স্পোর্টস ডেস্কঃ
ওয়াংখেড়েতে টস জিতে বোলিং নেওয়ার জন্য আফসোস করতে পারে বিশ্বকাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ব্যাটিং উইকেটে আগে বোলিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটা যে বুমেরাং হয়েছে ইংরেজদের জন্য, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যার ফলে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের পর দাপুটে বোলিংয়ে চলতি ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা।
প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে হেনরিখ ক্লাসেন ঝড়ো সেঞ্চুরি এবং রেজা হেনড্রিক্স, রাশি ভ্যান ডার ডুসেন ও মার্কো জানসেনের পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসে ভর করে ৭ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৩৯৯ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৭০ রানেই আটকে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। এতে ২২৯ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে প্রোটিয়ারা।
শনিবার (২১ অক্টোবর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে চলমান বিশ্বকাপের ২০তম ম্যাচে লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় ইংল্যান্ড। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। এরপর সুবিধা করতে পারেননি ডেভিড মালান, জো রুট, বেন স্টোকসরাও। এই তিন ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। টপ অর্ডার ব্যর্থতার দিনে ফেইল করেছে ইংলিশ মিডল অর্ডারও। তাতে দলীয় ১০০ রান পূর্ণ হওয়ার আগেই ৭ উইকেট হারায় তারা।
সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। যদিও শেষ দিকে মার্ক উড ও গাস এটকিনসন কিছুক্ষণ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। তবে সেটা হার থেকে বাঁচাতে পারেনি, কেবলই খানিকটা ব্যবধান কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ২২ ওভারে ১৭০ রানে ৯ উইকেট হারায় তারা। বল করতে গিয়ে চোট পাওয়া রিস টপলি ব্যাট হাতে না নামায় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইংলিশদের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৪৩ রান এসেছে মার্ক উডের ব্যাট থেকে।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই রস টপলিকে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটের পিছনে জস বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৪ রানে বিদায় নেন প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ১২১ রানের জুটি গড়েন রিশি ভ্যান দার ডুসেন ও নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার বদলে সুযোগ পাওয়া রেজা হেনরিক্স।
কিন্তু ফিফটি হাঁকিয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি ডুসেন। ২০তম ওভারের চতুর্থ বলে ইংলিশ লেগস্পিনার আদিল রশিদের বলে আউট হয়ে যান তিনি। বিদায়ের আগে ৬১ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৬০ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ওপেনার রেজা হেনরিক্স সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে গেলেও সেই রশিদের ঘূর্নিতে পরাস্ত হন। বিদায়ের আগে ৭৫ বলে ৯টি চার আর তিনটি ছক্কায় তার অবদান ৮৫ রান।
অধিনায়ক এইডেন মার্করামও চারে নেমে থিতু হয়ে ফিফটির পথে হাঁটছিলেন। তবে মাইলফলক ছোঁয়ার আগেই ৪২ বলে চার বাউন্ডারিতে ৪৪ রান করে ফিরেছেন তিনি। টপ অর্ডার ব্যাটাররা রান পাওয়ায় মিডল অর্ডার ব্যাটাররা স্ট্রাইকরেটে মনযোগী হন। সেই পথে হেঁটে সফল হয়েছেন ক্লাসেন ও মার্কো জানসেন। প্রথম ৪০ বলে ফিফটি করা ক্লাসেন পরের ৫০ রান করতে তিনি খরচ করেছেন মাত্র ২১ বল। সবমিলিয়ে ৬১ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।
শেষ পর্যন্ত বিদায়ের আগে ৬৭ বলে ১২টি চার আর ৪টি ছক্কার সাহায্যে দলীয় সর্বোচ্চ ১০৯ রান করেন ক্লেসেন। তবে ৪২ বলে ৩টি চার আর ৬টি ছক্কায় অপরাজিত ৭৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন জানসেন। এতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৯৯ রান সংগ্রহ করে প্রোটিয়ারা।
বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের হয়ে রিস টপলি ৩ উইকেট শিকার করেন। এছাড়া গিস আটকিনসন ও লেগ স্পিনার আদিল রশিদ প্রত্যেকে পান ২টি করে উইকেট।