিচর্যা করবে।

তিনি আরও বলেন, এবছর আমি ২ একর জমি প্রস্তুত করেছি সেই জমিতে আরও ৩০০ খেজুর চারা রোপণ করে বাগানের পরিধি বৃদ্ধি করব। বাগান বৃদ্ধি ও চারা বিক্রি জন্য আজোয়া ও মরিয়ম জাতের খেজুরের বীজ সংগ্রহ করে চারা তৈরি করেছি।

ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, উপজেলায় এই প্রথম একজন কৃষক সৌদির খেজুর চাষ করছেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে বাগানের খোঁজ রাখা হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Janasarthe 24

আপনাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া প্রতি মুহুর্তের খবর দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন। আমরা আমাদের অনলাইনে তা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ হবো। আমাদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় সংবাদ

শান্তিগঞ্জে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হাফেজ শেখ মুশতাক আহমদের সমর্থনে নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত

প্রবাস ফেরত যুবকের তাক লাগানো খেজুর বাগান,

আপডেট সময় ০৭:০২:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩

ধান-লিচুর জেলা হিসেবে সুখ্যাতি আছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের। এই জেলার কাটারিভোগ চালের সুনাম বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। আবার রসালো লিচু ও মুগডালের পাঁপড়ও বেশ বিখ্যাত। এখন এই ধান-লিচুর দেশে চাষ হচ্ছে সৌদি আরবের বিখ্যাত সব খেজুর।

সরেজমিনে দেখা যায়, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সৈয়দপুর মহাসড়কের পাশে পরিত্যক্ত ২০ শতক জমিতে সারিবদ্ধভাবে লাগানো রয়েছে ১৯টি খেজুর গাছ। সারি সারি সব গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে হলুদ, লাল ও সবুজ রঙের খেজুর। এলাকায় মরুর এই ফল চাষের অসাধ্যকে সাধন করে স্থানীয়দের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ফুলবাড়ী উপজেলার স্বজন পুকুর গ্রামের প্রবাস ফেরত জাকির হোসেন। এখন তার বাগানের গাছে ফল এসেছে। পাশাপাশি তৈরি করছেন নতুন চারা। আগামীতে বাগানের পরিধি বৃদ্ধি করবেন এবং খেজুর ও চারা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করবেন বলে আশা করছেন।

খেজুর বাগান দেখেতে আসা এক দর্শনার্থী জহিরুল ইনলাম  বলেন, আমরা তো সৌদির খেজুর খাই। সৌদির খেজুর দেখছি বাংলাদেশে এমন খেজুর হয় তা দেখি নাই। আজ প্রথম দেখলাম আমাদের দেশেও সৌদির খেজুর আবাদ হচ্ছে। আবার খাইতে পারছি এটায় আমাদের গর্ব।

dhakapost

বাগান পরিচর্যা কারি জামিল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি বাগানের প্রথম চারা রোপন শুরু করার পর থেকে এ বাগানে কাজ করছি। দীর্ঘদিন বাগান পরিচর্যা করার পরে গত বছর থেকে ফল আসা শুরু হয়েছে। এখন মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে বাগান দেখতে আসছে ফল খাচ্ছে আবার কেউ খেজুর গাছের চারা নিয়ে যাচ্ছে।

জাকির হোসেন বলেন, ১৯৯৯ সালে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কুয়েতে যাই সেখানে প্রথমে একটি মোটর মেকানিকের দোকানের কাজ শুরু করি। দীর্ঘ ২০ বছর কুয়েতের সুয়েব শহরে ছিলাম। সেখানে থাকা অবস্থায় দেখেছি বড় বড় খেজুরের বাগান। আবার প্রতিটি অফিসের ও বাড়ির সামনে ছোট ছোট খেজুর গাছ। তখন চিন্তা করি এদের দেশে হলে আমাদের দেশে কেন হবে না। সেই চিন্তা থেকে ২০১৭ দেশে আসার সময় ১২ কেজি গাছ পাকা খেজুর কিনে এনে দেশে চারা করার চেষ্টা করি। চারা তৈরিতে সফল হলে পরিত্যক্ত ২০ শতক জমিতে সারিবদ্ধভাবে ১৯টি গাছ রোপণ করার পরে পরিচর্যা শুরু করি। দীর্ঘ চার বছর গাছগুলোকে ভালোভাবে পরিচর্যা করার পরে তিটি গাছে ফল আসে আবার কিছু কিছু গাছে ৫ বছর পর ফল আসে। এককেটি গাছে ফল আসে আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ কেজি করে। দ্বিতীয় বার ৯টি গাছে ফল এসেছে। এবারের ফলন গত বছরের তুলানায় দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। গতবছর যে গাছে ফল এসেছিল ২০ থেকে ২৫ কেজি সে গাছে এবার ফল এসছে ৭০ থেকে ৮০ কেজি। আবার কোনো গাছে ফল ১০০ কেজির বেশি ধরেছে। আমার বাগানে ছয় জাতের খেজুরের চাষ হচ্ছে যেমন মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেডজুল, বাহির ও আম্বার। আমি এ বছর ফল বিক্রি করছি না প্রথম দিকে ফল বিক্রি করার চিন্তা ছিল কিন্তু দর্শনার্থীদের চাপে আর এ বছর ফল বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। যারাই আসতেছে তাদের প্রত্যেকের হাতে দুটি-চারটি করে খেজুর দিচ্ছি খাবার জন্য। এভাবে দিতে দিতে প্রায় ৫ থেকে ৬ মণ ফল বিলিয়ে দিয়েছি দর্শনার্থীদের। এখন আর অল্প পরিমাণ আছে। আমি নিজেও কখনো ভাবিনি যে দিনাজপুরের মাটিতে এত সুন্দর ফলন আসবে। এখন আমার এখানে দিনে শত শত দর্শনার্থীরা এখানে এসে খেজুর গাছের চারা কিনছে আমি তাদের কাছে এক একটি চারা এক হাজার টাকা দরে বিক্রি করছি এবং পরামর্শ দিচ্ছি কিভাবে পরিচর্যা করবে।

তিনি আরও বলেন, এবছর আমি ২ একর জমি প্রস্তুত করেছি সেই জমিতে আরও ৩০০ খেজুর চারা রোপণ করে বাগানের পরিধি বৃদ্ধি করব। বাগান বৃদ্ধি ও চারা বিক্রি জন্য আজোয়া ও মরিয়ম জাতের খেজুরের বীজ সংগ্রহ করে চারা তৈরি করেছি।

ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, উপজেলায় এই প্রথম একজন কৃষক সৌদির খেজুর চাষ করছেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে বাগানের খোঁজ রাখা হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।